আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লাঙ্গল বন্দ, ব্রহ্মপুত্র স্নান ও নারীবাদ সমার্থক

সৃষ্টিশীল কোন কাজ করা।

সনাতন ধর্মে তীর্থযাত্রা এবং গঙ্গাস্নান দেব-দেবী পূজার মতই পবিত্র মনে করা হয়। সনাতনধর্মাবল্বীরা মনে করে গঙ্গা স্নান করলে পাপ ধুয়ে মুছে যায়। ব্রহম্পুত্র নদে স্নান করাকেও তারা পবিত্র মনে করে। পুরাণ মিথ হিসাবে পাওয়া যায় একটা চরিত্র।

সেই চরিত্রই মূলত পবিত্রস্নানের নায়ক। তিনি হচ্ছেন পরশুরাম। পরশু অর্থ হচ্ছে কুঠার রাম এসেছে বিষ্ঞুর ষষ্ঠ অবতার। তার সম্মিলিত রূপই হচ্ছে পরশুরাম। কথিত আছে একশত একুশ বার কুঠার ত্রিয় পৃথিবী থেকে নিঃশ্চহ্ন করেন।

জমদগ্নি মুনি বাবা ও রেণুকা দেবী মা সহ তারা পাঁচ ভাই। পরশুরাম জমদগ্নি মুনির কনিষ্ঠ সন্তান। একদিন মুনির স্ত্রী রেণুকা দেবী গঙ্গা স্নানে গেলে তিনি দেখতে পান যে শতবাহু রাজা তার শত স্ত্রী নীয়ে জলকেলী করছেন। এক শতবাহু রাজা তার শতবাহু দ্বারা গঙ্গার জলকে আকর্ষণ করছেন। তখন জলের সাথে স্ত্রীগণ অবলিলায় তার বাহুর ভিতরে চলে আসেন।

আবার বাহু মুক্ত করে দিলে রাণীগণ জলের সাথে বেরিয়ে যায়। এই অপূর্ব দৃশ্য অবলোকন করার ফলে রেণুকার মনে পুলক অনুভব করে। এদিকে তার পূজার সময় অতিবাহিত হচ্ছে সেই খেয়াল নাই। রেণুকা দেবীর যখন মনে পড়ে আমার ঘরে ফিরতে হবে। তাড়াতাড়ি স্নান শেষ করে তিনি ঘরে ফিরলে মুনি তার বিলম্বের কারণ জানতে চান।

কিন্তু রেণুকা দেবী অবনত মস্তকে দাড়িয়ে থাকে। শত প্রশ্নের পরও যখন তিনি মুখ খুললেন না। তখন মুনি ধ্যানের মাধ্যমে জানতে পারলেন যে প্রকৃত ঘটনা। ঘটনা জানার পর স্ত্রীকে তিরস্কার করেই মুনি খ্যান্ত হলেন না। তার প্রথম সন্তানকে আদেশ দিলেন মা হত্যা করার জন্য।

কিন্তু সেই ছেলে বাবার আজ্ঞা পালনে ব্যর্থ হলেন, এই ভাবে তিনি দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ সন্তানকে আদেশ করলেন। সবাই মাকে হত্যা করতে অপরাগতা জানালে মুনি কনিষ্ট সন্তানকে আদেশ করলেন। পরশুরাম বাবা আদেশ পালনে দেরী করায় মুনি মনে করিয়ে দিলেন যে বাবা আদেশ অমান্য করা পাপ। পিতার আজ্ঞা পালনে তার হাতের কুঠরী দ্বারা মাসহ ভাইদের হত্যা করলেন। হত্যা করার পর দ্বীবিদ পাপের ফলে কুঠার পরশুরামের হাতে লেগে গেল।

কুঠার হাত থেকে না খোলায় সে বিহ্বল হয়ে পড়ল। পিতাকে বলল যে আমি তো আপনার আদেশ মান্য করেছি। তাহলে আমার হাতে কুঠার আটকে গেল কেন? পাপ তা ছোট হোক কিংবা বড় হক তার শাস্তি পেতেই হবে। তুমি পিতার আজ্ঞা পালন করার জন্য যে বর চাইবে তা তোমাকে আমি দিব। পরশুরাম পিতার কাছে বর চাইলেন আমার মা এবং ভাইদের জীবত করে দিতে হবে।

তারা জীবত হবার পর যেন তাদের হত্যার কথা মনে না থাকে। মুনির বরে আবার রেণুকা দেবীসহ তার চার সন্তান জীবিত হয়ে উঠলেন। কিন্তু তারপরেও তার হাত থেকে কুঠার খুলে পড়ল না। তখন জমদগ্নি বললেন বৎস তোমার তীর্থ যাত্রা করতে হবে। পৃথিবীর তীর্থ ভ্রমণ শেষে পরশুরাম হিমালয়ের ব্রহ্ম হৃদ দেখে স্নান করেন।

স্নান শেষে তার হাত হইতে কুঠার খুলিয়া যায় এবং পাপ হইতে মুক্ত হয়ে যান। সাধারণ পাপী তাপীদের কথা চিন্তা করে লাঙ্গল ও কুঠার দ্বারা বদ্ধ হৃদকে খনন করে। হিমালয়ের পাদ দেশ হইতে বঙ্গ দেশে নিয়ে আসেন। কঠিন বন্ধুর পথ অতিক্রম করার সময় তিনি একুশ জায়গায় বিশ্রাম গ্রহণ করেন। ঐ একুশটি জায়গাই পরবর্তীতে লাঙ্গল বন্ধ নাম হয়।

বর্তমানের বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে সোনারগাঁর স্রোতস্বনী ব্রহ্মপুত্র নিয়ে এসে যাত্রা থামান। সেই ত্রেতা যুগ হইতে আজ অব্দী পাপ মোচনের আশায় হাজার হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা স্নান করে। এই ঘটনা মনে করিয়ে দিলাম এই কারণে যে আজকে মুসলীমরাই শুধু নারীদেরকে পর্দার দ্বারা আব্ধ করে রেখেছে বলে যে ধুয়া সারা পৃথিবীর আধুনিক মানুষদের মুখে ঘুরে বেড়া। নারীদেরকে মুসলমনরাই অবমাননা করছে, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন আগে ইসলাম ধর্ম সম্বন্ধে জানুন তার পরে মত প্রকাশ করবেন। ইসলাম নারীকে পর্দার দ্বারা আবদ্ধ করে রাখেনি বরং সমাজের ভালোর জন্যই করেছে।

তানা হলে রেণুকার চোখে সামনে যে ঘটনা ঘটেছিল তার পরিপ্রেেিত সন্তানের হাতে হত্যা হতে হতো না। কিন্তু আজ আমরা হর হামেশাই ঐরূপ বেহায়াপানা দেখে থাকি। আধুনিকতা বেহায়াপানাকে বলে না মনের দিক হতে আধুনিক হতে হবে। যেরূপ ছিলা কলা কিংবা ছিলা ফল কোন চালাক ক্রেতা কিনে খাবেন না তা যতই সুন্দর হোক না কেন। পর্দা বা আব্র“ ইসলাম যে শুধু নারীদেরকেই দিয়েছে তাই নয় পুরুষদেরকেউ দিয়েছে।

জানা না থাকলে হাদিস কোরআন শরীফ খুলে দেখতে পারেন। এবং নারী সম্পত্তির বন্টনেও ইসলাম অনেক উদার। আরবে যখন আইয়ামে জাহেলীয়াতের যুগ বা ঘোর অন্ধাকারের যুগ ছিল তখন কন্যা সন্তানদেরকে জন্মের পর পরই জীবিত কবর দেওয়া হত। ফেরাউন আমলেও কন্যা সন্তানদেরকে হত্যা করা এবং আগুনে পুড়িয়ে ফেলত। ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের আমলেও সতীদাহ প্রথা ছিল।

চিল কান নিয়ে গেল শুনে চিলের পিছনে না ছুটে নিজের কানে আগে হাত দিয়ে দেখতে হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।