যতোবার আমি শান্তি খুঁজেছি, ঠিক ততোবার আমার মাথায় শুধু একটি চিন্তাই এসেছে। সেটা হচ্ছে একটা ড্রিল মেশিন দিয়ে মাথার খুলিটা ফুটো করে দেওয়ার চিন্তা।
বলতে দ্বিধা নেই ইন্টারনেট মানুষের জীবনকে অনেক গতিময় করে দিয়েছে । তাই এটা সম্পর্কে বেশি কিছু বলতে যাওয়া বাহুল্য ছাড়া আর কিছুই না । নিজের জীবনের দিকে তাকান , তাহলেই বুঝতে পারবেন ।
দৈনন্দিন কাজ কর্ম ছাড়াও বেড়েছে মানুষের সাথে যোগাযোগ , স্থাপিত হচ্ছে নতুন সম্পর্কও । এটার জন্য যে জিনিসটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ , সেটি হচ্ছে অনলাইন চ্যাট ।
একটা সময় ছিল যখন মানুষ সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করতো । চ্যাট মেসেঞ্জার বলতে মানুষ চিনতো ইয়াহু , নাহয় এমএসএন কে । খুব কম সংখ্যক মানুষই ঘরে বসে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারতো ।
যুগ পাল্টেছে । ইন্টারনেট দিন দিন সহজলভ্য থেকে সহজলভ্যতর হয়েছে । এসেছে নতুন নতুন মেসেঞ্জার । এসেছে ফেসবুক , মিগ৩৩ , স্কাইপি , মাই স্পেস , হাই5 ,সহ আরও অনেক কিছু।
এখন অনেকের কৈশোর কাটে ঘরে বসেই , কম্পিউটারের সামনে।
চ্যাট করে বন্ধুদের বা বান্ধবীদের সাথে কথা বলতে কার না ভালো লাগে ? তাইতো আজ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ফেসবুক চ্যাট । জনপ্রিয় হয়েছে মোবাইল চ্যাট মেসেঞ্জার -মিগ৩৩ । বিনা খরচে কথা বলার ব্যবস্থাও করে দিচ্ছে স্কাইপি , ইয়াহু সহ আরও অনেক মেসেঞ্জার । কথা বলতে , চ্যাট করতে করতে একসময় আস্তে আস্তে আসক্ত হয়ে পড়ছে তরুন প্রজন্ম ।
একটা জিনিসের সার্থকতা তখনই বিচার করা যায় , যখন তার উপকারিতা আর অপকারিতাকে তুলনা করা হয় ।
সেই হিসেবে ছাত্রজীবনে ইন্টারনেট কে পুরোপুরিভাবে সার্থক হিসেবে একবাক্যে স্বীকার করা যায়না । অনলাইন চ্যাটের মাধ্যমে অনেকেই নষ্ট করছে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হবার গুরুত্বপূর্ণ সময় । আজকাল স্কুল ছাত্রছাত্রীদের হাতেও চলে এসেছে ইন্টারনেট । বাবা মার অসচেতনটায় তারাও হয়তো গোপনেই ব্যবহার করছে ইন্টারনেট , চ্যাট করার জন্য । এটা তো কোনোভাবেই তার জীবনে উপকারী কিছু হয়ে আসবে না ,এটা তো নিঃসন্দেহ ।
আনলে এটি অপকারই আনবে ।
স্কুল গণ্ডি পেরিয়ে নতুন নতুন কলেজ । হঠাৎ করেই যোগ হয় বাড়তি কিছু স্বাধীনতা । বাবা মা কম্পিউটারের সামনে ছেলে মেয়েকে দেখলেও তেমন একটা শাসন করেন না । ফলাফল হয় , চ্যাট আসক্তি ।
একটা সময় দেখা যায় দিনের প্রায় পুরোটাই অথবা সিংহভাগ সময় কেটে যাচ্ছে নেট এ । যে সময়টা পড়ালেখা করার কথা , সে সময় পড়ালেখার বদলে চলছে কথোপকথন । মোবাইল চ্যাট আরও ভয়ঙ্কর । বাধা দিলেই হয়ে যাচ্ছে বাবা ,মা ,বা ভাই , বোন বিরক্তির কারন ।
ফলাফল আশানরুপ হয়না অনেকেরই ।
অনেকের ফলাফল প্রত্যাশিত হলেও থেকে যাচ্ছে ঘাটতি । একটি সুন্দর প্রজন্ম তৈরি হতে যেয়েও হতে পারছে না । কর্মক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ার জন্য এই ঘাটতিই যথেষ্ট । এটা দেশের ক্ষতি , নিজের ক্ষতি । অল্প একটুখানি আনন্দ লাভের আশায় সারাজীবনের তরে আনন্দ বিসর্জন দিতে হয় অনেককেই ।
অনেকে জড়িয়ে পড়ে নানা রকম সাইবার অপরাধে । প্রেম , ভালোবাসা ,সাইবার হলেও যে মনটা ভাঙে তা কিন্তু সাইবার না , আসল মনটাই ভাঙে ।
সব কিছুরই একটা মাত্রা থাকে । সমস্যা শুরু হয় তখনই যখন তা মাত্রা ভাঙে । এটা আসলে কিশোর কিশোরীদের বুঝানো কষ্ট ।
তারা মনে করে ,তারা একটা সময় ঘুরে দাঁড়াতে পারবে । কিন্তু তারা এটা বুঝেনা যে তারা পথের শেষ দেখেনি । পথটা হয়তো একমুখীই ।
অভিভাবকদের একটুখানি সচেতনতা একটা জীবনকে বদলে দিতে পারে । এটার জন্য দরকার সুন্দর একটা সম্পর্ক ।
সন্তানদের বই পড়তে উৎসাহিত করা অবশ্যই প্রতিটা অভিভাবকের দায়িত্ব । বই মনের চোখ খুলে দেয় , হোক সেটা গল্প , উপন্যাস বা প্রবন্ধ । ইন্টারনেটের অবশ্যই ভালো ব্যবহার আছে । সেই ভালো ব্যবহার গুলোর প্রতি আকৃষ্ট করাও হবে অনেক ভালো একটা পদক্ষেপ ।
ফেসবুক পুরনো বন্ধুদের খুজে বের করার ক্ষেত্রে অনেক উপকারী ।
বুঝলাম । ফেসবুক কৈশোর জীবনে আর বাকি কি উপকারটা করছে ??
প্রযুক্তি নিজেই আজ কিছুটা হলেও পিছিয়ে দিচ্ছে প্রজন্ম কে । একটু ভেবে দেখুন । অদৃশ্য শত্রু কিন্তু আমাদের পাশে ,কাধে কাধ মিলিয়েই আছে । সত্য কথা ভালো লাগবে না সবার ।
তবু চাইনা কোন ফুল প্রস্ফুটিত হবার আগেই অকালে ঝরে যেতে দিতে । তরুন প্রজন্ম সবসময়ই আমাদের গর্ব হয়ে উঠুক , এই আশা থাকবে আজীবন ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।