আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নারীর সতীত্ব আছে পুরুষের কি আছে?

সত্যের কাছে মিথ্যে চিরকালই পরাজিত

চ্যানেল ঘুরাতে ঘুরাতে চোখে পড়লো ইলিয়াস কাঞ্চন-অঞ্জু কে, ভাবলাম বেদের মেয়ে জোৎস্না হবে হয়তো, তাই কিছুক্ষন দেখলাম, একটা কথা খুব মনে ধরে গেল। অঞ্জুর প্রেমিক কাঞ্চন গ্রামে গিয়ে অঞ্জুকে পায়নি, সাথে তার নামে অনেক বাজে কথা চাউর হয়েছে তাই মনের দুঃখে ঢাকায় এসে বাইজিখানায় যাওয়া মদ খাওয়াটা ছিনেমার চিরাচরিত নিয়মের ব্যতিক্রম নয়। সেখানেই বাইজী কবিতাও (পুরনো নিয়মেই) বুঝে ফেলে কাঞ্চন খারাপ মানুষ নয়, আর তাই সে তার সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে বলে “সতীত্ব কি শুধু নারীদেরই, পুরুষের কি সতীত্ব নেই?” আমারও একই প্রশ্ন পুরুষের তাহলে কি আছে? অনেকেই হয়তো বলবেন পুরুষের পৌরুষ আছে, কিন্তু তা নিশ্চয়ই সতীত্বের সমার্থক শব্দ নয়। কারন পৌরুষ বা পুরুষত্ব এর সমার্থক শব্দ হল নারীত্ব যা প্রকাশ করে নারীর কোমলতা, মমতা আর স্নেহভরা এক সত্ত্বা। বিশ্বজুড়ে নারীদের সুন্দরী প্রতিযোগিতা এখন একটা জমজমাট ব্যবসা।

বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতায় শুধু অবয়ব নয়, নারীদের দেহের প্রতিটা ভাঁজ দেখে সৌন্দর্য নিরুপন করা হয়। সর্বনিম্ন আকারের দু’টুকরো কাপড় ছাড়া শরীরে আর কিছু থাকা যাবে না। বিচারকের প্যানেলে বসে, দর্শক সারিতে বসে লালায়িত পুরুষ সম্প্রদায় তাই উপভোগ করে। কই কখনো তো সুন্দর পুরুষের প্রতিযোগিতার খবর পাই না? দেশের ভেতরে এখন সুন্দরী প্রতিযোগিতাও খুব লোভনীয় একটা প্রোগ্রাম যা সবাই উপভোগ করে। নারীরা তাদের সর্বস্ব উন্মোচন করে তার সৌন্দর্যের সার্টিফিকেট নিতে ব্যস্ত।

সেখানেও আজকাল দেহের ভাঁজগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে তথাকথিত সুশীল সমাজ। কই কখনো তো শুনিনা কোন পুরুষদের এরকম অনুষ্ঠানের কথা। একবার “ইউ গট দ্য লুক” নামে হয়তো একটা হয়েছিল। কই ছেলেরা কি তাতে আন্ডারওয়্যার পড়ে এসেছিল? আমাদের দেশে নারী পতিতালয় আছে কিন্তু কোন পুরুষ পতিতালয় আছে কি? পৃথিবীর কোথাও আছে কিনা আমার সন্দেহ আছে। হয়তো অনেকেই বলবেন পাশ্চাত্যের প্রায় সব দেশেই পুরুষ পতিতালয় আছে, না, ভাবনা টা ভুল, সেইসব দেশে পর্ণ ইন্ডাস্ট্রী আছে যা এমন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, সেখানে নারী-পুরুষ উভয়েই আর্থিক উপার্জন করে থাকে।

কিন্তু পতিতালয় বলতে সাধারন অর্থে যা বুঝায় তা হল নারীরা ব্যাবসায়ী আর পুরুষেরা খদ্দের। আমাদের দেশের অনেক সম্ভ্রান্ত(?) পরিবারের মানুষ, তাদের ছেলেরা হোটেল গুলোতে যায় নারীদেহ ভোগ করার জন্য। কখনও শুনেছেন কি যে কোন নারী টাকার বিনিময়ে কোন পুরুষদেহ ভোগ করেছে? কোন হোটেলে নারীরা পতিত(?) পুরুষের খোঁজে গিয়েছে? নারীর কামনা মেটানোর জন্য কেন আন্দোলন করে না, কেন বলে না আমাদের পুরুষ পতিতালয় চাই? কেন নারীবাদীরা সোচ্চার হচ্ছেন না? তারা নারীপতিতালয়ের স্বীকৃতি দেয়ার জন্য তাদের দেহব্যবসাকে বৈধ করার জন্য আন্দোলন করে অথচ তারা এ ব্যাপারটা কি কখনো ভেবে দেখেছেন? তবে হ্যাঁ নারীরা তাদের কামনা বাসনার জন্য ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে, প্রেমিক খুঁজে বেড়ায়, সর্বস্ব দেয়ার সময় সে দৈহিক সুখকেই বেশি গুরুত্ব দেয়, তাই নিত্যনতুন প্রেমিক পেতে সমস্যা হয় না। পুরুষেরা যেমন এক নারীদেহে তৃপ্ত নয় তাই হোটেলগুলোতে তাদের যাতায়াত, নারীরাও আজ নিজের স্বামীতে তুষ্ট না হওয়ার কারনে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। আমার এক কাছের বন্ধু্র কাছে, তার সাথে তারই এক (সমাজের উচুঁ স্তরের বিবাহিত এক সন্তানের জননী) মেয়েবন্ধুর সাথে অবাধ যৌনাচারের গল্প শুনেছি।

শুধু তাই নয় ঐ মেয়ের শ্বশুর বাড়ীতে শ্বশুর শ্বাশুড়ীর উপস্থিতিতে স্বামীর অনুপস্থিতিতে এহেন কাজ করতে বিন্দুমাত্র সংকোচ ছিল না। এভাবেই হাজারো ধরনের ঘটনা ঘটে চলেছে সমাজের উঁচু-নিঁচু সর্বস্তরে। নারীবাদীরা কিন্তু খুব সোচ্চার! প্রকাশ্যে হোটেলে যাওয়াটা একটু মানহানিকর। তাই নতুন কৌশল হচ্ছে লিভ টুগেদার। যখন যার সাথে ইচ্ছে যতদিন ইচ্ছে যৌনতায় লিপ্ত হতে পারে।

আবার সময় হলে পরিবর্তন করে নিতে পারে তাতে তারা আরো বেশি সম্ভ্রান্ত হওয়ার খেতাব পায়, সাথে সম্ভ্রান্ত নারীদের প্রকাশ্যে বহুগামিতার পথ সুগম হয়। নারীরা এখন সম্ভ্রান্ত পতিতালয় হিসেবে ব্যবহার করে সুসজ্জিত ফ্ল্যাটবাড়ী। পতিতাপল্লীর নাম শুনলে অনেকেরই ঘৃণার উদ্রেক হয় অথচ টিভি নাটক আর সিনেমাতে তো আমরা এই পতিতাদেরকেই উপভোগ করে যাচ্ছি। তাদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হচ্ছি। অস্কার পেয়ে যাচ্ছে পতিতারা আর তাতে বিশ্বজুড়ে সুনাম(?) ছড়িয়ে পড়ছে।

তারাই বিশ্বের উঁচু শ্রেণীর মানুষের মর্যাদা পাচ্ছে। একই কাজ করে আমাদের দেশের পতিতাপল্লীর সেই নারীরা হচ্ছে ঘৃণিত। কষ্ট হয় ভাবতে এই নারীরাই কারো না কারো মা হয়েছে, হচ্ছে, হবে। আর পৃথিবীর সকল মাকে সম্মান জানাতে গেলে এরাও যে তার অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে তখন কিভাবে শ্রদ্ধাবোধ আসবে? আর তাই পশ্চিমা বিশ্বে মায়ের প্রতি ভালোবাসাটা খুবই ক্ষীণ। কারন তারা মাকে স্রেফ একজন সাধারণ মানুষের মত দেখে, মা সেই শ্রদ্ধাবোধ তৈরি করার জন্য কিছু করতে পারে না, বরং ঘৃণা করার উপলক্ষ তৈরী করে দেয়।

তবুও কি নারী তার নিজেকে চিনবে না? সে কেন নিজের দেহকে বিকিয়ে দিয়ে অন্যের মনোরঞ্জন করবে? কেন সে তার সত্ত্বাকে এখনো রক্ষা করতে শিখে না, কেন অন্যের প্ররোচনায় প্ররোচিত হয়? করজোড়ে অনুরোধ সকল নারীর প্রতি নিজের স্বকীয় সত্ত্বাকে ধারন করুন, আপনি কারো আনন্দ উপভোগের বস্তু নন, আপনি পুরুষের অনেক সাধনায় পাওয়া সেই সংগিনী, আপনি সেই ভাইয়ের শ্রদ্ধা আর আদর মিশ্রিত আপু নামের মানুষ, আপনি পরম মমতাময়, স্নেহময়ী, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম সেই মধুর শব্দ “মা”।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৭১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।