আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভালবাসার গল্প: র্পব-২(শেষ)

আকাশ ভরা গাঙচিল

এ সময়ের গায়ে চেনা অপেক্ষা ৩. যাকে ভালবাসতে পারব না তাকে বিয়ে করব কেন?তবে হ্যাঁ,যদি কখনো মনে হয় বিয়ে করা জরুরি সেদিন অবশ্যই বিয়ে করব। অনিন্দ্যকে সবাই খুব ভাল করেই জানে। অনিন্দ্যর কথাই শেষ কথা। এরপর আর কিছু বলার থাকতে পারে না। পরিবারের সবাই তাই চুপচাপ থেকেছে।

বিয়ের জন্য চাপ দেয়নি। সময় অনেক গড়িয়েছে। আজ বার্ধক্য অনিন্দ্যকে অন্যের উপর নির্ভরশীল হতে বাধ্য করেছে। তবুও অনিন্দ্য বৃদ্ধ বয়সে কারো মুখাপেক্ষী হতে চায়নি। তাতে সম্পর্ক নষ্ট হয়।

সে সম্পর্ক ভাল রাখতেই প্রিয় নাতি প্রতিককে ছেড়ে অনিন্দ্যর বৃদ্ধাশ্রমে থাকা। ৪. অনিন্দ্য বাবু,অপনার কাছে একজন ভদ্রমহিলা এসেছেন। অফিস রুমে বসে আছেন। আপনি কি দেখা করবেন?আহমেদ মুশফিকের কথায় উঠে বসে অনিন্দ্য। তখন সকাল ১০ টা।

শহরের কর্মব্যস্ততা শুরু হয়ে গেছে রোজকার দিনের মতো। অনিন্দ্য বঙ্কিমচন্দ্রের ‘কৃষ্ণ কান্তের উইল’ উপন্যাসের পাতা উলটাতে গিয়ে দেখে আহমেদ দাঁড়িয়ে আছে। চল,দেখি কে এসেছে,বলে উঠে দাঁড়ায় অনিন্দ্য। আহমেদ অনিন্দ্যকে অফিস রুম পর্যন্ত পৌছে দেয়। অফিস রুমের দরজায় দাঁড়িয়ে অনিন্দ্য দেখতে পায়, ষাটোর্ধ সাদা চুলের ,শুভ্র শাড়ি পড়া এক মহিলা বসে আছেন।

মুহুর্তে চমকে ওঠে অনিন্দ্য। এতো সেই চেনা দু চোখ। বয়সের ভারে ন্যুজ্ব। তবুও চিনতে অসুবিধা হয়নি। ক্যামন আছো অনিন্দ্য?শিউলীর এ কথায় অভিমানের ঢেউ ওঠে অনিন্দ্যর বুকে।

সে শান্ত ভাবে বলে,ভাল আছি। আর তুমি?দীর্ঘশ্বাস ফেলে শিউলী। অনিন্দ্যর চোখ এড়ায় না। সেই তো পরিচিত দীর্ঘশ্বাস। ক্লাস পরীক্ষায় খারাপ করলে যে ভাবে দীর্ঘশ্বাস ফেলতো শিউলী ঠিক সে রকম।

আমি আগামীকাল থেকে এ আশ্রমে উঠব। স্বামী মারা যাবার পর এক মাত্র মেয়ের কাছেই ছিলাম। কিন্তু এখন কিছুটা সময় সম্পূর্ণ নিজের মতো করে বেঁচে থাচতে চাই। তাই এখানে আসা। তোমার কোনো সমস্যা নেই তো? সমস্যা?সমস্যা কেন থাকবে?তবে একটা জিঙ্গাসা ছিল।

আজ এতো গুলো বছর শেষে কেনই বা তুমি আমার সামনে এলে। মানুষ যা চায় তা একদিন না একদিন পায়। তোমাকে পেলাম কোথায়?পেলাম যদি তবে এ কেমন পাওয়া?তোমরা সব পার শিউলী। শুধু আমরা অনিন্দ্যরা অপেক্ষা করেই বেঁচে থাকি। কিন্তু অনিন্দ্য কোনো কথা বলে না।

তার সব কথা যে অনেক আগেই ফুরিয়ে গেছে। অনিন্দ্য জানি না তোমাকে কতোটা কষ্ট দিয়েছি। কিন্তু আমি নিজেও কি কম কষ্ট পাই নি?আজ সে কথা বলে কিই বা লাভ?শেষ কটা দিন তোমার পাশাপাশি থেকে কাটিয়ে দিতে চাই অনিন্দ্য। তুমি কি সে সুযোগটা আমাকে দেবে? অনিন্দ্য কোনো কথা বলে না। সময় বয়ে চলে সমাপ্তির দিকে।

শুধু অপেক্ষা পরে থাকে অচেনা অভিমানে। ৫. পরদিন খুব ভোরে ওঠে অনিন্দ্য। অন্য সবার সাথে পার্কে হাঁটে। সময়মতো নাস্তা করে। ওষুধ খায়।

তারপর বারান্দায় রাখা ইজি চেয়ারে গিয়ে বসে। এখান থেকে মাযাকানন বৃদ্ধাশ্রমের মেইন গেট দেখা যায়। অনিন্দ্য অপেক্ষা করতে থাকে খুব প্রিয় আর খুব পরিচিত দুটি চোখ দেখার আশায়। ছবি: ইন্টারনেট থেকে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.