আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুক্তগদ্যঃ বড় পর্দার স্বপ্ন

অন্ধকার; মৃত নাসপাতিটির মতন নীরব'
* দেবদূত বড় পর্দায় স্বপ্ন দেখে, আমাকে দেখে সে আঁতকে উঠে, ঠিক যেন খ্যাপাটে বেয়াড়ার হাস্যকর দ্বিতীয় সত্তার খাপছাড়া দোসর । আসলে তা ছিল ভার্চুয়াল প্রতিরূপের অপচ্ছায়া । আমাকে অপরাধী বলিয়া রায় দেওয়া হয়েছিল । কারন পৃথিবীর নিগুঢ সত্য আমি জেনে ফেলেছিলাম । আমি কৈফিয়ত দিতে বাধ্য নই ।

তবুও রাকঢাক রেখে বলি, সিদ্ধান্তগ্রহণমূলক ভ্রমাত্মক বিচারে এটাকে আমি অনুমোদিত স্বতঃসিদ্ধ সত্য বলে স্বীকার করে নিচ্ছি । * হঠাৎ নিজের ছবি দেখে আমি বিস্ময়াবিষ্ট হয়ে উঠি। খুবই বেঁটে বিকলাঙ্গ, কুৎসিত চেহারার বামনভূত, দুরারোগ্য ব্যাধির মত মোটা ফাঁদের চালুনি, কামগন্ধে আর যৌন বিপর্যয়ে পরিবেষ্টিত । ততক্ষনাৎ, কোন লুসিফারের সুদৃষ্টিতে, আমি হয়ে গেলাম খাঁজহীন নলযুক্ত বন্দুকের মত মসৃণ, আমি হয়ে গেলাম আফ্রোদিতি আর পার্সিফনির প্রিয়পাত্র সুচতুর করোটির আডনিশ । পিছু হাঁটতেই চোখে পড়ে বীর্য এবং রক্তের সওদারত নিচুস্তরের বিশৃঙ্খল লোকজন ।

বাঁকা চাউনির চঞ্চল চপলার তীক্ষ্ণ চোখের চাবুক আর সাধ্যায়ত্তের ঠোঁটের বক্রতা । ঠোঁটগুলো ফাঁসটা মাঝে মাঝে ছোটোবড়ো হয় ঠিক যেন মাঝে মাঝে নৌকার পাল গুটিয়ে ভাঁজ ছোট করে নেওয়া হচ্ছে । পোকারের বোর্ডে খোঁচা দাড়ির মাঝ বয়সিকে দেখে মনে হচ্ছে পরকালের চিন্তায় মগ্ন । আসলে তা নিমগ্ন চিত্ত অভিনয় । স্মৃতিরোমন্থন করছে নিয়তির জ্যামিতি ।

কারন তার হাতেই আসে মোক্ষম অস্ত্র টেক্কার পেয়ার । সাতফুট লম্বা বেসবল প্লেয়ারগুলো যেন নিঃশব্দচারী বোমারু বিমান । মাংস পিন্ডের ঐচ্ছিক সঞ্চালন রোধ করে পাপীর বিকলিকরনে ব্যবহৃত হয় হাই ভোল্টেজ বৈদ্যুতিক শক । * হাইডেফিনেশন কালার স্ক্রিনের সন্ধ্যাদৃষ্টিতে বাইপোলার ব্রেইনে সৃষ্টি হয় প্রদাহ । আমার একান্ত একশ বিলিয়ন নিউরন সেল আমাকে দেখান সম্ভাব্য ভবিষ্যত মেনে নিতে পারেনি ।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হল । পুলিশ সার্জেন্টের পোষমানা দেশী কুকুরটা ট্রেইনড কুশলী । কুকুর আমাকে ধাওয়া করে পাকড়াও করে ফেলে । লোহার শিকলের হাতকড়া আর পায়ের বেড়ি পড়ার নিয়তি সত্য হল । যে গাড়িতে আমায় নিয়ে আসা হল সে গাড়ির স্পার্ক প্লাগে ময়লা আর কার্বুরেটরে জ্যাম।

কারাগারে উজ্জ্বল গোলাপী রংয়ের কক্ষে আমাকে বন্দী করা হল । গোলাপী রংয়ের একটি সিগ্নিফিকেন্স হল অশান্ত বন্দিকে শান্ত করে । আমাকে খেতে দেওয়া হয় লাল পিপড়ার ফরমিক বিষ আর সাইক্লোমেট দিয়ে তৈরি টোস্ট বিস্কুট । কিছুক্ষন পরেই হলদে দাঁতের ভেতর থেকে পিত্তের দুর্গন্ধ পেলাম । তন্নতন্ন করে হরেক মালামালের সেলে পড়ে থাকা রড্ডিমালের থেকে খুজে আনা বড় থলি আর বস্তা হল মাথার বালিশ ।

হঠাৎ শারীরিক অবয়বে মূর্ত হয় কপট আচড়ের নিদারুণ দৈহিক যাতনা আর আকস্মিক স্নায়ুর যন্ত্রণা ও মনস্তাপের কষ্ট । আমার অর্ধেক মুখ দলিতমথিত, ক্ষতবিক্ষত । করোটির ভিতোরের মাথার সাদা খুলি কচ্ছপের খোলের মত দৃশ্যমান । মধ্যরাতের অভিষপ্ত রাস্তায় ক্রীতদাসদের তত্ত্বাবধায়ক আমাকে মালটানা জীর্ণ গাড়িতে নিয়ে অগ্রসর হল শহরের সবার জন্য তির্যক হুশিয়ারি সংকেত আর সতর্কতাসূচক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে । শ্মশান প্রেত-নগরীতে ভীতিকর কিছু আত্মচিৎকার শুনা যাচ্ছে ।

জড় পদার্থ গুলোও যেন চিৎকার করে প্রতিবাদ করছে । ভীতিকর আত্মচিৎকার আর জড় পদার্থ গুলোর চিৎকারের কম্পাঙ্ক মিলে যাচ্ছে বারবার । অনুরণন কম্পাঙ্কের মিলিত বিস্তারের সন্ত্রাস সৃষ্টির শিহরনে আমি আপ্লুত হই । অত্যন্ত বিপজ্জনক অবস্থায় বুঝতে পারি শুধু আমিই নই নীর থেকে ছেঁকে নেওয়া ক্ষীর । যুদ্ধজাহাজে আগুন লাগানর জন্য ব্যবহৃত তরল দাহ্য পদার্থ ঈশ্বরহীন পাপীদের শরীরে ঢেলে দিচ্ছিল স্মৃতিভ্রষ্ট পক্ষপাতগ্রস্থরা ।

* সেই আতঙ্কগ্রস্থ দুঃস্বপ্নের অবস্থা থেকে আমি পরিত্রাণ পেয়েছিলাম । দায়মোচন ও পুনরুদ্ধার নিমিত্তে আমাকে বলা হল অপ্রকৃতিস্থ প্যারানয়ড়, স্মৃতিলুপ্ত সিজোফ্রেনিক । আমি বুঝতে পারলাম আমার মত মানুষদের আসলে কেউ কখনও বুঝতে পারে না । * অতপর যখন ঘুম ভাঙলো তখন আমি সেই পৃথিবীতে ফিরে আসলাম যেখনে এসিড বৃষ্টিতে ঝলসে গেছে নৈতিক ও আধ্যতিক জগত । বস্তুকেন্দ্রীক সে জগতে মানুষ দিশেহারা ।

বাস্তব হচ্ছে ভার্চুয়াল । প্রতিফলিত আলোয় অনাগত ভবিষ্যত আলোকিকরন প্রচেষ্টা । সৃষ্টির কারন বাধা দিচ্ছে সৃষ্টিকে । তবে আমি এখনো বিশ্বাস করি বিশাল দিগন্ত, প্রশান্ত ভোরের আশ্চর্য রাবিশ আটপিয়া । ----------------- [গল্প নিয়ে একটা এক্সপেরিমেন্টের শেষে আউটপুট পাইলাম এই দৃশ্যকল্প ।

কেমন হইছে বুঝতে পারছি না । প্রেরনা হামা ভাইয়ের গল্প সমুহ । প্রথম প্রয়াসে ভুলত্রুটি মার্জনিয় ]
 

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।