........
সকালে বাটি থেকে বাহির হইয়া হাঁটিতে হাঁটিতে বড় রাস্তার পাশে আসিলাম । তারপর এদিক-ওদিক চাহিলাম কোন বাস পাইবার আশায় । তখনি দেখিতে পাইলাম যে আমার পাশের লোকটা সব ভুলিয়া কলেজে যাইতে থাকা ললনাদের দিকে চক্ষু ফাড়িয়া তাকাইয়া রহিয়াছে । তাহার এহেন নির্লজ্জ চাহনি অবলোকন করিয়া আমার মাথায় নীতির ডংকা বাজিয়া উঠিল । ভদ্রলোকটিকে......ভদ্র আর বলি কি করে......চরম ছোটলোকটিকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার নিমিত্তে মনে মনে পায়তারা কষিতে লাগিলাম ।
অবশেষে বাস আসিল । যাত্রীরা সব আগে উঠার অভিপ্রায়ে ঠেলাঠেলি করিয়া বাসে নিজেদের জন্য জায়গা করিয়া লইলেন । বাসে উঠার সময় যাত্রীরা যে সংগ্রাম করেন, তাহা দেখিয়া কোন কোন চিন্তাশীল ব্যাক্তির মনে মুরগীর খামারে ব্রুডারের আশেপাশে মুরগী ছানার সীমাবদ্ধ বিচরণের কথা মনে হইতে পারে । যাহাই হউক, একপর্যায়ে সকলেই বাস মাঝারে স্বীয় গাত্র সেধাইয়া দিতে সমর্থ হইলেন ।
তো যে কথা বলিতেছিলাম, ঐ দুষ্ট প্রকৃতির লোকটির নির্লজ্জ আচরণ আমার নিকট অতি বিরক্তিকর বলিয়া প্রতীয়মান হইতেছিল ।
কিন্তু আমি স্থির করিতে প্রিতেছিলাম না যে চলন্ত বাসে কি করিয়া এহেন নীতিভ্রষ্ট্র লোকের সহিত মোকাবেলা করিব......মনে মনে ঐ লোক্টিকে আচ্ছামট শিক্ষাদান করার জন্য আমার কড়া কথাগুলো মনে মনে সাজাইতে লাগিলাম । কিন্তু কিভাবে কি বলিলে তাহা ফলদায়ক হইবে তাহা ঠিকঠাক মাথায় আসিতেছিল না ।
এমতাবস্থায়, সাত-পাচ ভাবিতে ভাবিতে বিদ্যুৎ চমকের ন্যায় মাথায় যুক্তির লহর খেলিয়া গেল । মনে বক্তব্য তৈয়ার করিতে লাগিলাম- আজ যেইসব মেয়ে স্কুল কলেজে যায় কাল তো তারা কারো না কারো বউ হবে । আরেকজনের ভবিষ্যত বউয়ের দিকে এভাবে তাকিয়ে থাকা মোটেই ঠিক না, ইত্যাদি ইত্যাদি ।
এই সমস্ত বিয়াল্লিসশ-পয়ত্রিশ ভাবিয়া যখন ঠিক করিলাম ঐ নাদান লোকটাকে এইবার ঝাড়িব ঠিক তখনই বাস এক স্টপেজে আসিয়া থামিয়া গেল । এবং সাথে সাথে ওই কুলাঙ্গারটা বাস হইতে নামিয়া গেল ।
আমি তখন মনে মনে হায় হায় করিয়া উঠিলাম । এতবড় অন্যায়ের কি কোনোই প্রতিকার হইবেনা? দায়িত্বশীল ব্যাক্তিরা যদি এই সমস্ত অনাচারের বিরুদ্ধে রুখিয়া না দাঁড়ায় তবে কি করিয়া পথচারী নারী সমাজ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলিবে ? তাহাদের কি আজীবন পুরুষের বদনজর সহ্য করিয়া চলিতে হইবে?
এইসমস্ত ১৬৮-১৪০ ভাবিতে ভাবিতে আমার ব্রহ্ম তালু উত্তপ্ত হইয়া আসিল । আমি তৎক্ষণাৎ কোন একজনের ভবিষ্যৎ বউয়ের দিকে চাহিয়া মাথা ঠান্ডা করিয়া লইলাম ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।