ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা আব্দুল জলিল মনে করেন, দলটির নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভায় রদবদল আনা দরকার।
রোববার ঢাকায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জলিল বলেন, "মন্ত্রিসভায় পরিবর্তনের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে একটা নড়াচড়া হওয়ার দরকার। "
রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে 'মিট দি রিপোর্টার' অনুষ্ঠানে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিলো- মন্ত্রিসভায় রদবদল প্রয়োজন কি না।
আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল আওয়ামী লীগের বিগত মন্ত্রিসভায় বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।
তবে বর্তমান মন্ত্রিসভায় তোফায়েল আহমেদ, আব্দুর রাজ্জাক, আমীর হোসেন আমু, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মতো স্থান পাননি নওগাঁ-৫ আসনের এই সাংসদও।
মন্ত্রিসভা প্রসঙ্গে মূল্যায়ন জানতে চাওয়া হলে এই নেতা বলেন, "আমাদের দলে অনেক অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ রয়েছেন- এটা ভেবে এবার প্রধানমন্ত্রী দলের নতুন মুখ ও প্রজন্মকে স্থান দিয়েছেন।
"গতবারের মন্ত্রিসভার ভারিত্ব ছিল, এবার তা হয়নি। এটা কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে। কারণ, বর্তমান মন্ত্রিসভায় থাকা অনেককে জনগণ ভালভাবে চেনে না।
জনগণের সঙ্গে তাদের তেমন সম্পৃক্ততাও নেই। "- সম্পূর্ন একমত।
দুই বছরে সরকারের ব্যর্থতা-সফলতা প্রসঙ্গে জলিল বলেন, "সরকার ব্যর্থ হয়েছে- তা বলবো না। তবে পুরোপুরি সফলতার অভাব রয়েছে। কৃষি, শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের সচল পদচারণা রয়েছে।
বিদ্যুৎ-গ্যাসের সমস্যা এখনো সমাধান করতে পারেনি। তবে এ সঙ্কট কাটিয়ে তোলার চেষ্টা করছে সরকার। "
'ধমকে বাজার নিয়ন্ত্রণ হয় না'
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে সরাসরি বাণিজ্যমন্ত্রীকে না দুষলেও বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছেন বলে মন্তব্য এই সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রীর।
তিনি বলেন, "বাণিজ্যমন্ত্রীকে নিয়ে আমি কোনো সমালোচনা করবো না। তবে তিনি বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি।
ব্যবসায়ীদের ধমক দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। তাদের আস্থা অর্জন করতে হবে। ধমক দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না। "
বাজার নিয়ন্ত্রণে ছোট-বড় সব ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করা দরকার বলেও মনে করেন জলিল।
তিনি বলেন, "শুধু এফবিসিসিআই'র সঙ্গে নয়।
ছোট-বড় সব ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। আমি ও তোফায়েল আহমেদ যখন বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলাম- তখন তাই করেছি।
"ছোট ছোট ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের সহযোগিতা ও পরামর্শ চাইতাম। সাংবাদিকদেরও পরামর্শ নিতাম। এখন তা না করে ধমক দেওয়া হচ্ছে।
"- সুন্দর কথা।
ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক নেতৃত্ব দখল করে নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য। - সঠিক কথা।
সংসদকে নিষ্প্রাণ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, "সংসদে প্রাণ সঞ্চার করতে হলে সংসদ সদস্যদের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা দিতে হবে। তাদের কথা বলার অধিকার দিতে হবে।
"-সঠিক কথা।
"এ প্রসঙ্গে আগে একবার কথা বলে সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছি। আবার বলতে গেলে দল থেকে বের হতে হবে," বলেন জলিল।
জরুরি অবস্থা জারির পর অনেক রাজনীতিকের মতো জলিলকেও গ্রেপ্তার করা হয়। ২০০৭ সালের ২৮ মে গ্রেপ্তারের পর ২০০৮ সালের ২ মার্চ প্যারোলে মুক্তি পান তিনি।
গ্রেপ্তার অবস্থায় ডিজিএফআই তার ওপর নির্যাতন চালিয়েছে অভিযোগ করে সংসদে বেশ কয়েকবার বক্তব্য রাখেন জলিল।
রোববার অনুষ্ঠান শুরুতেই বিব্রতকর কোনো প্রশ্ন না করতে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ করে তিনি বলেন, "লন্ডনে আমার একটি বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপন করে দলের ভেতরে ও বাইরে আমার রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা হয়েছে। সে কারণে অভিমান, ক্ষোভ বা দুঃখ থেকেই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলি না। "
২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে লন্ডন সফরে এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা সম্পর্কে 'আক্রমণাত্মক বক্তব্য' দিয়ে ব্যাপক আলোচিত হন জলিল। সে সময় তিনি বলেছিলেন, [সাধারণ সম্পাদক] পদ ধরে রাখতে ওই সময় দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার সঙ্গে বিরোধে না জড়ানো তার ভুল হয়েছিল।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয় এবং ক্ষমতারোহণের পেছনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে সমঝোতা ছিলো বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি।
[কৃতজ্ঞতাঃ বিডিনিউজ২৪.কম]
জনাব জলিল সাহেবের কথোপকোথনে আমাদের মনের কথাই প্রতিফলিত হয়েছে। শুধুমাত্র পিএইচডি ড্রিগ্রীধারীকে মন্ত্রীত্ব দিলেই যে সফল হবে না, এখন স্পষ্ট। তাছাড়া ২/১ জন সারাসরি ভোটেও নির্বাচিত নন। কাজেই তারা জনগনের কথা কিভাবে ভাববেন? তাছাড়া একজন মন্ত্রী যখন ধমকের সুরে কথা বলেন তখন মনে হয় ...এর প্রতিবাদ করি।
আমার মতে শিক্ষা মন্ত্রী আর কৃষিমন্ত্রী ছাড়া কোনো মন্ত্রীর তেমন সাফল্য নেই। বিশেষ করে ব্যার্থতার দিক থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ১ নম্বরে, বাণিজ্য মন্ত্রী ২ নম্বরে আর পররাষ্ট্র মন্ত্রীকেও দূর্বল মনে হয়, সোমালিয়াতে আমাদের নাবিকদেরকে উদ্ধারের বিষয়ে এখনো তেমন কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না.....
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।