দুপুর বারোটা - শাহবাগ মোড় – অত্যন্ত ব্যস্ত ভাবে ছুটছি - শুধু আমিই নই, সাথে রয়েছে আরো অনেকে, তারাও আমার মতই ছুটছে--
আমার মাথায় তখন একটাই কথা ঘুরছিল, কিভাবে আজকের মধ্যে সব কাজ সামাধান করব...... আহা - দিনটা যদি ৪৮ ঘন্টা হতো......
ভাবতে ভাবতেই পার হয়ে গেলাম শাহবাগ মোড়, বেশ দ্রুতই হেটে যাচ্ছিলাম,
কিন্তু হটাৎ পিছনে ফিরলাম, এক পথশিশুর দিকে তাকালাম, তাকাতে তাকাতেই বেশ সামনে এগিয়ে গেলাম …...
প্রথম তাকানোতেই বুঝলাম, ভিক্ষে করছে।
(((উফ, এইসব পোলাপাইন যে কেন ভিক্ষা করে, না আছে লেখাপড়া না আর কিছু!!!)))
সময় নষ্ট না করে সামনে এগোলাম, কিছু সামনে এগিয়ে গেলেও বারবার মন বলছে, কিছু যেন ভুল হচ্ছে। আবার পিছনে ফিরি, দেখি একি ভাবে সেই পথশিশু দাড়িয়ে কি যেন বলে চলেছে।
ভাবতে ভাবতেই গতি কমে এলো, সিদ্ধান্ত নিলাম তার সামনে যাওয়ার।
পিছনে ফিরে এসে জিজ্ঞাসার পূর্বেই তার বলা কথা গুলো আমার কানে পৌছল,
কথাগুলো ছিল -
“কেউ দয়া করে আমাকে ফুলের দোকানের সামনে নিয়ে যান........
আমি কি ওখানেই আছি??? তাহলে আমাকে দোকান গুলোর ফাকা জায়গাটিতে একটু নিয়ে যান........”
বারবার একই কথাই বলে যাচ্ছে.........
ব্যস্ত নগরী আমাদের ঢাকা, যেখানে সময় জিনিসটার বড়ই অভাব, ছুটে চলছে সবাই দূর্বার গতিতে, সেখানে এমন অন্ধ অসহায় পথশিশুর কথা শোনার সময় কারো রয়েছে কি......
মনের ভেতর একটি অনুভূতি এলো, সেই অনুভূতিকে শাব্দিক ভাবে 'কষ্ট' কিংবা 'বেদনা' বলে প্রকাশ করা যায় কিনা - তা আমার জানা নেই!!
এরপরই অন্ধ সে পথশিশুটিকে পৌছে দিলাম ফুলের দোকান গুলোর সামনে......
ফিরে আসার পথে আমার মনে আসছিল অনেক প্রশ্ন-
-এরপর যেদিন সে পথ আতিক্রম করবে, কেউ এগিয়ে আসবে কি.........
-দূর্বার গতিতে চলা কোন বাস ক্ষুদ্র এ জীবনটিকে চিরতরে বিদায়............
-কেউ কি তার হাতে একটি সাদা ছড়ি ও দেবে না...............
-জীবনে তার কোনদিন স্কুলে যাওয়া হবে তো............
সত্যি জানি না একটি উত্তরও – আসলে এরপর কি হবে তার জীবনে???
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।