আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অন্ধকারের উপাখ্যান ও মারিও পুজোর উথ্থান

জনতার আওয়াজ

“আমি তাকে এমন প্রস্তাব দেব যে সে তা প্রত্যাক্ষান করতে পারবেনা । ” ডন ভিটো কর্লিয়নি কতৃক উদ্ধৃত বিশ্ব সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় এই উদ্ধৃতির লেখক মারিও পুজো ইতালিও বংশোদ্ভুত আমেরিকান গদ্যকার । যারা মোটামুট বইপত্র পড়েন, কিন্তু মারিও পুজো’র ‘দ্য গডফাদার’ উপন্যাস সম্পর্কে জানেননা এ রকম লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন। মাফিয়াদের অন্ধকার জগতকে তার মত এত আকর্ষণীয় ভাবে আর কেউই উপস্থাপন করতে পারেননি । তদাকিন্তু এটা ছিল তার পঞ্চম উপন্যাস ।

এর আগে তার উপন্যাস গুলো তেমন সাড়া জাগাতে পারেনি। তার প্রথম উপন্যাস ছিল ‘ দা ডার্ক এরেনা ’ যা ১৯৫৫ সালে প্রকাশ পায়। মারিও পুজো ১৯২০ সালের ১৫ই অক্টোবর আমেরিকার নিউ ইয়র্ক সিটিতে অভিবাসী এক দরিদ্র নেপোলি পরিবারে জন্ম নেন। সিটি কলেজ অফ নিউ ইয়র্ক থেকে স্নাতক করার পরে তিনি ইউনাইটেড স্টেটস আর্মি এয়ার ফোর্সেস (United States Army Air Forces) এ যোগ দেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তার ক্ষীণ দৃষ্টির কারনে তাকে সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে না দিয়ে জার্মানিতে পাবলিক রিলেশান অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।

১৯৫০ সালে তার প্রথম ছোট গল্প "দ্য লাস্ট ক্রিসমাস" (The Last Christmas) প্রকাশিত হয়। যুদ্ধ শেষেই তিনি তার প্রথম বই "দ্য ডার্ক আরেনা" (The Dark Arena) প্রকাশ করেন। পুজো, "মারিও ক্লেরি" (Mario Cleri) ছদ্মনামে 'ট্র্যু একশান' ম্যাগাজিনের জন্য "ওয়ার্ল্ড ওয়ার টু এডভেঞ্চার ফিচারস" লেখেন। পুজোর সবচেয়ে জননন্দিত সৃষ্টি 'দ্য গডফাদার' প্রথম ১৯৬৯ সালে প্রকাশিত এবং অবশেষে "দ্য গডফাদার" দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস এর সর্বাধিক বিক্রিত বইয়ের তালিকায় যা দীর্ঘদিন শীর্ষ স্থান দখল করে ছিল। এর মাধ্যমে অভীষ্ট লক্ষ্যে উপনীত হন।

‘দ্য গডফাদার’ পুজোকে দু হাত ভরে দিয়েছে, এরপর আর তাকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি উপন্যাসটিকে চলচ্চিত্রে রূপ দেন। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা। ছবিটি এগারটি ক্যাটাগরিতে অস্কার মনোনয়ন লাভ করে এবং তিনটিতে জয়ী হয়। পুজো সেরা চিত্রনাট্যকারের পুরষ্কার জেতেন।

পরে পুজো এবং কপোলা জুটি গডফাদারের সিক্যুয়েল "দ্য গডফাদার পার্ট টু" এবং " দ্য গডফাদার পার্ট থ্রী" তৈরি করেন। পুজোই প্রথম সাহিত্যে মাফিয়া বা সিসিলিয়ান কসকা কাহিনীর অবতারনা করেন। যারা নিজেদের পরিবার কে নিরাপদ রাখতে ও সম্মান কে উজ্জল রাখতে সদা বদ্ধ পরিকর। যেখানে ভুলের একমাত্র শাস্তি মৃত্যু। ওমের্তা যেখানে বিশ্বাসের ভিত্তি।

পুজো সেই মাফিয়াদের নিয়ে এক ইতিহাস রচনা করে গেছেন। তিনি মূলত সিসিলি ও পালর্মর কোসকা প্রধানদের তার উপন্যাসে হয় নায়ক নয় তো খলনায়কে রুপায়িত করেছেন। তার প্রতিটা লেখায় নিপীড়িত জনতার রক্ষক হিসেবে এক জন ডনকে তিনি উপস্থিত করেছেন। দুর্বল যখন আদালতের সুবিচার পায়না তখন হাজির হয় এক গোপন বিচারকের কাছে। রাজনীতিবিদরা সাহায্যের জন্য ছুতে যায় তারই কাছে।

আর তিনি উদার হস্তে তাদের আশা পুরন করেন। তিনি নিজেই আইন, নিজেই আদালত। তার নিয়মে তিনি সৃষ্টি করেছেন এক অনন্য জগত। যেখানে সহস্র মানুষ তার নির্দেশের অপেক্ষায় সদা দণ্ডায়মান। তিনি একজন স্নেহবৎসল পিতা আর নিজের নিয়মে একজন নীতিবানও বটে।

বন্ধুর জন্য তিনি নিজের জীবন বিপন্ন করতেও পিছপা হোননা আবার শত্রুর কাছে তিনি মুর্তিমান বিভীষিকা। তিনি বিশ্বাস করেন প্রতিটি মানুষের একটাই নিয়তি থাকে আর সেটা তৈরি হয় ঘটনাচক্রে। সমাজের ভেতরে সমাজ আর রাষ্ট্রের ভেতরে রাষ্ট্রের যে জগৎ সেই জগতের ক্ষমতার কেন্দ্রে ব’সে সবার অলক্ষ্যে কল-কাঠি নাড়েন গদফাডার। ক্ষমতা, ভালবাসা, আর তিক্ত মৃত্যু পুজো কে করেছে প্রবাদ প্রতিম। তার প্রতিটা লেখায় নিখুত বুননে এগিয়ে চলে প্রতিশোধ, বিশ্বাসঘাতকতা আর ভালবাসার আক্ষান।

আর তাই প্রকাশ পেয়েছে তার দ্য গদফাডার, দ্য সিসিলিয়ান, ওর্মেতা, দ্য লাস্ট ডন প্রভৃতি ক্লাসিক সাহিত্যে। প্রকৃত পক্ষেই মারিও পুজো মাফিয়া আর ক্ষমতা উভয় শব্দের এক অবিশ্বাস্য মিলন ঘটিয়েছেন তার সাহিত্য সম্ভারে। আর এই জন্যই তাকে বলা হয় “ সিসিলি কে বুকে ধারণ করা এক আমেরিকান লেখক। ” “আমি তাকে এমন প্রস্তাব দেব যে সে তা প্রত্যাক্ষান করতে পারবেনা । ” ডন ভিটো কর্লিয়নি কতৃক উদ্ধৃত বিশ্ব সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় এই উদ্ধৃতির লেখক মারিও পুজো ইতালিও বংশোদ্ভুত আমেরিকান গদ্যকার ।

যারা মোটামুট বইপত্র পড়েন, কিন্তু মারিও পুজো’র ‘দ্য গডফাদার’ উপন্যাস সম্পর্কে জানেননা এ রকম লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন। মাফিয়াদের অন্ধকার জগতকে তার মত এত আকর্ষণীয় ভাবে আর কেউই উপস্থাপন করতে পারেননি । তদাকিন্তু এটা ছিল তার পঞ্চম উপন্যাস । এর আগে তার উপন্যাস গুলো তেমন সাড়া জাগাতে পারেনি। তার প্রথম উপন্যাস ছিল ‘ দা ডার্ক এরেনা ’ যা ১৯৫৫ সালে প্রকাশ পায়।

মারিও পুজো ১৯২০ সালের ১৫ই অক্টোবর আমেরিকার নিউ ইয়র্ক সিটিতে অভিবাসী এক দরিদ্র নেপোলি পরিবারে জন্ম নেন। সিটি কলেজ অফ নিউ ইয়র্ক থেকে স্নাতক করার পরে তিনি ইউনাইটেড স্টেটস আর্মি এয়ার ফোর্সেস (United States Army Air Forces) এ যোগ দেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তার ক্ষীণ দৃষ্টির কারনে তাকে সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে না দিয়ে জার্মানিতে পাবলিক রিলেশান অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ১৯৫০ সালে তার প্রথম ছোট গল্প "দ্য লাস্ট ক্রিসমাস" (The Last Christmas) প্রকাশিত হয়। যুদ্ধ শেষেই তিনি তার প্রথম বই "দ্য ডার্ক আরেনা" (The Dark Arena) প্রকাশ করেন।

পুজো, "মারিও ক্লেরি" (Mario Cleri) ছদ্মনামে 'ট্র্যু একশান' ম্যাগাজিনের জন্য "ওয়ার্ল্ড ওয়ার টু এডভেঞ্চার ফিচারস" লেখেন। পুজোর সবচেয়ে জননন্দিত সৃষ্টি 'দ্য গডফাদার' প্রথম ১৯৬৯ সালে প্রকাশিত এবং অবশেষে "দ্য গডফাদার" দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস এর সর্বাধিক বিক্রিত বইয়ের তালিকায় যা দীর্ঘদিন শীর্ষ স্থান দখল করে ছিল। এর মাধ্যমে অভীষ্ট লক্ষ্যে উপনীত হন। ‘দ্য গডফাদার’ পুজোকে দু হাত ভরে দিয়েছে, এরপর আর তাকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি উপন্যাসটিকে চলচ্চিত্রে রূপ দেন।

চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা। ছবিটি এগারটি ক্যাটাগরিতে অস্কার মনোনয়ন লাভ করে এবং তিনটিতে জয়ী হয়। পুজো সেরা চিত্রনাট্যকারের পুরষ্কার জেতেন। পরে পুজো এবং কপোলা জুটি গডফাদারের সিক্যুয়েল "দ্য গডফাদার পার্ট টু" এবং " দ্য গডফাদার পার্ট থ্রী" তৈরি করেন। পুজোই প্রথম সাহিত্যে মাফিয়া বা সিসিলিয়ান কসকা কাহিনীর অবতারনা করেন।

যারা নিজেদের পরিবার কে নিরাপদ রাখতে ও সম্মান কে উজ্জল রাখতে সদা বদ্ধ পরিকর। যেখানে ভুলের একমাত্র শাস্তি মৃত্যু। ওমের্তা যেখানে বিশ্বাসের ভিত্তি। পুজো সেই মাফিয়াদের নিয়ে এক ইতিহাস রচনা করে গেছেন। তিনি মূলত সিসিলি ও পালর্মর কোসকা প্রধানদের তার উপন্যাসে হয় নায়ক নয় তো খলনায়কে রুপায়িত করেছেন।

তার প্রতিটা লেখায় নিপীড়িত জনতার রক্ষক হিসেবে এক জন ডনকে তিনি উপস্থিত করেছেন। দুর্বল যখন আদালতের সুবিচার পায়না তখন হাজির হয় এক গোপন বিচারকের কাছে। রাজনীতিবিদরা সাহায্যের জন্য ছুতে যায় তারই কাছে। আর তিনি উদার হস্তে তাদের আশা পুরন করেন। তিনি নিজেই আইন, নিজেই আদালত।

তার নিয়মে তিনি সৃষ্টি করেছেন এক অনন্য জগত। যেখানে সহস্র মানুষ তার নির্দেশের অপেক্ষায় সদা দণ্ডায়মান। তিনি একজন স্নেহবৎসল পিতা আর নিজের নিয়মে একজন নীতিবানও বটে। বন্ধুর জন্য তিনি নিজের জীবন বিপন্ন করতেও পিছপা হোননা আবার শত্রুর কাছে তিনি মুর্তিমান বিভীষিকা। তিনি বিশ্বাস করেন প্রতিটি মানুষের একটাই নিয়তি থাকে আর সেটা তৈরি হয় ঘটনাচক্রে।

সমাজের ভেতরে সমাজ আর রাষ্ট্রের ভেতরে রাষ্ট্রের যে জগৎ সেই জগতের ক্ষমতার কেন্দ্রে ব’সে সবার অলক্ষ্যে কল-কাঠি নাড়েন গদফাডার। ক্ষমতা, ভালবাসা, আর তিক্ত মৃত্যু পুজো কে করেছে প্রবাদ প্রতিম। তার প্রতিটা লেখায় নিখুত বুননে এগিয়ে চলে প্রতিশোধ, বিশ্বাসঘাতকতা আর ভালবাসার আক্ষান। আর তাই প্রকাশ পেয়েছে তার দ্য গদফাডার, দ্য সিসিলিয়ান, ওর্মেতা, দ্য লাস্ট ডন প্রভৃতি ক্লাসিক সাহিত্যে। প্রকৃত পক্ষেই মারিও পুজো মাফিয়া আর ক্ষমতা উভয় শব্দের এক অবিশ্বাস্য মিলন ঘটিয়েছেন তার সাহিত্য সম্ভারে।

আর এই জন্যই তাকে বলা হয় “ সিসিলি কে বুকে ধারণ করা এক আমেরিকান লেখক। ”

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।