আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নদীর বুকে এখন ফসলের খেতঃ তার পরেও হাচিনার ভারতকে বিনা ফিতে নৌ-ট্রানজিট

আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ
পঞ্চগড় গোবরা নদী, তেঁতুলিয়ার ডাঙ্গাপাড়া এলাকা থেকে তোলা ‘নদী হামার জীবন, নদী হামার মরণ। দেখেন, নদী কেমন খাঁ খাঁ করছে। নদীর সব শেষ হইছে। নদী মরে গেছে। ওই তানে হামরাও শেষ হইছি, মরে যাবার ধইরছি।

’ দেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের করতোয়া নদীর পাড়ে তুলারডাঙ্গার পেশাদার জেলে নুরুল ইসলাম (৬৫) করতোয়া নদীর বর্তমান অবস্থা এভাবেই তুলে ধরেন। তিনি ৪০ বছর ধরে করতোয়া নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। মাছ বিক্রি করেই সংসার চালাচ্ছেন। নদীর সঙ্গে তাঁর জীবন মিশে আছে। তবে এখন যেন ঘোর দুর্দিন নেমে এসেছে।

নুরুল ইসলাম বলেন, ৩০-৪০ বছর আগে করতোয়া ছিল জীবন্ত এক নদী। লোকজনের পারাপারের জন্য নদীতে নৌকা ছিল। নদীর দুই পাড়ে ছিল বিশাল শিমুল, শাল, সেগুনসহ নানা প্রজাতির গাছ। বহু জেলে নিত্যদিন নদীতে মাছ ধরতেন। দাড়িকানা, পুঁটি, টেংরা, পাবদা, শোল, বোয়াল, আইড়, জিওলসহ নানা জাতের মাছের প্রাচুর্য ছিল।

মাছ বিক্রি করে সংসার চালাতে তেমন কষ্ট হয়নি তাঁদের। তবে এখন অবস্থা আগের মতো নেই। নদীর পানি কমেছে, সঙ্গে নদীর মাছ। জেলেদের অনেকে জাল ছেড়ে ভ্যান চালাতে শুরু করেছেন। তেঁতুলিয়ার তীরনইহাট ইউনিয়নের তীরনই গ্রামের নাছির উদ্দিন (৪৩) আঙুল তুলে দেখিয়ে বলেন, ‘তীরনই নদীতে মোরা মাছ ধরে অনেক রোজগার করতাম।

জমি আবাদ করতাম ওই নদীর পানি দিয়ে। ছোটবেলায় নদীর এপার থেকে ওপারে যেতে ভয় লাগত। এখন নদীর ওপারেই আবাদ করি। নদী মরে গেছে অনেক আগেই। ’ বাংলাবান্ধা্রথেকে পঞ্চগড় যাওয়ার পথে এমন অনেক মরা নদী চোখে পড়ে।

সড়কের ওপর ব্রিজ দেখেই বোঝা যায় এখানে একদিন নদী ছিল। গোটা নদীতে চলছে আবাদ। নদী মিশে গেছে ফসলি জমির সঙ্গে। তেঁতুলিয়ার তীরনই ইউনিয়নের রণচণ্ডী নদী, ডাঙ্গাপাড়ার গোবরা নদী, আজিজ নগরের বেরং নদী, ভজনপুরের করতোয়া ও ভেরসা নদী, লালগজের ডাহুক নদীর অবস্থা এ রকমই। তেঁতুলিয়ার পাশে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত দিয়ে বয়ে যাওয়া মহানন্দা নাব্যতা হারিয়ে ফেলেছে।

পঞ্চগড় জেলা সদরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া করতোয়ার বুক জুড়ে এখন ধানখেত। পানি উন্নয়ন বোর্ড পরিচালিত এক জরিপে জানা গেছে, পঞ্চগড় জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত করতোয়া, মহানন্দা, চাওয়াই, করম, টাঙ্গন, পাথরাজ, তালমা, পাঙ্গা, পাম, ভেরসা, ডাহুক, গোবরা, তীরনই, রণচণ্ডী, বেরং, ছোট যমুনা, ছেতনাই, পেটকি, ঘোড়ামারা, সুঁই ও নাগর নদীর বুকে কৃষকেরা বোরো আবাদ করেছেন। জেলার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে কৃষির পাশাপাশি জীববৈচিত্র্যের ওপর। সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে নদীগুলোর এ করুণ দশার কারণ জানা যায়।

তাঁরা বলেন, ছোট-বড় সব নদীই ভারত থেকে এসেছে। ভারত এসব নদীতে হয় বাঁধ দিয়েছে, না হয় স্লুইসগেট তৈরি করেছে। যেগুলোতে বাঁধ দিয়েছে, সেসব নদীতে আর পানি আসে না। যেগুলোর ওপর স্লুইসগেট আছে, সেগুলো দিয়ে পানি নামে ভারতের মর্জিমতো। এলাকার মানুষ বলেন, মাটির নিচের পানি পঞ্চগড় জেলার সেচের একমাত্র অবলম্বন।

সেই ভূগর্ভস্থ পানি নিচে নেমে যাওয়ার কারণে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, জেলার তেঁতুলিয়া সীমান্তের বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টের পশ্চিম-উত্তর কোণে মহানন্দা নদীর ওপর বিশাল বাঁধ নির্মাণ করেছে ভারত। ১৯৮৬ সালে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ‘ফুলবাড়ী ব্যারাজ’ নামে পরিচিত ওই ব্যারাজ নির্মাণের পর থেকে জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে সংযোগ খালের সাহায্যে নদী থেকে পানি পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার রাজ্যে নেওয়া হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী রবীন্দ্র চন্দ্র সোম প্রথম আলোকে বলেন, উজানে বাঁধ নির্মাণ করার ফলে পঞ্চগড় জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলো পানিশূন্য হয়ে পড়েছে।

এসব নদ-নদী ড্রেজিং করে বাঁধ এবং স্লুইসগেট নির্মাণ করে পানির সঠিক ব্যবস্থাপনা করলে কৃষিক্ষেত্রে সেচসুবিধা নিশ্চিত করা যেতে পারে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিজয়কুমার চ্যাটার্জি বলেন, টাঙ্গন নদীতে স্লুইসগেট এবং জলাধার নির্মাণ করে বিপুল পরিমাণ জমিতে আবাদ করা হচ্ছে। ভেরসা নদীতে স্লুইসগেট নির্মাণ করে বোরো জমিতে সেচের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তালমা নদীতে রাবার ড্যাম নির্মাণ করা সেচের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলার অন্যান্য নদীতেও পরিকল্পিতভাবে জলাধার নির্মাণ করা হলে স্থানীয় কৃষকেরা লাভবান হবেন।

পঞ্চগড় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মির্জা আবদুল লতিফ বলেন, নদীর উৎসমুখে বাঁধ নির্মাণের ফলে পঞ্চগড়ের নদীগুলো শুকিয়ে গেছে। জীববৈচিত্র্যের ওপর এর প্রভাব পড়েছে। মাছের ও পাখির বিচরণক্ষেত্র কমে যাচ্ছে। মাছ বংশ বিস্তার করতে পারছে না। নদীর বুকে আবাদ করা হচ্ছে বোরোর।

এসব খেতে কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। কীটনাশকের প্রভাবে মাছের প্রজনন কমে যাচ্ছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মো. মোকাররম হোসেন বলেন, নদীতে পানির প্রবাহ না থাকায় প্রতিবছর পানির স্তর দুই থেকে তিন ফুট নেমে যাচ্ছে। জেলার বেশ কিছু নলকূপে মার্চ থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে তাঁরা এ তথ্য পেয়েছেন। পঞ্চগড় জেলা পরিবেশ পরিষদের সভাপতি ও সরকারি মহিলা কলেজের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের প্রধান তৌহিদুল বারী বলেন, নদীগুলো মরা।

নদীকেন্দ্রিক কৃষি, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সবই এখন হুমকির মুখে। রিপোর্টারঃ রফিকুল ইসলাম ও শহীদুল ইসলাম | তারিখ: ১৬-০২-২০১১ Click This Link *************************** সেই ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বর মাসে হাসিনা ভারতের প্রধনামন্ত্রী দেব গৌড়ার সাথে মহাআনন্দে বিনা গ্যারান্টি ক্লজে ৩০ বছর মেয়াদী চুক্তি করেছিলেন। ফলাফল কি? শতাধিক শাখা নদীতো মরেই গেছে পদ্মাও শুস্ক মৌসুমে ধুধু বালুচর। অথচ আমার মুরুব্বীদের মুখে শুনেছি ৭৪ সালের আগে গ্রীস্ম কালেও পদ্মার ভয়াবহ গর্জন। বাংলাদেশের ৫৪ টি অভিন্ন নদ-নদীর পানির ন্যায্য প্রাপ্তি নিয়ে কোন চুক্তি না করেই ভারতকে এক তরফা নৌ-ট্রানজিট দিয়ে দেওয়া হয়েছে তাও আবার বিনা লেভীতে।

তাই বলি যে প্রধান নদী পদ্মায়ই যদি এই রকম প্রতারণামূলক চুক্তি হয় বাকী ৫৩টি অভিন্ন নদ-নদী নিয়ে কি হবে? আগামী ১০০ বছরেও কি ভারতের সাথে আমরা ৫৪ নদ-নদী হতে আমাদের ন্যায্য হিস্যার পানি পাব কি? এই বিবেচনা করেই বিগত জোট সরকার ২০০১-০৬ সালে ভারতের প্রবল চাপ সত্ত্বেও ভারতের সাথে নতুন ভূমি-রেল, সমুদ্র বন্দর চুক্তিতো দূর নতুন নৌ-ট্রানজিট চুক্তিও করেনি। বরং ভারতের সাথে বার্গেনিং করে আসছিল যে ১) ৫৪টি অভিন্ন নদ-নদীর সুষ্ঠ পানি বন্টনে স্থায়ী চুক্তি, ২) ভূমি ও সমুদ্র সীমা নিষ্পত্তি, ৩) বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে বাংলাদেশের সব ধরণের পণ্যের ভারতে বিনা শুল্কে অবাধ প্রবেশাধিকার দেওয়ার পরেও সার্ক কানেকটিভিটি সহ চীনকেও ভারতের উপর দিয়ে ট্রানজিট দিলেই কেবল ভারত এই সুবিধা পাবে। কিন্তু ভারত নাছোড় বান্দা। কারণ তারাতো ভালভাবেই জানে যে আম্লীগ আমাদের ক্রীতদাস যাই চাইব তাই দিবে। সে জন্য জোট সরকারের দাবী দাওয়ায় সে তোয়াক্কাতো করেই নি বরং জোট সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে ১/১১ ঘটিয়ে এই মহাবালজোট সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছে।

প্রতিদান স্বরুপ দেশবাসী ও সংসদকে না জানিয়েই নৌ-ট্রানজিট, সড়ক-রেল ও সমুদ্র বন্দর ব্যাবহারে ভারতকে এক তরফা সুবিধা দিয়েছে। অথচ বাংলাদেশের কোন লাভই নেই। আর মুখোরোচক বুলি আউড়ানো হয়েছিল বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর হয়ে যাবে। বাংলাদেশকে এক সময় বলা হত নদী-মাতৃক দেশ ঠিক যেমন সোনালী আশ পাটের দেশ, অথচ এই দুটিকেই আম্লীগের ভারতীয় তাবেদারী ধ্বংস করে দিয়েছে। অথচ তথাকথিত সুশীল লেখকরা এ নিয়ে কোন কথাই বলে না।

তারা ধর্মনিরপেক্ষতা, মুষ্টিমেয় নাস্তিকদের চেতনাকে ৯০% মুসলমান জনগণের উপর কিভাবে চাপানো যায়, কিভাবে বালের যুদ্ধাপরাধীদের বাদ দিয়ে বিএনপি-জামাতকে ঘায়েল করা যায় সে নিয়ে মশগুল। তাই সময় এসেছে বিএনপি-জামাত সহ সমমনা দলগুলোকে ব্যাপক জনসংযোগ চালিয়ে যেতে হবে। র্দূভাগ্যজনক ভাবে হলেও সত্য বাংলাদেশের বেশীর ভাগ সময়ে ক্ষমতায় থেকেও সার্বভৌম বাংলাদেশের বিষয়ে প্রচার প্রচারণায় বিএনপি প্রচন্ড দূর্বল। স্রেফ বিরোধী দলে গেলেই সরব হয়ে উঠে। একমাত্র যথাযথ প্রচার প্রচারণা এবং যথা সম্ভব র্দূনীতি মূক্ত থাকলেই আওয়ামী-বাকশালী ভারতীয় তাবেদারদের ক্ষমতায় আসা রুখা সম্ভব।

নতুবা বাংলাদেশ ভবিষ্যতে সিকিমেরই পরিণতি ভোগ করবে।
 

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.