আমারে দিবো না ভুলিতে
সবার চোখে সেরা হওয়া কি খুব কঠিন? ক্লাসে কিংবা আড্ডায়—যেখানেই আপনার কাজ থাক, সবখানে সবার চোখের শিরোমনি হতে পারা অনেকটা সৌভাগ্যের ব্যাপার। তবে সৌভাগ্য থাকলেই সেরাও হওয়া যায় সম্মানও পাওয়া যায়। সবার চোখে সেরা হতে কিছু আদবকেতা, কিছু বৈশিষ্ট্য তো অবশ্যই প্রয়োজন। লিখেছেন খালেদ আহমেদ আদর্শবান পড়াশোনায় আপনি অনেক ভালো, কিন্তু আপনার আদর্শ বলতে কিছুই নেই। যেমন নিজ নিজ ধর্মমতে যেসব বিষয় মেনে চলা জরুরি, তা থাকা চাই আপনার মাঝে।
এরপর তা বাস্তবায়নের চেষ্টা। পড়ায় ভালো কিন্তু কথায় কথায় মিথ্যে বলা গুরুতর অন্যায়। এসব বিষয়েও খেয়াল রাখা জরুরি। মোট কথা, সত্যপথে আদর্শবান হয়ে চলাটাই নতুন প্রজন্মের ধর্ম। নিজস্ব স্টাইল চলাফেরায় নিজস্ব স্টাইল তৈরি করুন, তাহলে আপনার দিকে মানুষের নজর থাকবে।
চলাফেরা, পোশাক-আশাকে নিজস্ব কালচার ফুটে তো উঠবেই চেষ্টা করবেন একটু ব্যতিক্রমী। তবে খেয়াল রাখবেন, দৃষ্টিকটু যাতে না লাগে কোনো কিছুই। নিজস্ব স্টাইলে চলাফেরা করলে আপনার নিজের একটা ঘরানা তৈরি হবে। দেখবেন, আপনাকে অন্যরা অনুসরণ করার চেষ্টা করবে। তখন আপনি আরো আধুনিক হওয়ার চেষ্টা করবেন।
তবে মনে রাখবেন, এমন কিছু করতে যাবেন না, যাতে অন্য একজন আপনার স্টাইল না বুঝে। তাহলে উল্টোটা ঘটবে। শিখে নিন নিত্যনতুন শব্দ ও কাজ প্রতিদিন আমাদের চারপাশে কত না নতুন শব্দ যোগ হচ্ছে, কাজও কি কম হচ্ছে ? এসব শব্দ তো নিজস্ব ভাণ্ডারে সঞ্চয় রাখবেনই, পাশাপাশি দেশ-বিদেশের সব বিষয় জেনে রাখুন নিজেকে আপডেট রাখতে। তা না হলে কলেজ কিংবা অন্য কোনো আড্ডায় আপনি হয়ে যাবেন অবহেলার পাত্র। যেখনে এসব বিষয় শিখে রাখলে হবে, হিরো, সেখানে কেন অবহেলার পাত্র সাজতে যাবেন।
কথা বলুন বুঝে-শুনে একটি প্রবাদ আছে, গুলি যেমন বন্দুক থেকে বেরিয়ে গেলে আর ফিরে আসে না, তেমনি মুখ থেকে কথা বেরিয়ে গেলে তাকে টেনেও ফিরিয়ে আনতে পারবেন না। সিরিয়াস কথা কিন্তু বন্ধুরা। কেননা, আমরা তো কথা বলতে ধরলে ফটফট করে মুখ দিয়ে যেন খই ফোটে। একটু সাবধানে বন্ধুদের সামনে কথা বলতে হবে, যাতে অন্যেরা কষ্ট না পায়, ভুল না বোঝে। কথার মাঝে দাঁড়ি-কমাও সময়মতো দিয়ে নিবেন।
তা না হলে আপনার প্রয়োজনীয় কথাটাই অপ্রয়োজনীয় হতে যেতে পারে। অতএব, বি কেয়ারফুল—কথা বলার সময় বুঝে শুনে কথা বলুন। আপনি যখন শ্রোতা সেই সবচেয়ে ভালো বক্তা, যে শ্রোতা হিসেবে মনোযোগী। কথাটা জানা না থাকলে জেনে নিন। আপনি হয়তো ভালো বক্তব্য দিতে জানেন না, কিন্তু ভালো শ্রোতা হলে একদিন ঠিকই ভালো বক্তব্য দিতে পারবেন।
কেননা শুনতে শুনতেই মানুষ প্রাজ্ঞ হয়ে ওঠে। আপনার সামনে যখন কেউ কথা বলছেন, তখন শ্রোতা হিসেবে আপনাকে চাইবেই যেমনি আপনিও চান। তাই ভালো শ্রোতা হলে সবার নজরটা আপনার প্রতিই থাকবে। চঞ্চলতা থাকলে আর দুষ্টুমি করলে সবাই কড়মড়ে চোখে তাকাবে! শ্রোতাকে আকৃষ্ট করুন এইবার আপনার পালা কথা বলার। কী বলবেন? শ্রোতা আকৃষ্ট হয় যাতে—এমন কথাই তো বলতে হবে তাই না? শ্রোতাকে আকৃষ্ট করতে পারে এমন শব্দ প্রয়োগ করুন।
শ্রোতাদের সামনে আপনি যা বলছেন তা কি তিনি শুনে মজা পাচ্ছেন নাকি কষ্ট করে গলধঃকরণ করছেন, তা জানার চেষ্টা করুন। তাদের ভালো না লাগলে আপনার বিষয়কে দীর্ঘায়িত করবেন না। সেরা হতে গেলে কিছু কৌশল তো অবলম্বন করতেই হবে। শ্রোতাকে মজার মজার কথা, কৌতুক দিয়ে জমিয়ে রাখতে হবে। যাতে তারা আপনার কথার বাইরে না যায়।
আর যেসব বন্ধু আপনার সঙ্গে ঈর্ষান্বিত হয়ে শত্রুতা করতে চাইবে, তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না কখনো। সংগঠকের ভূমিকায় আপনি একজন সেরা মানুষকে জীবনের সর্বস্তরে পরীক্ষা দিয়ে আসতে হয়। ক্লাসে শুধু ভালো রেজাল্ট করলেই হয় না। সেই সাথে ছাত্রদের নেতৃত্ব দেয়ার মাধ্যমে নিজেকে সংগঠক হিসেবে গড়ে তোলার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া কলেজের খেলাধুলা বা বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সেরা হওয়ার চেষ্টায় থাকে এই শিক্ষার্থীর।
আগামীর ভালো সংগঠকও সেরা হওয়ার অন্যতম কারিগর। জমিয়ে রাখুন আড্ডাকে আড্ডা জমানো যেনতেন কাজ নয়। সবাই এটা পারে না। ক্লাসের ভালো ছাত্রটি হয়তো সব পারে কিন্তু আড্ডায় গিয়ে চুপচাপ থাকে। দুষ্টু ছেলেটি আড্ডাকে তুঙ্গে নিয়ে যায়।
আড্ডাকে আপনি কেন জমাতে পারবেন না? অন্যেরা পারলে আপনিও পারবেন এবং অবশ্যই পারবেন। এ মনোভাব নিয়ে এগুন দেখবেন আপনি সফল হবেনই। দুষ্টু ছেলেটির আড্ডার ট্রপিক হয়তো আজেবাজে কোনো বিষয় আপনার হবে শিক্ষামূলক ও হালকা বিনোদনমূলক কথাবার্তা। তবে জমিয়ে রাখুন আড্ডাকে। সময় সচেতনতা সময় সম্পর্কে সচেতন হতে পারলে আপনার প্রতি মানুষের বিশ্বাস বেড়ে যাবে কয়েকগুণ, যাকে যে সময় দিবেন তা রক্ষা করার চেষ্টা করুন।
সময়জ্ঞান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সম্পদ। মুদ্রাদোষ থাকলে আপনার কি কোনো মুদ্রাদোষ আছে? থাকলে তা আজই ঝেড়ে ফেলুন। তা না হলে এটাই আপনার জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে। আপনি হয়তো সবদিক থেকে ফিট, শুধু মুদ্রাদোষের কারণে আপনাকে সবাই আনকোয়ালিফাইভাববে। অতএব সব মুদ্রাদোষ, বাদ যাক।
ইতিবাচক চিন্তা করুন পৃথিবীকে দেখুন ইতিবাচক আয়নায়। খারাপ তো থাকবেই। কিন্তু আপনার বন্ধুবান্ধবের সবকিছু কি নেতিবাচকভাবে নেবেন। তা ঠিক নয়। ইতিবাচক চিন্তা করুন।
প্রত্যেক জিনিসের মধ্যেই ভালোটাকে গ্রহণ করুন। দেখবেন আপনার জীবনটাই বদলে যাবে। সর্বোপরি সৌন্দর্যের পূজারী হোন। সুন্দরকে ভালোবাসুন। সুন্দর কখনো খারাপ দ্বারা আবিষ্ট হতে পারে না।
সুন্দর সবসময়ই সুন্দর। সুন্দর সবসময়ই নির্মল, আনন্দময়। আপনার জীবনকে সুন্দর করে গড়ে তুলুন দেখবেন চারদিকে আপনার রাজত্ব, আপনাকে নিয়েই সবাই আলোচনামুখর। আপনিই হবেন সবার চোখে সেরা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।