এইটা আমার ব্লগ।
চাকুরী ক্ষেত্রে এবং বিদেশে ইন্ডিয়ান, পাকিস্তানি এবং শ্রীলঙ্কান দের সাথে কাজ করতে গিয়ে আমার মনে হইছে স্ট্যান্ডার্ড জেনারল লাইনে এডুকেটেড একজন বাংলাদেশি গ্রাজুয়েট এই সাবকন্টিনেন্টেই তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে অনেক পেছনে পড়ে আছে, বৈশ্বিক প্রতিদ্বন্দ্বীদেরতো অনেক দুরের ব্যাপার। এবং এই ডিফারেন্স টা, গত ১৫/২০ বছরে আরও বেড়ে গ্যাছে এবং দিনে দিনে আরও বাড়তাছে বলেই মনে হচ্ছে।
মেধাবই ছাত্র সারা প্রথিবীর সব দেশেই আছে। বুয়েট, আইবিএ,ক্যাডেট কলেজ বা প্রথিতযশা স্কুল, কলেজ, ইউনিভারসিটির ছেলেরা যেই খানেই যায়, কম্পিটিশান করে একটা লেভেলে পৌছাতে পারে।
আমি এদের প্রিভিলজেড বা নির্বাচিত গ্রুপ মনে করি। এদের কথা আলাদা।
এদের বাদ দিয়ে রেগুলার শিক্ষা ব্যবাস্থায় স্কুল, কলেজ, ইউনুভারসিটিতে পড়াশোনা করে বড় হয়ে ওঠা একজন এভারেজ বাংলাদেশি স্টুডেন্ট- তার মত জেনারেল এডুকেশান পেয়ে বড় হওয়া একজন ইন্ডিয়ান, পাকিস্তানি এবং শ্রীলঙ্কান এর সাথে কোন মতেই কম্পিট করতে পারতাছেনা।
তার প্রথম কারনটা হচ্ছে, সে তার কম্পীটিটর থেকে ইংরেজি শিক্ষায়, লেখায়, বলায় এত দুরবল যে সে নিজেকে উপস্থাপনই করতে পারছেনা। এমন ভুল ভাল হাস্যাকার ইংরেজি সে লিখে এবং বলে যে প্রতিস্ঠান তাকে কামলা গিরি ছাড়া আর কোন কিছুর যোগ্য ভাবতে পারতাছেনা।
এইটা ছাড়াও দেখা যাচ্ছে, চাকুরি ক্ষেত্র কোন তুলনাতেই সে ওদের থেকে ফিট না কারন তার প্রজেন্টেশান স্কিল অত্যন্ত দুর্বল, তার পোশাক পরিচ্ছদের প্রেজেন্টেশান দুর্বল, তার ক্রিটিকাল এনালিসিস এর ক্ষমতা নাই বললেই চলে- যে যা বলে সে বিশ্বাস করে নয় অবিশ্বাস করে নিজে থেকে ক্রিটিকালি এনালাইয করতে পারেনা, তার ইমোশনাল ইন্টেলিজেনসও পূর- সে হয় অভিমানি নয় রিএকটিভ, নিজস্ব সাবজেক্ট এও সে তার প্রতিদ্বন্দ্বী থেকে কম জানে কারন সে একটা আওটডেটেড সিলেবাস পড়ে বড় হইছে, ম্যাথ, সাইন্স, জেনারেল নলেজ, প্রফেশনাল নলেজ সব দিকেই আজকের গ্রাজুয়েটরা বিশ্ব প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাদ দিলাম এই সাবকন্টিনেন্টেই তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের সাথে টিকতে পারছেনা।
আরও ভয় এর ব্যাপার হচ্ছে। আমাদের ও আমাদের সমসাময়িক জেনারেশান(প্রজন্ম ৭১) এর ছেলেরা পিছু পরে থাকলেও, কিছুটা হলেও কম্পিটিটিভ ছিলাম। কারন, আমরা ওদের সাথে ডিল করতে গিয়ে, এডুকেশানে পিছিয়ে থাকলেও, নিজের সোসিয়াল এবং কালচারাল আইডেন্টিটির থেকে পাওয়া একটা কনফিডেন্স নিয়ে ওদের সাথে ডিল করছি, যার উৎস জেমস, ওয়ারফেজ, আয়ুব বাচ্চু, হুমায়ুন আহমেদ এবং অন্যরা ।
কিন্তু রিসেন্ট গ্রাজুয়েটদের দেখছি, তাদের এডুকেশান যেমন দুর্বল ঠিক তেমনি হিন্দি ফিল্ম দেখে দেখে তাদের মধ্যে একটা কালচারাল হীনমন্যতা ঢুকে গ্যাছে।
ফলে সে ধরেই নিচ্ছে একজন ইন্ডিয়ান বা পাকিস্তানির স্বপ্নপুরি থেকে বা হায়ার সসিয়াল স্ট্রাটা থেকে আসা একজন মানুষ, যেমনটা আমার জেনারেশানের মানুষদের মনে হতো সাদা চামড়াদের সাথে মেশার সময়।
এবং তার শিক্ষার ডেপথ কম হওয়ার কারনে সে পিছিয়ে তো পড়ছেই সাথে কনফিডেন্স ভেঙ্গে গিয়ে সে নিজেই ধরে নিচ্ছে সে এই ইন্ডিয়ান বা পাকিস্তানি বা স্রিলঙ্কানের সমকক্ষ না।
মাত্র ২০ বছরের ব্যবধানে এই ভয়ংকর অধঃপতনটা হইছে। এবং এর জন্যে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার ডাম্বিফিকেশান এবং কমারশিয়ালাইজেশান দায়ী। কারন, যারা পয়সা খরচ করতে পারতাছে, একমাত্র সেই প্রিভিলেজড গ্রুপই এই ডাম্বিফিকেশান প্রসেস এর বাহিরে থাকতে পারতাছে।
শুধু এডুকেশান না, ইন্ডিয়ান ট্যালান্ট শো তে নাচ গান দেখে বাংলাদেশি ট্যালেন্ট শো এর নাচ গান দেখল বুঝবেন, তারা কোথায় চলে গ্যাছে আমরা কোথায় চলে যাচ্ছি এবং পার্থক্য টা কত ব্যাপক এবং গভীর এবং দিনে দিনে পার্থক্য টা কিভাবে বাড়তাছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।