salehin.arshady@gmail.com
আজকে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি। বাংলা ভাষার জন্য আজকের এই দিনে শহীদ হয়েছিলেন অনেকে। পাঠ্য বইয়ের মাধ্যমে আমরা কয়েকজন শহীদেরই নাম জানি। এমন হয়ত অনেক নাম না জানা মানুষের চুড়ান্ত ত্যাগের বিনিময়ে সেদিন এসেছিল আমার ভাষার স্বাধীনতা।
যাই হোক এই সবই মোটামুটি সবার জানা।
৫৮ বছর আগের ইতিহাস।
আমি তো এই যুগের ছেলে। ইতিহাসের বুলি কপচানোর টাইম নাই।
প্রতিবাদের একুশ এখন আমার কাছে একটা উত্সব।
শোকের একুশ এখন আমার কাছে আনন্দের।
প্লিজ আপনারা কেউ ভুল বুঝবেন না। দেশদ্রোহী রাজাকার ভাদাকার বলে আগেই গালি দিয়েন না। একুশ কেন আমার জন্য এক আনন্দের উত্সব সেটা এক্সপ্লেইন করছি।
১. ডিসেম্বরের প্রথম দিকে নতুন বছরের ক্যালেন্ডারটা হাতে পাওয়া মাত্রই আমি যে কাজটি করি তা হল বৃহস্পতি শুক্র শনিবার মিলিয়ে ছুটির হিসাব গুলো করে ফেলি। ২১শে ফেব্রুয়ারির আগে পিছে বৃহস্পতি বা রবিবার থাকলে আমাকে আর পায় কে।
এত্ত খুশি এত্ত খুশি লাগে যে কি বলব। মনে মনে বলি ভাগ্যিস ব্যাটার মরসিল। না মরলে কি আর এমন পাংখা একটা ছুটি পাইতাম? এক দুবার নফল নামাজ আদায় করার চিন্তা টা যে মাথায় আসে না তা কিন্তু না। আসে ঠিকই তবে সময় কই? ভুল বুঝবেন না। শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনার জন্য কিন্তু নামাজের নিয়ত আসে না মনে, দোয়া টা করি প্রতি বছর যেন এমন সেটিং করেই ২১শের ছুটি টা পাই।
২. পহেলা ফেব্রুয়ারি। শোকের মাস শুরু। খবরের কাগজের লেফট কলাম চলে গেছে ৫৮সালের এই দিনে- পড়তে শেখার পর আমি কোনদিন এই কলাম পড়ি নাই। চ্যানেলগুলোর কোনায় শোভা পায় শহীদ মিনার। নিউজ প্রেজেন্টার রা পড়ে আসে কালো সেক্সি শাড়ি।
দেখতে ভালই লাগে।
৩. ২১শের দ্বিতীয় প্রহর- প্রথম প্রহরের মালিক তো বালের সরকার, স্পিকার আর বিরোধী দল। আমার মত ভন্ডদের ২১ শুরু হয় দ্বিতীর প্রহর থেকে। ধস্তাধস্তি আর কক ফাইটে যারা ভাল তারাই এখানে আনন্দ পায় বেশি। তর মায়রে বাপ আমি সবার আগে শ্রদ্ধা দিমু।
১০টাকার ফুল ৫০টাকা দিয়া কিনছি কি বাল ফালাইতে?
আর যে বার শরীরে তেল কম থাকে সেবার টিভিতে নেতা নেত্রীদের ফুল দেয়া রত ছবি তোলার জন্য মারামারি এমন কি গালাগালি দেখতে ভালই লাগে। ব্যাপক বিনোদন মামা। না দেখে থাকলে মিস।
৪. আহ, একুশের মেলা- বইমেলার কথা তো বেমালুম ভুলে গেলাম। স্যরি বস, এইবার যাই নাই তো তাই মিসটেক হয়ে গেছে।
আমার অসম্ভব প্রিয় একটা মেলা। তারুন্যের উচ্ছাস, কিচির মিচির, বাঁধ ভাঙা স্রোত। একসাথে কত বই। নতুন মলাটের মন আনচান করে দেয়া গন্ধ.... সব বুলসিট। আজকাল মানুষ বই কিনে? এত দাম দিয়ে? আমাকে তো আর পাগলা কুত্তা কামড়ায় নাই।
আমি যাই তরুনী দেখতে। একসাথে এত হাই ক্লাস মাল আর কোথাও দেখা যাবে না। আমাকে খারাপ ভাববেন না প্লিজ। আমি খুব ভদ্র ছেলে। মেয়েদের দিকে তাকাই ঠিকই কিন্তু দেখি না।
আর প্রকৃতির সৌন্দর্য তো কারো পেটেন্টেড না। আমার ও অধিকার আছে। মেলায় ন্যাকা স্বরে বাংলা কবিতা আবৃতিকারিকে ঘুম পাড়ানোর অপচেষ্টার শাস্তি স্বরুপ বাপ মা তুলে গালি দেয়া টাও আমার অনেক প্রিয়।
মেলায় আমি অনেকবার যাই। জিএফ কে নিয়ে, পাড়ার বন্ধু, স্কুলের ফেরেন্ড ইউনি ফেরেন্ড... অনেকবার।
৫. জিএফ এর সাথে শহীদ মিনারের আলো আধাঁরিতে বসে ইটিস পিটিস করতে পারছি না মরার এই একুশের জন্য। সারা বছর রাস্তার এতিম নেড়ি কুত্তার মত ফালায়া রাখে আর ২১ আসলেই থিনার আর রং নিয়া বইসা যায়। গান্জা টানে আর আল্পনা আঁকে। য্ত্তসব। দুদিন পরেই পাড়ায়া পাড়ায়া এগুলার ছাল তুইলা ফালামু, থুথু, বাদামের খোসা আর পানের পিক দিয়া রাঙামু এই চত্তর।
৬. গুগল ইমেজ থেকে শহীদ মিনারের একটা পাংখা ছবি নামিয়ে ফেইসবুকে আপ দিব ভাবছিলাম। কিন্তু বালের নেটের এমুন স্পিড। রাগে গা থরথর করে কাঁপতেসে। ঐদিকে সবাই সুন্দর সুন্দর পিক আপ করে ট্যাগ ও করে দিল। বাল ফালাইন্না পোলাপান।
আর কাম খুঁইজা পায় না। নটি আইসা ভইরা গেল বাল। আবার চুতিয়া গুলা পিক গুলায় আবার রসের কমেন্ট ও করতাসে। শুভ শহীদ দিবস। ওরে হারামজাদা শহীদ দিবস শুভ হয় কেমনে?
শালার দিন টাই কুফা মারা।
খাড়ার উপর কত্ত গুলা টাকা বাইর হইয়া গেল। ২১ উপলক্ষে জিএফ রে সাদা শাড়ি লাল পাড়ের শাড়ি গিফট করতে হইল। একটা ফুল দিলে নাকি ম্যাডামের জাত চইলা যাইব, তাই ৫গুন বেশী দাম দিয়া এক তোড়া গোলাপ কিনা দিলাম। হারামি ফুল ওয়ালারা অফ চান্সে কোপ মারতাসে।
হুদাই অনেক আজাইড়া প্যাচাল পারলাম।
একুশের একটাই চেতনা আছে আমার কাছে। শো অফ করা। এই যে দেখেন না ২১শের চেতনা নিয়ে ভাব মারতে একটা পোস্ট লিখা ফেললাম। ফেরেন্ড রা না পড়েই লাইক দিয়ে যাবে। এর মধ্যে বেশীর ভাগের স্ক্রিনে তো নোট টা আসবেই না।
কারন তাদের পিসিতে বাংলা লেখা দূরে থাক পড়া পর্যন্ত যায় না।
[ঘুম আসতেসে না, তাই একটু গুতাগুতি করলাম। বাংলায় বুলি কপচাইতেসি কিন্তু আমার কর্ণকুহরে শীলার জাওয়ানি মাদল বাজাইতেসে। ]
পরিশেষে,
শুভ একুশে বন্ধুগন।
কালকের ছুটি টা সবার আনন্দময় কাটুক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।