আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিজেকে খুব অপরাধী লাগছে। জানিনা আমি কতটুকু অপরাধী



বেশ কিছুদিন ধরে চাকুরী নাই, বেকার বসে আছি, সুবিধমত চাকুরী পাচ্ছি না। এরমধ্যে সেভিংস যা ছিলো, তার বড় অংশই শেষ হয়ে গেছে। হাতে আছে সামান্য পরিমানেই টাকা, পরের কয়েকমাস চলতে পারবো। আজকে এক দূরসম্পর্কের রিলেটিভ আসলো সকালে,ঢাকার বাইরে থেকে, হাসপাতালে ভর্তি হলো। রোগীর সাথে তাদের অনেক মানুষ জন।

ঢাকায় থাকা অনেক আত্মীয় স্বজনও। আমিও অন্যের মুখে শুনে রোগী দেখতে গেলাম। সংকটপূর্ণ হওয়াতে রোগীকে সিসিইউতে রাখা হলো। আরো ভালো চিকিৎসার জন্য আইসিউ তে ভর্তি করতে বলা হলো। কথা হচ্ছিলো ডাক্তার, হাসপাতালের মানুষজনের সাথে রোগীর ছেলের।

দূরসম্পর্কের আত্মীয় হেতু আমার নীরবতাই ভালো। কিন্তু আইসিউতে প্রতিদিনের খরচ প্রায় ১২,০০০ টাকা মত হতে পারে। কতদিনে রোগী সুস্হ হবে, তার কোনো হিসাব কেউ দিতে পারবে না। ঐ ছেলে ৫০,০০০ টাকা মত নিয়ে এসেছে। এর মধ্যে ৫-৬ হাজার টাকা খরচ ও হয়ে গেছে।

সে ভয় পাচ্ছে যদি এর বেশী টাকা লাগে, তবে কি হবে? আমার যা সঞ্চয় ছিলো, সব নিয়ে হয়ত আর ৩-৪ মাস মত চলতে পারবো। জানি না কবে চাকুরী পাবো, তারপরও বললাম, আমি ১০,০০০ টাকা দেই, আপনারা বাকীটা ব্যবস্হা করেন। ব্যবস্হা মানে টাকা জোগাড় করা, রোগীকে দেখতে তাদের আরো অনেক আত্মীয়স্বজন আসলো, অনেককেই অবস্হা সম্পন্নও মনে হলো। সবাই ছেলেটাকে জিজ্ঞাসা করছে, কি ব্যবস্হা করলি, কিন্তু কেউ নিজে কোনো ব্যবস্হা করার চেষ্টা করলো না। তাদের স্হাবর সম্পত্তি আছে অনেক, কিন্তু সাথে ক্যাশ টাকা বেশি ছিলো না।

সেই ছেলে তখন অন্য হাসপাতালে খোঁজ করতে লাগলো, যেখানে কমে পারা যায়। এই করতে করতে আরো ২ ঘন্টা সময় কেটে গেল। অতঃপর সব শেষ। রোগীকে বাচানো গেল না। এখন মনে হচ্ছে আমি কেন বললাম না, আমি আরো বেশি টাকা দিতে পারবো, আপনি ব্যবস্হা করেন।

মানুষটা যদি আমার পরিবারের কেউ হতো, তাহলে হয়ত আমি এইসব কিছুই চিন্তা করতাম না, সব সঞ্চয় একসাথে নিয়ে আসতাম, পরে কি হবে, সেটা চিন্তা করতাম না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.