বলা হয়ে থাকে যে, মিডিয়া সমাজের দর্পন। মিডিয়া তার দায়িত্বশীল পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সমাজে যত অসঙ্গতি, দুর্নীতি, ষড়যন্ত্র, শোষণ, অ্ন্যায় ইত্যাদির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে যে কোন দাঙ্গা, গৃহযুদ্ধ কিংবা কনফ্লিক্ট প্রতিরোধ করে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে। আবার এই মিডিয়াই দায়িত্বশীলতা থেকে দূরে সরে গিয়ে গণহত্যা সংঘটনের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের মিডিয়াগুলো শান্তি প্রতিষ্ঠা করা দূরে থাকুক কোনটি গণহত্যা আর কোনটি গণহত্যা না তা নির্ণয় করতেও ব্যর্থ হয়েছে।
'গণহত্যা' শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে 'Genocide'।
আবার ইংরেজি শব্দটি গ্রীক ‘genos'এবং ল্যাটিন 'cide'-এর সম্মিলিত রূপ। ‘genos' শব্দের অর্থ জাতি কিংবা নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী। আর 'cide'-শব্দের অর্থ হচ্ছে হত্যা করা। অতএব Genocide শব্দের অর্থ দাঁড়াচ্ছে কোন জাতিকে হত্যা করা।
১৯৪৮ সালের ৯ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত রেজ্যুলেশন ২৬০ (৩) এর অধীনে গণহত্যা বলতে বোঝানো হয়েছে এমন কর্মকান্ড যার মাধ্যমে একটি জাতি বা ধর্মীয় সম্প্রদায় বা নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে নিশ্চিহ্ন করার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে বা হচ্ছে।
২৬০ (৩) অনুচ্ছেদের ২ এর অধীনে যেসকল কর্মকান্ডকে আইনগতভাবে গণহত্যা হিসেবে বিবেচনা করা হয় তা হলো:
ক. পরিকল্পিতভাবে একটি জাতি বা গোষ্ঠীকে নির্মূল করার জন্য তাদের সদস্যদেরকে হত্যা বা নিশ্চিহ্নকরণ।
খ. তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য শারীরিক বা মানসিক ক্ষতিসাধন।
গ. পরিকল্পিতভাবে একটি জাতিকে ধ্বংসসাধনকল্পে এমন জীবনবিনাশী অবস্থা সৃষ্টি করা যাতে তারা সম্পূর্ণ বা আংশিক নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।
ঘ. এমন কিছু ব্যবস্থা নেওয়া যাতে একটি জাতি বা গোষ্ঠী জীবনধারণে শুধু প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি নয়; বরং সেই সাথে তাদের জন্ম প্রতিরোধ করে জীবনের চাকাকে থামিয়ে দেওয়া। এবং
ঙ. একটি জাতি বা গোষ্ঠীর শিশু সদস্যদেরকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে তাদের জন্ম পরিচয় ও জাতিগত পরিচয় মুছে ফেলাকেও গণহত্যা বলা হয়।
...
এই সংজ্ঞার আলোকে বর্তমানে বাংলাদেশে যা ঘটছে তা গণহত্যা কিনা তা যাচাই করার দায়িত্ব পাঠকমহলের। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।