আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আড়িয়াল বিলের উপর বিমানবন্দর হোক, তবে...

সবুজের বুকে লাল, সেতো উড়বেই চিরকাল
উপরের ছবিটির ভদ্রলোক এবং তার পরিবারকে চেনেন? অদ্ভুত প্রশ্ন। ১০০ ভাগ লোক এক বাক্য বলবে অবশ্যই চিনি। শুধু এদেশে নয়। বিদেশেও অনেকেই চিনবেন। না চেনার কোন কারণ নেই।

দীর্ঘ সংগ্রামের পর ৯ মাসের রক্তক্ষয়ি মুক্তিযুদ্ধের ফলাফল আমাদের এই স্বাধীন বাংলাদেশ। যার নেতৃত্বে এই স্বাধীনতা অর্জন, তিনিই তো ছবিটির সেই মানুষটি। সাধারণ মানুষ, এই অসাধারণ মানুষটিকে এক বাক্যে চিনলেও, খুব মারাত্মক কুহকে ভুগছে, তারই পরিবারের সবচেয়ে কাছের একজন মানুষ। তার সন্দেহ বঙ্গবন্ধুকে সবাই ভুলতে বসেছে। যেন তিনি বাংলাদেশে একজন বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদের একজন।

তাই যে ভাবেই হোক তার নামকরণ করে তাকে বিলোপ হওয়া থেকে বাঁচাতেই হবে। কথাটা ঠিক নয়, তাই না? আপনার ধারণা সঠিক। বঙ্গবন্ধু এমন একটি নাম, যিনি স্বীয় কীর্তিতে মুর্তিমান। এই কথা তার কন্যাও যেমন জানেন, তেমনি আঃ লিগের নেতা কর্মী সমর্থক সবাই জানে। খুব ভালো করেই জানে।

তাহলে তার নামে নামকরণ নিয়ে এই অশ্বমেধযজ্ঞের কারণ কি? বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লিগের কোন অর্জন নেই। আতকে উঠলেন? ভাবছেন, এত জঘন্য মিথ্যাচার কি করে করা সম্ভব? ইতিহাস ঘাটুন। জনগণের পক্ষ্যে যে সব আন্দোলন, তার সবগুলি ছিল স্বাধীনত্তর। আর সেই ইমেজ বেচেই এখন পর্যন্ত খাচ্ছে আঃ লিগ। স্বাধীনতার পর ১৯৭২-১৯৭৫, ১৯৯৬-২০০১ এবং অধুনা ২০০৭ থেকে বর্তমান, এই তিনবার শাসনামলে কিভাবে জনগণের আশা আকাংখাকে পদদলিত করা হয়ছে, সে এক অন্ধ ছাড়া সবারই দেখার কথা।

আর বিরোধি দলে থাকার সময় তো আঃ লিগের রুপ আরও বিভৎস আর জঘন্য। যেহেতু দেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসে, তাই আওয়ামি লিগের রাজনীতি আবর্তিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ইমেজকে ঘিরেই। স্বাধীনতার পর হিমালয়সম জনপ্রিয়তার বিশালত্ব থেকে অনেকখানি ম্লান হয়েই বঙ্গবন্ধুকে বিদায় নিতে হয়েছে। সে সময়কার সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাস, লুটপাট, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এসব সাধারণ মানুষ ক্ষমা করে দিলেও কিন্ত ভোলেনি। আর সে জন্যই সেই হারানো ইমেজ পুনরুদ্ধারে চলছে বিভিন্ন স্থাপনায় বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের নামকরনের খেলা।

৯৬ এ টাকার উপর বঙ্গবন্ধুর ছবি ছাপিয়ে মানুষকে গেলানোর অপচেস্টা কিভাবে মাঠে মারা গিয়েছিল, সে সব আনলে বরং বঙ্গবন্ধুকে ছোটই করা হবে। তবে হাসিনা গং যে বিশাল একটা চপেটাঘাত খেয়েছিল, তাতে সন্দেহ নেই। তাই এবার ক্ষমতায় এসে নতুন ফন্দি। অনেকটা গাছের খেয়ে তলায় কুড়ানোর মত। নামকরনের সাথে সাথে লুটপাটকরনের এই সুবর্ন সুযোগ কেউই হারাতে রাজি নন।

হাজার নয়, লক্ষ নয়, এমনকি কোটিও নয়, কোটি কোটি টাকা নয় ছয় করার এই মহাপরিকল্পনা। কে নেই এই মহাপরিকল্পনায়? প্রধানমন্ত্রি, মন্ত্রিবর্গ, আমলা, ব্যাবসায়ি, প্রশাসন, সামরিক বাহিনী, মিডিয়া, বুদ্ধিজীবি, সুশিলসমাজ, জোটের শরিকদলগুলি এবং আওয়ামি লিগের উপর থেকে নীচ পর্যন্ত, সবাই পাবে। একটু কম আর বেশি, এই যা ! বিদ্যুৎ স্বাস্থ্য আইন শৃংখলা পররাস্ট্রনীতি সব চুলায় যাক। টাকা না থাকলেও, টাকার ব্যাবস্থার জন্য অর্থব অর্থমন্ত্রিকে দরকার হলে বিশ্ব চষে ফেলার লাইলেন্স দেয়া হবে। তবুও আড়িয়াল বিলে বন্ধবন্ধু বিমানবন্দর আর বঙ্গবন্ধু মেগা সিটির স্বপ্ন সফল হওয়া চাই।

এতগুলি টাকা, এত হারামখানেওয়ালা, এদের মুখের দিকে তাকিয়ে হলেও যে চাই ই চাই। কিন্তু বাধ সাধলো, যাদের জমি যাদের বিল, সেই আমজনতা। অবশ্য আওয়ামি লিগের শেয়ালের বাক্স থেকে ইতিমধ্যেই এই বিরোধীতার সাথে যুদ্ধাপরাধিদের বিচারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে হুক্কা হুক্কা শুরু হলেও হালে পানি পায়নি। তাই সুর বদলে এখন যত দোষ সব বি এন পি নেত্রির উপর দেয়া হচ্ছে। আরে খালেদার যদি এত শক্তিই থাকতো, তাহলে অনেক আগেই হাসিনা গদি ছেড়ে ভারতে আশ্রয় প্রার্থনা করতো।

যারা ভাবছেন, আমি প্রলাপ বকছি, তাদেরকে বলছি। আচ্ছা মেনে নিলাম ওখানে বিমানবন্দর হলে বাংলাদেশের চেহারা পালটে যাবে, বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রচন্ডভাবে শক্তিশালি হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। মানছেন তো, যে এই বিমানবন্দর করার উদ্দেশ্য বাংলাদেশের উন্নয়ন? ঠিক? আচ্ছা যদি নিখাদ দেশের কথা চিন্তা করেই এই বিমানবন্দর আর মেগাসিটি প্রতিষ্ঠা পরিকল্পনা করা হয়ে থাকে, তাহলে সংশয়বাদি বা বিরুদ্ধবাদিদের মুখে ছাই দেবার নিমিত্তে, সেই বিমানবন্দর কিংবা মেগাসিটির নামকরণের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু কিংবা তার পরিবার কিংবা আত্মীয়স্বজন কারো নামই যুক্ত করা যাবে না বলে রীতিমত আইন করা হোক। তাহলেই বোঝা যাবে গাছের খেয়ে তলায় কুড়ানোর এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.