বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে অনেক দিন ধরেই একটা বিতর্ক চলে আসছে। কেউ কেউ দেশের চলমান অসহনীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্য রাজনীতির জন্য রাজনীতিবিদরাই দায়ী,এ ব্যাপারে আমাদের মত পরিবর্তনকামী সাধারন মানুষের কিছু করার নেই। আবার কেউ কেউ বলেন আমরাই তো রাজনীতিবিদদের দূষিত করেছি,এখন আবার তাদের দোষারোপ করা কেন? আসলে এদেশের রাজনীতি দুষ্টচক্রে পড়ে গেছে। আর যারা এর সুফলভোগী তাঁরা এই চক্রটাকে সযত্নে টিকিয়ে রাখছে। তাই এদেশের তরুন সমাজের রাজনীতিবিমুখতার জন্য কতকটা তাঁরা নিজেরা দায়ী,কতকটা এই দুষ্টচক্রকে টিকিয়ে রাখা মানুষগুলো।
এরা চায় না আদর্শবাদী তরুনরা রাজনীতিতে আসুক,এরা চায় তরুনদের মাঝে গোলামীর মানসিকতা বপন করতে। সারা দেশের ছাত্র সংসদগুলোকে এরা অকার্যকর করে রেখেছে,ছাত্ররা স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে শিখুক এরা তা চায় না,তাই ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের নেতৃত্ব ছাড়তে এরা নারাজ। আবার এদেরকে টিকিয়ে রাখার দায়ও কিন্তু আমাদেরই নিতে হবে। হাসিনা,খালেদা,এরশাদ,নিযামীরা এই দেশকে যতই ধর্ষন করুক,আমরাই বারবার এদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছি। আসলে আমরা এখনও ঠিক'শাসক' ও 'শাসিতের' মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারিনি,তাই আমাদের দেশে নেতারা 'ক্ষমতায়' আসে,'দায়িত্বে' নয়।
। ডাক্তারি একটা মহান পেশা,কেউ যদি মানব সেবার উদ্দেশ্যে ডাক্তার হতে চায় তাহলে তো সে অবশ্যই অভিনন্দন পাবার যোগ্য। তাই বলে কি কোন ডাক্তার যখন নীতি নৈতিকতাকে বিসর্জন দিয়ে মানবসেবার এই বিদ্যাকে টাকা বানানোর অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে তখন কি আমরা তাঁর সমালোচনা করি না?একইভাবে,রাজনীতি দেশের জন্য কিছু করতে পারার অন্যতম উপায়,তাই কেউ রাজনীতি করতে চাইলে তিনি অবশ্যই প্রশংসার দাবীদার,কিন্তু তাঁর মানে এই নয় যে,খারাপ কাজ করলেও রাজনীতিবিদদের সমালোচনা করা যাবে না। বরং কেউ যদি রাজনীতির আড়ালে নিজের আখের গোছানো এই ক্রিমিনালগুলোর সমালোচনা করে তাহলে একে রাজনীতি সচেতনতা হিসেবেই দেখা উচিত এবং ভোট দেয়ার সময় এই সচেতনতা ধরে রাখা উচিত। যারা তাদের ফেসবুকে পলিটিকাল স্ট্যাটাস হিসেবে লিখে "i hate politics",যারা ফেসবুকে কিংবা আড্ডায় পলিটিকাল স্ট্যাটাস দেখলে বা কথা শুনলে নাক সিটকায় ওরাই আসল মেরুদন্ডহীন,ভোগবাদী রাজনীতিবিমুখ।
সেদিন এদেশের একজন খ্যাতনামা লোক খুব রসিয়ে গল্প করছিলেন,"৯১ তে আমার এলাকায় একজন সৎ সিএসপি অফিসার নির্বাচন করেছিলেন। সেই সিএসপি অফিসার সিগারেট খাওয়া অপছন্দ করতেন,তিনি চা-নাস্তার খরচ দিতে নারাজ ছিলেন। আরেকজন ক্যান্ডিডেট সবাইকে শুধু বিড়ি খাইয়ে পাশ করে গেলেন। " ঐ সিএসপি অফিসারের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। তাই বলছিলাম,যে জনসাধারন বিড়ি,সিগারেট,চা,নাশ্তা কিংবা আরও বড় কিছু পাবার আশায় ভোট দিতে অভ্যস্ত আমরা যদি নিজেদেরকে তাদের একজন মনে করি তাহলে তো আমাদের স্বভাবটাই আগে পাল্টাতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।