চলছে গাড়ি যাত্রাবাড়ি।
@-প্রাঞ্জল সেলিম-@
ফটোগ্রাফির খ্যাতি দুনিয়াজোড়া। আর এর ব্যাপ্তিও নানারকম । স্থাপত্য, মডেলিং, প্রোডাক্ট, ক্যাম্পেইন ইত্যাদি নানা শাখায় সৃষ্টিশীল ফটোগ্রাফির পাশাপাশি বাণিজ্যিক ফটোগ্রাফির চাহিদাও কম নয়। বিশ্বের এই সময়ের খ্যাতিমান হয়ে ওঠা এই প্রজন্মের ৫ জন ফটোগ্রাফারকে আমরা এই আয়োজনে তুলে ধরেছি আমাদের কীর্তিমানদের পাশাপাশি।
Click This Link
অ্যান্ডু প্রোকস
জন্ম :আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে
বৈশিষ্ট্য :আর্কিটেকচারাল ফটোগ্রাফি
ক্যারিয়ার :তিনি শুরু থেকে কোনো অ্যাকাডেমিক শিক্ষা গ্রহণ করেননি। প্রথম থেকেই তিনি নিজের মতো করে ফটোগ্রাফি নিয়ে পড়াশোনা করেন। নিজের শহর আমেরিকা দিয়ে শুরু করেন তার আর্কিটেকচারাল ফটোগ্রাফি। এক অর্থে তিনি প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন ফটোগ্রাফির এই ধারাটির প্রতি। শুধু তাই নয়, তিনি ইনডোর ফটোগ্রাফির কাজও করেন।
ইনডোর ফটোগ্রাফি অর্থাত্ তিনি ইন্টেরিয়র ডিজাইনের কাজও করেন। প্রায় ১০ বছর ধরে তিনি ল্যান্ডস্কেপ ফটোগ্রাফির সাথে জড়িত।
নিউইয়র্ক সিটির এমন কিছু ছবি তার ক্যামেরাতে ধরা পড়েছে, তা আর অন্য কোনো ফটোগ্রাফারের কাছে নেই। তার নাইট ফটোগ্রফিরই অসংখ্য ছবি রয়েছে। তিনি নিউইয়র্কের কোনো একটি লোকেশনে গিয়ে সেখানকার বিভিন্ন সময়ের ছবি ধারণ করেছেন।
২০০৪ সাল পর্যন্ত অ্যান্ডু ওয়াশিংটন ডিসিতে প্রতিনিয়ত গেছেন মনমতো ছবি তোলার জন্য। কিন্তু কোনোবারই তার পছন্দের ছবি তুলতে পারেননি। এর পর একসময় সে সুযোগটি পেয়ে যান তিনি। তুলে ফেলেন মারাত্মক কিছু ছবি। এসব ছবির বদৌলতে তিনি আজ বিশ্বের কয়েকজন বিখ্যাত ফটোগ্রাফারদের মধ্যে একজন।
তার ফটোগ্রাফি পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় খুব ভালো দামে বিক্রি হয়। বিশেষ করে সেগুলোকে ফাইন আর্টস-এর উত্তম নিদর্শন বলা চলে। এমনকি বিভিন্ন পোস্টকার্ড ওয়ালপেপারেও তার ছবি রয়েছে।
তিনি ছবি তোলা ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ফটোগ্রাফি শেখান এবং বিভিন্ন পর্যায়ে ফটোওয়ার্ক ও ফটোথিয়েটারগুলোতে অংশ নেন।
ডেভিড লা’চ্যাপেল
জন্ম :১১ মার্চ, ১৯৬৩ সাল।
জন্মস্থান :আমেরিকার ফেয়ারফিট গ্রামে
পরিচয় : ডেভিড এমন একজন ফটোগ্রাফার, যার হাত ফটোগ্রাফি জগতের অনেক বিস্তৃতি ঘটেছে। তিনি একাধারে ফ্যাশন, অ্যাডভারটাইজিং এবং ফাইন আর্ট ফটোগ্রাফার। একই সাথে ইনডোর ফটোগ্রাফি ডিরেক্টরও।
প্রথম জীবন : তার পড়াশোনা ছিল ফাইন আর্টস বিষয়ে। এরপর তিনি ভিজ্যুয়াল আর্টস-এর উপর কোর্স করেন।
সেসময় তিনি নিউইয়র্ক শহরে বাস করতেন। তিনি প্রথম ছবি তোলা শুরু করেন তার মায়ের ছবি দিয়ে। প্রথমে তিনি সুনাম অর্জন করেন ফ্যামিলি ফটোগ্রাফার হিসেবে। অ্যান্ডি ওয়্যারহোল নামের একজনের সাথে তার পরিচয় ছিল। তিনি প্রফেশনালি ফটোগ্রাফি নিয়ে কাজ করতেন।
এক মিটিং-এ জানতে পারেন ডেভিড-এর ফটোগ্রাফি সম্পর্কে। তিনি ছবি দেখার পর তার সাথে কাজ করার প্রস্তাব দেন তাকে। তারা দুজন মিলে নিয়ে আসেন ‘স্টুডিও ৫৪’। ফটোগ্রাফি জগতে এই ফ্যাশন ফটোস্টুডিওটি ভালোই ব্যবসা করেছিল। এরপর তিনি ধীরে ধীরে যুক্ত হন ‘রোলিং স্টেন’(রেড কার্পেট ফটোগ্রাফি), ভোউগ, জিকিউ, ফটো এবং ভ্যানিটি ফেয়ারের মতো ম্যাগাজিনগুলোর সাথে।
২০০৭ সাল, ডেভিড ‘অ্যাওকেন্ড’ শিরোনামে তার এক ফটোগ্রাফি কালেকশনের প্রদর্শনী করেন। তার ফটো ইমেজগুলো ‘ফুড ফটোগ্রাফি’, ‘ওয়াটার ফটোগ্রাফি’ এবং ধর্ম সংক্রান্ত ছিল।
তার ফুড ফটোগ্রাফিগুলো নিয়ে পরবর্তীতে চুক্তি করেন মিউজিয়ামের সাথে। তার এই প্রদশর্নী লাসভেগাস শহরে করা হয়েছিল। বিখ্যাত ‘গুচি’ ও ‘বার্গার কিং’ ব্যানারে এই প্রদর্শনীটি করা হয়।
এ ছাড়াও কিছু অ্যাবসট্র্যাক্টধর্মী ফটোগ্রাফিও করেছেন তিনি।
লইরেন বেন্টলি
জন্ম :আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে
পেশা :মডেল ফটোগ্রাফি
লইরেন বেন্টলি সম্পর্কে
লইরেন বেন্টলি ২৮ বছর বয়সী ফটোগ্রাফার। তিনি ১২ বছর বয়স থেকে ফটোগ্রাফি শুরু করেন। এবং বর্তমানে বিশ্বের কয়েকজন মডেল ফটোগ্রাফারদের মধ্যে তাকে একজন হিসেবে গণ্য করা হয়।
বর্তমানে তিনি আমেরিকার ব্রোকলিন শহরে থাকেন পরিবারসহ।
তিনি এসএলআর দিয়ে কখনোই ছবি তোলেন না, অর্থাত্ বর্তমান ডিজিটাল ফরমেটের লেন্স রিটরশন ক্যামেরা। তিনি বেশিরভাগ সময় হয় ডিজিটাল ক্যামেরা ব্যবহার করেন অথবা ফিল্ম ক্যামেরা ব্যবহার করেন। প্রযুক্তির এই যুগে এসেও তার ফিল্ম ক্যামেরা ব্যবহার করে প্রফেশনাল ফটোগ্রাফি করার ব্যাপারটি অনেকের কাছে অবাক করা ব্যাপার হলেও সত্য যে, ফিল্ম ক্যামেরা ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারলে তা বর্তমান যুগের এসএলআর ক্যামেরাগুলোর থেকে বেশি ভালোভাবে কাজ করতে পারে।
তিনি ফটোগ্রাফিতে হিউম্যান কন্ডিশন সাবজেক্ট হিসেবে বেছে নেন। এবং সেই অনুযায়ী তিনি পোর্টফোলিও তৈরি করেন।
তিনি এই বিষয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে চান। ফ্যাশন ও পোর্ট্রেট নিয়ে কাজ করেন তিনি। তিনি পছন্দ করেন মানুষের বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি নিয়ে এবং মোশন নিয়ে কাজ করতে। তিনি একটি বিষয় সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন—যে কেউ তার সাথে কাজ করতে চাইলে খুব সহজেই যেন তাকে খুঁজে পাওয়া যায়। তিনি তার ওয়েবসাইটে মেসেজের অপশন দিয়ে রেখেছেন যাতে সরাসরি তাকে পাওয়া যায়।
তিনি যোগ্য লোকের সাথে কাজ করতে পারলে খুশি হবেন—এমনটা জানান।
তিনি তার কাজ বিক্রির জন্য অনলাইনে রেখে দিয়েছেন। কেউ তা কিনতে চাইলে তার সাথে যোগাযোগ করতে পারে, ছবির বড় রেজুলেশান-এর জন্য।
ম্যাট স্টুয়ার্ট
জন্ম :১৯৭৪ সাল
জন্মস্থান :নর্থ ওয়েস্ট লন্ডন
স্টুয়ার্টের জন্ম লন্ডন শহরে হলেও তার বেড়ে ওঠা হয় হ্যাড়ো শহরের লিফি সুবার্বস এলাকায়। তার স্কুলজীবন বেশিদিন স্থায়ী ছিল না।
তিনি স্কুল জীবনে ১১ বছর বয়সে পড়াশোনা ছেড়ে দেন। তিনি তখন খেলাধুলায় নাম লিখিয়েছিলেন। ‘ট্রাম্পেট সলো’ নামের একটি গেম নিয়ে মেতে ওঠেন তিনি।
এর কিছু পরে ১৯৮৬ সালে ম্যাট, ‘ব্যাক টু দ্য ফিউচার’ সিনেমাটি দেখে আবিষ্কার করেন, স্কেট বোর্ডিং একটি মজার খেলা। সেখান থেকে তার স্কেট বোর্ডিং করা শুরু হয়।
১৯৯৪ সাল পর্যন্ত টানা এই খেলা নিয়ে মেতে থাকেন। তিনি সেসময় লক্ষ করেন, এই খেলাতে মেয়েদের আগ্রহ অনেক বেশি। তাদের আকর্ষণ করতে তিনি এই খেলা নিয়ে মেতেছিলেন। এরপর তার জীবনে আরো একটি পরিবর্তন আসে। তিনি কুংফু শেখা নিয়ে মেতে ওঠেন।
তার সকল আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় এটি।
ম্যাটের বাবা, কেনলি অ্যাওয়ার তার ছেলের জন্য অনেক বেশি কিছু আশা করতেন। তিনি কখনোই চাননি তার ছেলে ব্রুসলি হোক। তিনি তাকে বই পড়তে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। বেশকিছু বইও কিনে দিয়েছিলেন।
সেখান থেকেই তার ফটোগ্রাফি নিয়ে মূলত আগ্রহ তৈরি হয়। ফটোগ্রাফি বিষয়ক বেশকিছু বই কিনে পড়া শুরু করেন তিনি। জানতে পারেন ফটোগ্রাফির বিশাল জগত সম্পর্কে। ধীরে ধীরে আরো ঝুঁকে পড়েন এই জগতটির দিকে। এজন্য একসময় ক্যামেরা কিনে ফেলেন নিজে কিছু চর্চা করবেন বলে।
কিন্তু তবুও তার স্কেট বোর্ড ও মেয়েদের প্রতি আগ্রহ থেকেই যায়। তাই তিনি তার দুই ভিন্ন আগ্রহের কেন্দ্রটিকে একসাথে করে ফেলেন। শুরু করেন মডেল ফটোগ্রাফি।
ট্রিসিয়া গোসিংটন
জন্ম :২৪ নভেম্বর, ১৯৮৮ ট্রিসিয়ার কথা
ফিলিপাইন, ম্যানিলায় জন্ম ও বেড়ে ওঠা এই ২৪ বছর বয়সী মেয়েটির। বর্তমানে আমেরিকার বাসিন্দা।
অল্প বয়সেই তার জীবনের অর্জন—তিনি একজন সফল ফটোগ্রাফার। প্রফেশনালি তিনি ফটোগ্রাফি করেন ১৭ বছর বয়স থেকে। ফ্যাশন জগতের প্রতি তার ছোটবেলা থেকেই ভীষণ রকমের আকর্ষণ ছিল। সেখান থেকেই মূলত ফ্যাশন, মডেলিং ফটোগ্রাফির সাথে জড়িয়ে পড়া।
সম্প্রতি তিনি ঘোষণা দিয়েছেন ফ্যাশন ফটোগ্রাফারদের নিয়ে তার ফ্যাশন বিষয়ক ব্লগে ‘ব্রডশিট কলাম’ তৈরি করার।
ফটোগ্রাফির পাশাপাশি তিনি ফটোগ্রাফারদের নিয়ে একটি ফ্যাশন ব্লগ ওপেন করেছেন এবং সেটা শুরু থেকেই রক্ষণাবেক্ষণ করে যাচ্ছেন। চলতি বছরেই তিনি তার ফটোগ্রাফি ব্লগ আপডেটের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি এই কাজের জন্য ব্যক্তিগত পর্যায়ে সবাইকে মেইল করেছেন এবং ব্লগে নটিফিকেশনও রয়েছে। তার এই ইভেন্টে অংশ নেওয়ার জন্য ২৩ জন ফটোগ্রাফার ইতিমধ্যেই অর্থ বিনিয়োগ করেছেন।
ট্রিসিয়া তার ভবিষ্যত্ কর্মপন্থা জানিয়েছেন, তিনি ফিলিপাইনে যেতে চান ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাশন উইকে অংশ নেওয়ার জন্য।
তার ফটোগ্রাফি সম্পর্কিত তথ্য ও টিপসভিত্তিক টিউটোরিয়াল ইউটিউবে তুলে দেওয়া হয়। তিনি ফটোগ্রাফার হিসেবে ক্যানন ৫ডি মার্ক-২ ব্যবহার করেন। এবং সেই সাথে তার প্রধান লেন্স হলো ২৪-৭০ এল মডেলের। তাকে কখনও তার ক্যামেরা ছাড়া পাওয়া যায় না। সেটা তার সর্বক্ষণের সঙ্গী।
ফটোগ্রাফির পাশাপাশি তিনি ম্যানিলার এক ইউনিভার্সিটিতে তার ব্যাচেলর ডিগ্রির পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন ফাইন আর্টস বিভাগ থেকে। ট্রিসিয়াকে খুঁজে পাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো তার ব্লগ। সেই ব্লগের ঠিকানা : http://dailylenglui.blogspot.com
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।