লিখে খাই, সবার ভাল চাই
নিজেকে জানো
শেক্সপিয়র আহ্বান জানিয়েছিলেনÑ‘দাই সেলফ’ নিজেকে জানো’। উপনিষদে মুনি ঋষিরা বলেছেনÑ আত্মনং বিদ্ধি। অর্থ হচ্ছে ‘নিজেকে জানো’। রবীন্দ্রনাথ তো আরও একটু এগিয়ে বলেছেনÑ ক্ষ্যাপা খুঁজে ফেরে পরশ পাথর। অর্থাৎ মানুষ নিজের আত্মাকে খুঁজে বেড়ায় নিজেকে চেনার জন্য।
কে আমি। আমি কোথা থেকে এলাম, কোথায় যাচ্ছি। এ জটিল বিশ্বে আমার কি ভূমিকা- মানুষের ভাল করার জন্য আমি কি করতে পারি। এসব নিয়ে মানুষকে ভাবতে বলেছেন, চিন্তা করতে বলেছেন, মাথার ব্যায়াম করতে বলেছেন, এভাবেই নিজেকে জানতে বলেছেন।
তবে মুশকিল হচ্ছে, এসব খুবই জটিল চিন্তা ভাবনা।
এর কোন সোজা উত্তর নেই। ভাবনার কোন শেষ নেই। ইচ্ছা করলে যে কেউ ভাবতে ভাবতে পাগল হয়ে যেতে পারেন। তবে পাগল হতে কার ভাল লাগে? পাগলের প্রসঙ্গ যখন এলো তখন ছোট একটা ঘটনা বলে ফেলি।
আমাদের বাড়ির পাশের বাড়িতে একটা পাগল ছিল।
তবে মওসুমী পাগল। সারা বছরই ভাল থাকত, বছরের একটা সময় পাগল হয়ে যেত। তবে তেমন ক্ষতিকারক পাগল নয়। পাগল হলে সে তাদের বাড়ি কাউকে ঢুকতে দিতো না। প্রতিশোধ নিতে পাড়ার ‘ শেক্সপিয়ররা’ সেই পাগল বাড়ির দেয়ালে দুই লাইন ছড়া লিখে দিয়েছিলÑ
‘কর্তা পাগল-গিন্নি পাগল, পাগল দুই চেলা/ সেথা সাত পাগলের মেলা।
খেয়াল করলে দেখা যায়, উপনিষদের মুনি ঋষি থেকে শুরু করে শেক্সপিয়র, রবীন্দ্রনাথ, গ্রিক দার্শনিক সবাই লম্বা ‘সফেদ’ দাড়ির অধিকারী ছিলেন। তারা নিজেকে চেনার জন্য জানার জন্য এতই ব্যস্ত ছিলেন যে, সেভ করারও সুযোগ পাননি জীবনে।
এবার একটি বিশুদ্ধ গাওয়া ঘি-এর মতো বিশুদ্ধ শতভাগ খাঁটি সত্যি ঘটনায় ফিরে আসি।
সুমন আর সুমনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাতটি বছর কাটিয়েছে পরস্পরকে ভালবেসে। তাদের সেই উদ্দাম ভালবাসার দিনগুলোতে তাদের দেখলে মনে হতো তারা যেন সদাই ‘ আ গলে লাগ যা’।
কর্মজীবনের দুটি বছর পার হওয়ার পর সুমন একদিন সুমনার হাত ধরে বললো, চলো আমরা বিয়েটা সেরে ফেলি।
সুমনা নিমেষে সুমনের হাত থেকে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বললো, সেটা সম্ভব নয়।
সুমন: কেন সম্ভব নয়?
সুমনা: তোমাকে আমার পছন্দ নয়।
সুমন করুণ কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল, তোমার কেমন পছন্দ?
সুমনা: প্রথম শর্ত বড় লোক হতে হবে, গাড়ি বাড়ি অঢেল অর্থ, সমাজে প্রভাব-প্রতিপত্তি থাকতে হবে। এবং অবশ্যই দেখতে সুন্দর হতে হবে।
সুমন: তাহলে এতদিন আমার সঙ্গে প্রেম করলে কেন? দেখনি আমার এসব কিছুই নেই।
সুমনা: সে তো টাইমপাস, তাছাড়া তোমার নোটগুলোর প্রয়োজন তো ছিল।
সুমন এবার ক্ষিপ্ত কণ্ঠে বললো, তুমি যে এতসব চাইছো তার বদলে তুমি কি দেবে? তোমার কি আছে? নিজেকে কোন দিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ভাল করে দেখেছো? তোমাকে দেখলে আমার মাঝে মাঝে ঘোড়ার কথা মনে হয়। তারপর যেসব ভাষা সুমন ব্যবহার করলো তা ভদ্রলোকের ভাষা নয়...।
তারপর যথারীতি দুজনার দুটিপথ দুদিকে চলে গেল।
কিন্তু উপসংহারে বলতে হয়, উপনিষদের ঋষিরা সেজন্যই বুঝি পরামর্শ দিয়েছেন নিজেকে জানো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।