আজ আমার মন ভাল নেই
বিশ্বব্যাপী ক্রেতাস্বার্থ সংরক্ষণে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারগুলো যকন নিরলস কাজ করে যাচ্ছে, তখন আমাদের সরকার ব্যবসায়ীদের নিত্যনতুন প্রতরণার সুযোগ তৈরে করে দিচ্ছে। খাদ্য ও পণ্যের ভেজাল, ওজনে কারচুপি, কৃত্রিম পণ্য সংকট তৈরি করে মূল্যবৃদ্বি, প্রতারনামূলক বিজ্ঞাপন, হোটেল রেস্তোরায় অস্বাস্হ্যকর পরিবেশ, অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়ি ভাড়া বৃদ্বি এবং পানি, বিদু্ৎ, গ্যাস, টেলিফোন বিল দফায় দফায় বৃদ্বিসহ বাংলাদেশের বাজারে ক্ষতিকারক এবং প্রতারণাপূর্ণ পণ্যের নজিরবিহীন উপস্হিতি সভ্য দুনিয়ায় দেখা যায় না।
ফলের জুস প্রস্ততকারী কোম্পানিগুলো বিজ্ঞাপন করে ১০০ ভাগ তাজা ফলের রসে তৈরি। কিন্তু এই প্রচারণা ভূয়া ছারা আর কিছু নয়। যদি ১ কেজি আমের দাম ১০০ টাকা, সেখানে ২৫০ এমএল আমের রস প্রকৃয়াজাত করে কিভাবে ১০ টাকায় বিক্রিকরে? মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর কৃত্রিম রঙ, ফ্লেবার, ডিজাবিটিভ দিয়ে তৈরি হয় বাহারি জুস।
স্যাটেলাইট চ্যানেল এখন আমাদের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম, যা নিয়েও সম্প্রতি শুরু হয়েছে টানাপড়েন। চ্যানেল অপারেটর এবং ডিস্ট্রিবিউটর বিরোধেও মূল্য দিতে হচ্ছে ভোক্তাকে। অপরেটররা অভিযোগ করেছে, বাজেত কর বাড়ানোর কারণে ১০০ টাকায় তাদের ভ্যাট সহ সবকিছু মিলিয়ে দিতে হবে ৪৭ টাকা। এই জন্যে তারা ভাড়া দ্বিগুন বাড়াবে। কী অদ্ভুত যুক্তি? অপারেটরদের দাবি অনুযায়ী ১০০ টাকায় যদি ৪৭ টাকা করচ হয়, তাহলেও লাভা থাকে ৫৩ টাকা।
এর মধ্যে যদি খরচ ধরি ২৮ টাকা তারপরও লাভা থাকে ২৫ টাকা। অর্থাৎ শতকারা ২৫ টাকা লাভ। যে কোনো ব্যবসায় শতকারা ১০-১৫% লাভ থাকাই যথেষ্ট হেসেবে ধরা হয়। সেখানে ২৫% লাভেকও অপারেটররা স্বাভাবিক ধরতে পারছেনা। যদিও তাদের এই লাভের পরিমাণ আরো অনেক বেশি।
৪৭ টাকা নয় ১০০ টাকায় তাদের মোট খরচ ৩০-৩৫ টাকা। এখানেও সরকারের কোনো নজরদারি নেই। ভোক্তারা নিজেরাও সচেতন নয়।
গ্রমীণ ফোন ৯৭' সালে যখন প্রথম অপারেটর আসে, তার ঘোষনা দিয়েছিল টি টিএন্ডটি থেকে ফোন এলে তার জন্য কোনো ইনকামিং দিতে হবেনা। কিন্তু কিছুদিন না যেতেই তারা টিএন্ডটি ইনকামিং এর উপর চার্জ বসিয়ে দেয়।
অন্য ৩টি মোবাইল কোম্পানি সিটিসেল, একটেল এবং সেবা মান যেমন নিম্ন ছিল তেমনি বিলিংয়েও গরমিল অভিযোগ অনেক গ্রহকের মুখেই শোনা যায়। টিএন্ডটি এনালগ ফোনের মতো ভুতররে বিলের শিকার হচ্ছিলেন মোবাইল ব্যবহারকারীরা।
১৯৯৮ সানে হঠাৎ করে পিয়াজের দাম ৮ টাকা কেজি থেকে ৫৫ টাকা পর্যন্ত উঠেযায়। ১৯৭৪ সালে লবণের দাম বেড়ে সে সময়ই ৪০ টাকা হয়েছিলো প্রতি সের। এই দু-টি ঘটনার সময়ই দেশে পণ্য দুটির ঘাটতি ছিল এমন নয়।
বরং অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা মজুত করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে মুল্য বাড়িয়ে দিয়েছিল। একিভাবে ১৯৯৪ সালে সারের দাম বেড়েছিল অস্বাভাবিকভাবে। তখন সার চাইতে এসে ১৮জন কৃষক পুলিশের গুলিতে মারা গেছে। এ সব বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কিন্তু এতো বিপুল হারে না হলেও পণ্যদ্রবের দাম ব্যবসায়ীরা ক্রমশ বাড়িয়েই চলেছে।
কনজ্যুমারদের প্রতারণার হাত থেকে বাচানোর কনো ব্যবস্হাই এ দেশে চালু নেই। প্রচলিত কিছু আইনে ক্রেতা অধিকার সম্পর্কে যা বলা হয়েছে সেসবের বাস্তবায়ন নেই। বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইনে ব্যবসায়ের পণ্য ক্রয়ের প্রতি আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে কোনো পণ্যের সঙ্গে যদি কেউ পুরস্কার, পারিতেযিক
অনুরুপ অন্য কোনো বিনিময় দেয় (তা যে নামেই হোক টিকেট, কুপন) তবে সেই ব্যক্তির ৬ মাস পর্যন্ত সশ্রম কারাদন্ড, অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হবে। আইনে এও বলা হয়েছে, এসব বিজ্ঞাপন যে প্রচার করবে তারও একই শাস্তি হবে। কিন্তু জাতীয় প্রচারমাধ্যমে রেডিও, টিভিতে, ফ্রি পুরস্কার, উপহার, কুপন, টিকেট ইত্যাদি প্রলোভনকারী বিজ্ঞাপন প্রতিদিনই প্রচার কার হচ্ছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।