আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পান্তাভাত, বাঙ্গালিয়ানা, বৈশাখ উদযাপন / এক্টু ভেবে বলুনতো সত্যিই কি আমরা বাংলা নববর্ষ উদযাপন করছি?

ihzaka@yahoo.com হুপফূল মানসিক স্বচ্ছতায় বিশ্বাসী.. কিছুটা বাদর কিছুটা নিরিহ কিসিমের! তবে, অনেক বড় স্বপ্ন দেখে এদেশটাকে নিয়ে, যেখানে একদল শিক্ষিত তরুন ঘূণে ধরা রাজনীতিকে সত্যিকারের পরিবর্তণের পথে চালিত করতে নোংরা, হিংস্র সামপ্রদায়িকতামুক্ত, প্রকৃত দেশপ্

ছোট্ট একটা ঘটনা দিয়েই শুরু করছি! ২রা বৈশাখ ১৪১৮, সকাল ৬.৩০টা, খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে, রেডি হয়ে মতিঝিল থেকে চরে বসলাম গাজীপুর পরিবহনের একটা বাসে, বাস চলছে, আজকের সকালটায় ঢাকা শহরের রাস্তাঘাটের চিত্র একেবারেই ভীন্ন, কেমন সুনসান নিরবতা! মগবাজার আসতেই ১৬-১৮ বছরের একটা মেয়ে টলতে টলতে উঠে পরল বাসে! পাশের সিটটা খালি থাকায় এখানেই বসে পড়ল~ চুপচাপ ভাবছি! মিনিট পাচেক পরেই কন্ট্রাকটর এসে ভাড়া চাইল মেয়েটার কাছে! মেয়েটা ভীত চোখে শুধু নীচের দিকে তাকিয়ে আছে, কোন কথা নেই মুখে, একবার শুধু জানিয়েছে গাজীপুর যাবে! কোন কথা বলছেনা দেখে ক্রোধে অভদ্র কন্ট্রাকটর যা খুশি তাই বলে যাচ্ছে মেয়েটাকে উদ্যেশ্য করে! বাস এগিয়ে চলছে, আরো দুইবার এসে ভাড়া চেয়ে গেল, কোন রা শব্দ নেই মুখে, আশেপাশের বিভীন্নজনের ফিসফিসিয়ে বলে চলা শ্লেষ আর তীরবিদ্ধ কথার বান! আরেক্টু দুর যাবার পর শান্ত কন্ঠে মেয়েটার কাছে জানতে চাইলাম, কথা বলছেন না কেন? হাউমাউ করে কেদে উঠে কাতর কন্ঠে জানালো, তার কাছে কোন ভাড়া নেই[০০০০০০] মেয়েটাকে দেখতে একেবারে যাচ্ছেতাই পরিবারের মনে হল না!.................................... [বাস ভাড়া, গন্তব্যে পৌছাবার মত আরো সামান্য কিছু টাকা হাতে দিয়ে নেমে পড়লাম আমার স্টপেজে সৌজন্যতাবোধের বালাই ছাড়াই] [বোন তুমি আমাকে বাকরুদ্ধ করে দিয়েছ! তোমার অসচেতনতা আর উন্মাসিক প্রেমবোধ তোমার নিয়েছে কেড়ে সব কিছু, তবুও তুমি বেচে গেছে বৃদ্ধ হোটেল ম্যানেজারের বদান্নতায়] পতিতালয়ও তোমার ঠাই হতে পারত! ========================================= পান্তাভাত, একদিনের আনুষ্ঠানিক বর্ষবরন কালচার উদযাপনে আমাদের ডিজুস জেনারেশনের বাংগালিয়ানায় সবচাইতে নামি দামি বিখ্যাত খাবার, পয়লা বৈশাখের কাকভোরে বারোশোটাকা দামের ইলিশের ১৫০টাকায় একপিস, ঘিয়ে ভাজা কড়কড়া একটা শুকনো মরিচ, আর পেয়াজের ঝাজে দুইলোকমা পান্তাভাত খেতে না পারলে সত্যিকারের বাঙ্গালিই হওয়া যায় না~ তাই না? this is our top populated Bangladeshi culture right...................? বছরের বাকি ৩৬৪ দিন যেটার নাম শুনলে গা রিনরিন করে উঠে, কারো কারো ডিসেন্ট্রি হয়! বদহজম, পেট খারাপ স্পেশালিস্ট ডাঃ এর ভাষায় এলিট সোশাইটির গন্যমান্য শহুরে ভদ্দোরনোকেদের জন্য আরও কত্ত কি সুনামী সতর্কতা জারী~ নুন আনতে পানতা ফুরায় ছাপোষা গরিব মানুষগুলোর পেটের দায়ে বেচে থাকার এই পান্তাভাত (আপনাদের আগের রাতের উচ্ছিস্ট খাবারগুলো) নিয়ে আপনাদের বড়লোকেদের ফান করা ছাড়া আর কি কিছুই করার নাই! সারা দিনভর আপনাদের কর্পোরেট-ডেসটিনি-স্পন্সরশিপের কালচারস্রোতে টইটুম্বুর ডিজুস জেনারেশন, পহেলা বৈশাখ উদযাপনের নামে বেহায়াপনার যত প্রকাশ আছে ইচ্ছেখুশিমত তাই করে বেড়াবে! মিছিলের ভীড়ে উঠতি ছেলেগুলো হুমড়ি খেয়ে পড়বে মেয়েদের (পাহাড়-পর্বতি) স্রোতে, গায়ে খোচা, কনুইয়ের গুতা, পেছনথেকে চাপ আর সেই সব কুত্সিত মানসিকতার শিহরন জাগানিয়া জঘন্য কৃতিত্ব নিয়ে নিজেদের সার্কেলে কুত্সিত উল্লাসধ্বনি, শীষবাজিয়ে তার জয়ধ্বনি প্রকাশ! বোকাসোকা বোনদেরকে উথলে উঠা প্রেমের স্বাপ্নিক (পৌরুষোচিত ছলচাতুরীতে) উদ্যানে চোখবুজে আলিঙ্গনের বাহুডোরে সুবিধামত কোনও নির্জনস্থানে নিয়ে শারীরিক প্রেমের নিষিদ্ধ মধুপান, ফলস্বরুপ [নারী তার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ খুইয়ে] কেউ হাসিমুখে নিজেকে আধুনিক সভ্যতায় মানিয়ে নেয়া, কেউ সর্বস্ব হারিয়ে উচ্ছিস্টের ভাগাড়, আবার কারো বা ঠাই হয় পতিতালয়! বাহ বাহ! এই না হলে আধুনিক সভ্যতা, এই না হলে আমাদের কর্পোরেট বানিজ্যিক পোষাকে একদিনের বাঙ্গালি সাজা? এগিয়ে চল বাঙ্গালি! দেখিয়ে দাও তোমাদের উল্লাসনাগরে কালচারের উন্মাসিক প্রকাশ! ক্রমেই আমরা সত্যিকারের বাঙ্গালি হতে চলেছি~

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।