আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হুসনি মোবারক ও তার দুই ছেলে আটক। হুসনি মোবারকের বিচার সম্ভব হলে যুদ্ধাপরাধিদের বিচার সঠিক সময়ে সম্ভব হয় নি কেন?? (একটি জিজ্ঞাসা)

পাওয়ার অব পিপল স্ট্রংগার দেন দি পিপল ইন পাওয়ার। http://mhcairo.blogspot.com/

মিশরের ক্ষমতাচ্যূত প্রেসিডেন্ট হোসনী মুবারক এবং তাঁর দুই ছেলেকে দুর্নীতি এবং অন্যান্য অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পনের দিনের জন্য আটক করা হয়েছে । মিশরের প্রধান সরকারী কৌসুলি জানিয়েছেন দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ তদন্তে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে । এর আগে মঙ্গলবার জানানো হয়েছিল প্রথম দফা জিজ্ঞাসাবাদের সময় অসুস্থ হয়ে পড়ায় মিস্টার মুবারককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । মাত্র দু‘মাস আগে তীব্র গণ বিক্ষোভের মুখে হোসনী মুবারক ক্ষমতাচ্যূত হন ।

তারপর থেকে তিনি মিশরের অবকাশ কেন্দ্র শার্ম আল শেখে অবস্থান করছিলেন। সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন আরব বিশ্বে কোন ক্ষমতাধর সাবেক নেতাকে এভাবে বিচারের মুখোমুখি করার ঘটনা বিরল । গণবিপ্লবের মুখে প্রায় দুমাস আগে হোসনী মুবারককে ক্ষমতা ছাড়তে হলেও, মিশরের সেনাবাহিনী তাকে এতদিন এক ধরণের সুরক্ষাই দিয়ে এসেছে । বিপ্লবে নেতৃত্বদান কারী তরুণরা অবশ্য শুরু থেকেই তার বিচারের দাবী জানাচ্ছিল। বিশেষ করে তিরিশ বছরের শাসনামলে দুর্নীতি আর শেষ দিনগুলোতে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর দায়ে ।

বিক্ষোভকারীদের এই দাবী এতদিন পর্যন্ত উপেক্ষা করে এসেছে মিশরের ক্ষমতাধর সামরিক কাউন্সিল । কিন্তু কয়েকদিন আগে কায়রোর তাহরির স্কোয়ারে এই দাবীতে আবার যেরকম বড় আকারের বিক্ষোভ হয়েছে, তার পর মনে হচ্ছে ব্যাপারটা আর তাদের পক্ষে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না হোসনী মুবারক এবং তার ছেলেদের গ্রেফতারের খবরে তাই অনেকেই খুশি । কায়রোর এক বাসিন্দা বলেন, "সত্যি কথা বলতে কি আমি খুব খুশী কারণ আমার মতে, যেদিন তিনি ক্ষমতা ছাড়েন, সেদিন থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে এবং তাঁর ছেলেদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হওয়া দরকার ছিল কারণ তারাই তো ছিল মিশরে সব দুর্নীতির কেন্দ্রে। পাবলিক প্রসিকিউটরদের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, যে কথিত দুর্নীতির অভিযোগ মিস্টার মুবারক এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে আছে, তা আদালতে প্রমাণ করা । মুবারক পরিবারের সম্পদের পরিমাণ একশো কোটি হতে সাত হাজার কোটি মার্কিন ডলার পর্যন্ত বলে অনুমান করা হয় ।

তবে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অনুমান হচ্ছে মিস্টার মোবারকের পরিবারের সম্পদের পরিমাণ হবে প্রায় পাঁচশো কোটি ডলারের মতো। কিন্তু ক্ষমতা ছাড়ার পর কয়েকদিন আগে প্রথমবারের গণমাধ্যমে কথা বলেন হোসনী মুবারক, সেখানে তিনি এসবকে অপপ্রচার বলে উড়িয়ে দেন। কথিত এই দুর্নীতির তদন্তে মিশরের ক্ষমতাসীন জেনারেলরা এখন কতদূর যাবেন তা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। তাহরির স্কোয়ারের বিক্ষোভকারীরা মনে করেন, সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন জেনারেলদের সবাই হোসনী মুবারকের নিয়োগ করা এবং তাঁর শাসনামলের সুবিধাভোগী, তাই মিস্টার মুবারককে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে তারা অতটা আগ্রহী ন। অন্যদিকে গণতান্ত্রিক সংস্কারের ক্ষেত্রেও জেনারেলরা যে ধীরে চলো নীতি নিয়েছেন তাতেও বিক্ষোভকারীরা হতাশ।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, তাহরির স্কোয়ারের বিক্ষোভকারীরা তাদের আন্দোলনের গতি কতদিন ধরে রাখতে পারেন, তার ওপরই নির্ভর করবে এক্ষেত্রে জেনারেলরা আসলে কতদূর যাবেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।