সীমাবদ্ধ জ্ঞানের অধিকারী মানুষ বড়ই বিচিত্র। কখন কী করে বসে তার কোনো ঠিক নেই। কখনো হয়তো পরম বন্ধুত্বে একজনকে কাছে টেনে নিবে। আবার স্বার্থে আঘাত হানলে হয়তো তাকেই দূরে ঠেলে দিবে। কখনোবা জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে ভুলকে ঠিক বলবে,আবার ঠিককে ভুল।
শত্রুর বন্ধুকে যাচাই না করেই শত্রুর তালিকায় লিপিবদ্ধ করবে,আবার শত্রুর শত্রুকে না জেনেই জিগড়ি দোস্ত বানিয়ে ছাড়বে। প্রভাবিত হবে প্রবৃত্তির তাড়নায়,সঙ্গদোষে কিংবা পরিস্থিতির কারণে অগ্রপশ্চাত বিবেচনা না করেই।
আবার যে জিনিসটি ভালো খারাপ নির্ণয়ের যন্ত্র,সেই বিবেকও মানুষ থেকে মানুষে ভেরী করে। নিজের বোনকে ধর্ষণের দায়ে ধর্ষকের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করতে মরিয়া বিবেকবান মানুষ নিজের ধর্ষক ভাইকে জেল-জরিমানা দিয়ে দায়মুক্ত করার জন্য দিনরাত খাটে। তখন কোথায় যায় তার বিবেক?বিচিত্র মানব প্রবৃত্তির স্রষ্টা আল্লাহ মানুষের এইসব গুণের কথা সবচাইতে ভালো জানেন।
তাই তিনি যুগে যুগে নবী-রাসূল পাঠাতেন তার একাত্ববাদ তথা পৃথিবীতে তার আইন প্রতিষ্ঠা করার জন্য। আল্লাহ বলেন,
“প্রত্যেক জাতির জন্য আমি নবী প্রেরণ করেছি। অতএব যখন তাদের মধ্যে নবী এসেছে ন্যায় বিচারের সাথে তাদের মধ্যে মীমাংসা হয়েছে,আর তাদের প্রতি কোনো অন্যায় করা হয়নি। ”[সূরা ইউনুস-৪৭]
রাসূল(স) বলেন,
“বনী-ইসরাইলদের শাসন করতেন নবীগণ। একজন নবীর মৃত্যুর পরে আরেকজন নবী তাদের শাসন করতেন।
আমিই শেষ নবী। আমার পর কোনো নবী আসবেন না। আসবেন অসংখ্য খলীফা”। সাহাবীরা জ্ঞিগেসা করলেন,তাদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব কী?রাসূল(স) বললেন,“তাদের প্রতি তোমরা আনুগত্বের শপথ(বাইয়াত)পূরণ করো। তাদেরকে তাদের অধিকার দাও এবং আল্লাহ অবশ্যই তাদেরকে তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞেসাবাদ করবেন”।
[বুখারী,মুসলিম]।
রাসূল(স) এর চল্লিশোর্ধ জীবনের প্রথম ১৩ বছর তিনি তাওহীদ তথা এই শাসন ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা,আল-কুরআনের বাণী বাস্তবায়ন এবং ইসলামিক জীবন ব্যবস্থা পৃথিবীর বুকে আনার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেন। প্রাথমিক সঙ্গী ছিলো কেবল ৪০ জন ঈমানদার সাহাবী। মক্কার আশেপাশের বেশ কিছু গোত্রের সামরিক এবং প্রভাবশালী ব্যাক্তিগণের নুসরাহ(সহায়তা) কামনা করেন। সাড়া দেন মদীনার আনসার বাহিনীর প্রধান,খাযরাজ গোত্রের প্রভাবশালী নেতা সা’দ ইবনে মুয়াজ(রা)।
আকাবার প্রথম ও দ্বিতীয় বাইয়াতের পরে মদীনায় প্রতিষ্ঠা হলো ইসলাম,বাস্তবায়ন হলো মহান আল্লাহর আইনের। সুদ বিলুপ্ত হলো,যাকাত আসলো,হিজাবের নির্দেশ আসলো,মদ হারাম করা হলো,জিহাদের সূচনা হলো,সকল অনৈসলামিক বস্তু বাতিল বলে গণ্য হলো। ইসলামের শাসনের সুবাতাস ছড়িয়ে পড়লো আরব উপত্যকায়। বদর,উহুদ আর খন্দকের পরে মক্কা জয় হলো। শেষ হলো রাসূল(স) এর উপর প্রেরিত দায়িত্ব।
দ্বীন-ই-ইসলাম প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব। আল্লাহ নাযিল করলেন,
““আজ আমি তোমাদের জন্য আমার দ্বীন পরিপূর্ণ করলাম, তোমাদের উপর আমার নিয়ামত সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে আমার দ্বীন হিসাবে মনোনীত করলাম”। [মায়িদা-০৩]” ............চলবে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।