অন্ধকার; মৃত নাসপাতিটির মতন নীরব'
১) সুর ভাঁজে অন্ধনীল গিটারমানব কঙ্কালসার ফ্রেটের প্রেতপুরীতে । নিমগ্ন দর্জির সেলাইকলের মত ঝড় তোলে সপ্রতীভ আঙুলে । আঙুলের প্রলয়নৃত্যের প্রতিটি মুদ্রা ছাপ রেখে যায় সোনালী ফ্রেমে । ফ্লেমেনকো থেকে উপচে পড়ে বিষাদ ও উচ্ছাসের মিলিত সুর ।
২)
এ অরণ্যাধিপতির বৃক্ষরাজীর প্রতি কোন নির্দেশনামা নয় ।
কি এক আশ্চর্য প্রণতিতে আলিঙ্গণ করে তার গিটার টাকে, যেন প্রেমিক উষ্ণ আশ্লেষে মাতোয়ারা তার কল্পনার প্রেয়সীকে নিয়ে ।
৩)
তন্তুসার আস্তিনের মত আঙুল ও ছয়টি তারে ক্ষয়ে যাওয়ার চিহ্ন । ব্যবহারজীর্ণ শার্টের মত ঠেস দিয়ে আছে দেয়ালে, একটা ছায়াস্পন্দিত জীবনের বিপরীতে ।
৪)
প্যাঁচার ডাকে, নদীজলের অস্পর্ষে বয়ে যাওয়া চাঁদ ক্রমেই নিভে আসে । বোবাপাখির ডানা আরো নীলাভ হয়ে উঠে প্যালেটনাইফের আঁচরে ।
সেলাইকলের একটানা শব্দোল্লাস ক্রমেই গর্জনের সুরে জন্ম দেয় সাইক্লোন-সময় । গোলচত্বর পেরুনো হাওয়ার সুরে গ্রাসের তান তোলে আঁধারের অসুর, সাইক্লোন চোখ । প্রজাপতি-ঘুড়ির উড়ালপথে একটা সরীসৃপ-ছায়া পিছলে যায় ঈশানের নক্তনীল সময়ের মেঘে । সাইক্লোনের তীব্রতা বেড়ে চলে ।
৫)
এসে ছিলো ধুলির ধুয়ো, গিটার রিফ্রেইন ।
উপেক্ষনের সর্বনাশে অন্ধনীল গীটার ফ্রেইট তখন ছিল ধুলিধুষর স্রংস উপত্যকা এক । গিটার কেইজের কাঠকফিনে তীব্রস্বরে চিতকারের অপেক্ষায় প্রহর গুনেছে নিঃসাড় কাঠ, ছয়টি তার আর একটা কবিতা । গোলচত্বর-বন্দী ভ্রমরসুরের খোঁজে নিস্তেজ তার রুপালী চুলে সস্নেহ হাতে বোলাতে এসেছিল হাওয়ার আঙুল । আগোচরে মাকড়শা এক কাটছিল চরকা রুপালী তারার বুননে ।
ছিন্ন তার অসুরের কায়া এক
সুরের প্রার্থনায় ঝুলে থাকে
জীবন ও মহাকাল
৬)
চন্দ্রবালিকার প্রতি অন্ধনীল কবি
আজও পাঠায় কবিতার চিঠি
শব্দে বাঁধে সেরেনেড
ঋজুকায় আঙুল যেন হায়, নমিত;
গিটারের কর্ড হয়ে অক্ষয়
ন্যুব্জ
বিস্মৃত প্রণয় ।
===
তৈল চিত্রঃ The Old Guitarist (1903)
চিত্রশিল্পীঃ পাবলো পিকাসো (অক্টোবর ২৬, ১৮৮১ - এপ্রিল ৮, ১৯৭৩)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।