আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জাপানে তেজস্ক্রিয় বিপর্যয়: বিকিরণ যুক্তরাষ্ট্রে পৌছানোর আশঙ্কা



জাপানের ফুকুশিমায় ৩টি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিষ্ফোরণে জাপান এখন তেজস্ক্রিয় বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। বিস্ফোরণে নি:সৃত তেজস্ক্রিয় বিকিরণ যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত পৌছাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন মার্কিন পরমাণু বিশেষজ্ঞরা। সোমবার মার্কিন পরমাণু বিশেষজ্ঞ জোসেফ সারনিয়ন বলেন, জাপানের পরমাণু সংকট এখন মারাত্মক পর্যায়ে রয়েছে। তিনি বলেন, সবচেয়ে বিপজ্জনক হলো ফুয়েল রডগুলো পুরোপুরি অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ফলে রডগুলোতে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হচ্ছে।

এ তাপে চুল্লীগুলো পুরোপুরি গলে যেতে পারে। আর এরকমটা ঘটলে সেখান থেকে সৃষ্ট তেজস্ক্রিয়তা পানি, মাটি ও বায়ুর সাহায্যে জাপান ছাড়িয়ে পুরো প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে অবশিষ্ট পারমাণবিক চুল্লীগুলো নিরাপদ ও স্থিতিশীল রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে আন্তার্জাতিক পারমাণবিক শক্তি কমিশন (আইএইএ)। রয়টার্স এ খবর প্রকাশ করেছে। যু্ক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত 'ইচিরো ফুজিসাকাইও' তেজস্ক্রিয়তার বিপদের কথা স্বীকার করে বলেন, চুল্লীগুলো দ্রুত গলে যাওয়ার কোনো সম্ভবনা নেই।

এটা সত্য যে, চুল্লীগুলোর কিছু ফুয়েল রড হয় অকার্যকর হয়ে গেছে, না হয় গলে গেছে। এখনও সম্পূর্ণ চুল্লীগুলো গলে যাওয়ার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়নি। জাপানে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিস্ফোরণের পর তেজস্ক্রিয়তা ছড়ানোর মাত্রা বেড়েছে। এজন্য ওই কেন্দ্রের ৩০ কিলোমিটার এলাকায় সব মানুষকে ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়াও ওই এলাকায় নো ফ্লাই জোন আরোপ করা হয়েছে।

টেপকোর হিসাবে মতে, স্বাভাবিক সময়ে এক বছরে বাতাসে তেজস্ক্রিয়তা ছড়ানোর সহনীয় যে মাত্রা তার আট গুণ ছড়িয়েছে এক ঘণ্টায়। মঙ্গলবার সকালে মাত্র ৪০ মিনিটের ব্যবধানে তেজস্ক্রিয়তা ১হাজার ৯৪১ মাইক্রোসিভার্টস থেকে ৮ হাজার ২১৭ মাইক্রোসিভার্টসে পৌছেছে, বছরে সহনীয় মাত্রা যেখানে ১ হাজার মাইক্রোসিভার্টস। এ মাত্রা মানুষের শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইউকিও এদানো বলেছেন, আমরা তেজস্ক্রিয়তা ছড়ানোর যে মাত্রার কথা বলছি, তা মানুষের শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী নাওতো কান তার ভাষণে বলেন, তেজস্ক্রিয়তা ছড়ানোর বড় ধরনের ঝুঁকি রয়েছে।

তাছাড়া ওই কেন্দ্রের চারপাশের ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থানরতদের ঘরের বাইরে না বেরোনোর জন্য আহ্বান জানান তিনি। শুক্রবারের ভয়াবহ ভূমিকম্প ও সুনামির পর সেখানে একের পর এক পারমাণবিক চুল্লী বিস্ফোরণের ঘটনাকে তিনি ১৯৮৬ সালের চেরনোবিল দুর্ঘটনার চেয়েও ভয়াবহ বলে অভিহিত করেছেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।