ব্লগার অনুপস্থিত আছেন !! (এই ব্লগার বিশেষ কোন দল বা মতের অনুসারী নন..তাই ওনার পোস্টের কোন আগা মাথা নাই!! যখন যা ভাল লাগে তাই তিনি পোস্ট করেন। )
বিশ্বকাপের জন্য ১৫ সদস্যের দল ঘোষনা হয়েছে আজ তিনদিন পার হয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের অনেক ক্রিকেট বোদ্ধারাই অনেক আলোচনা সমালোচনা করেছেন। সবার কথায় ঘুরে ফিরে ছিল আশরাফুল, অলক বা মাশরাফির নাম। কিন্তু রকিবুলকে নিয়ে কারও মাথা ব্যথা আছে বলে মনে হলো না।
মাশরাফিকে নেয়া হয় নি ইনজুরির কারনে - মানলাম। অলককে নেয়া হয় নি দুবছর জাতীয় দলের বাইরে থাকার অজুহাতে + মাহমুদুল্লাহ, নাইমরা থাকতে দলে তার প্রয়োজন কম - তাও মানা গেল। আশরাফুলকে নেয়া হয়েছে আরও একটি সুযোগ (!) দেয়ার জন্য - কষ্ট করে হলেও মেনে নিলাম! কিন্তু রকিবুল ওয়ানডে দলে জায়গা পায় কি করে?
আসুন রকিবুলের পরিসংখ্যানটা দেখি...
Click This Link
এভারেজ ৩০ এর কাছাকাছি, ম্যচ খেলেছেন ৫০ এর মতো, কোন সেন্চুরী নেই, ৮ টা ফিফটি আছে, সর্বোচ্চ রান ৮৯। সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক জায়গা হচ্ছে স্ট্রাইক রেট, ৬০% !! ও আচ্ছা মনে রাখবেন, তিনি বাংলাদেশ দলের ৪ নম্বর ব্যটসম্যান! বোলিং করেন না। তবে তিনি ভাল ফিল্ডিং করে থাকেন।
৫০-৬০ বল খেলে প্রতি ম্যচে ২০- ৩০ রান করে, এভারেজ ৩০ এর কাছাকাছি রেখে, একজন (শুধুমাত্র ব্যটসম্যন হিসেবে) বাংলাদেশের বর্তমান দলে জায়গা করে নিতে পারেন কি? তাও আবার ৪ নং পজিশনে?
একজন দর্শক হিসেবে যতটুকু বুঝি, যে কোন দলের জন্য ৪ নং পজিশনটা গুরুত্বপূর্ণ। কারন এই পজিশনে ব্যটসম্যনকে ইনিংসের যে কোন সময়ে নামতে হতে পারে। এই ব্যটসম্যনকে হতে হয় অনেক ডাইনামিক। মিডল অর্ডাররা ওপেনারদের মত ইনিংসের শুরুতেও নামেন না, আবার লেট অর্ডারদের মতো শেষেও নামেন না। তাদের পরিস্থিতির সাথে মানাতে হয় খুব দ্রুত।
বাংলাদেশ দলে রকিবুল জায়গা পেয়েছিলেন আশরাফুলের ব্যর্থতায়। আসুন দেখি তিনি কি করেন! ওপেনাররা যদি তাড়াতাড়ি আউট হয়ে যায় তখন ইনিংসে একটা চাপ থাকে। তিনি মোটামুটি ৩০ টা বল খেলে ৪-৫ রান করেন, হয় এর মধ্যে আউট হয়ে যান নয়তো ৭০-৮০ বলে (কখনো কখনো ১০০ বলে!) একটা ফিফটি করেন এবং তারপর যখন তার উপর দায়িত্ব আসে ইনিংস ক্যরি অন করার, তিনি স্ট্রাইক রেট বাড়ানোর চেষ্টায় মারতে গিয়ে আউট হয়ে সাজ ঘরে ফেরেন এবং দলকে মোটামুটি একটা বড় ধরনের বিপদে ফেলে যান। তখন বলও থাকে কম, রানের চাহিদাও থাকে বেশি, ফলে পুরো ইনিংসটাই কলাপস করে। সে ব্যটিংয়ে নামার পর ২০ বল গেলেই আমি অপেক্ষায় থাকি কত তাড়াতাড়ি সে আউট হয় সেটা দেখার জন্য।
আশরাফুলের যুগে অন্তত বল নষ্ট হতো না।
আশরাফুলকে ১১ জনে খেলানো হলে আমরা ধরে নিতে পারি যে ১০ জনের দল নামানো হয়েছে! তিনি অন্তত দলের কোন ক্ষতি করেন না! (যদিও ক্যচ মিস করেন মাঝে মাঝে, রকিবুল সেই তুলনায় ভাল ফিল্ডার) কিন্তু রকিবুল রীতিমতো দলের জন্য একজন ক্ষতিকারক ব্যটসম্যন !
প্রশ্ন হচ্ছে ৪ নং পজিশনে কে খেলবে?
আমার মতে মুশফিককে এখানে আবার চেষ্টা করা যেতে পারে। তাছাড়া ওপেনিং এ তামিম, ইমরুল আর নাফিস এর পর জুনায়েদকেও ৪নং পজিশনে খেলানো যেতে পারে। মুশফিককে ৪ নং এ খেলানো হলে আরও একটা সুবিধা হবে ৬-৭-৮ নং এ মাহমুদুল্লাহ আর নাইম এর সাথে আরো একজন ব্যটসম্যন নামানো যেতে পারে। অলক এখানে প্রথম পছন্দ হতে পারত।
তাই আমি মনে করি রকিবুলের পরিবর্তে অলককে নেয়াটা সুবিবেচকের মত কাজ। এমনকি অভিজ্ঞতার বিচারেও যদি নেয়া হতো (আশরাফুলকে নেয়ার জন্য যেই যুক্তি দেয়া হয়েছে ! ) তাহলেও অলক এগিয়ে। পাশাপাশি বোলিং এও তিনি ভাল করেন। ফিল্ডিংয়েও ভাল।
দর্শক হিসেবে আমার দল....
১. তামিম
২. ইমরুল
৩. নাফীস
৪. মুশফিক
৫. সাকিব
৬. মাহমুদুল্লাহ
৭. অলক ( বদলি আশরাফুল/শুভ)
৮. নাইম (বদলি হিসেবে আশরাফুল/শুভকেও চেষ্টা করা যেতে পারে)
৯. রাজ্জাক
১০. রুবেল
১১. নাজমুল ( ভাল না করলে শফিউল অথবা শুভ, মাশরাফি ফিট থাকলে অবশ্যই প্রথম পছন্দ!)
১২. শুভ
(দুর্দান্ত ফিল্ডার + লেফট অফ স্পিন !! + কমিটমেন্ট )
১৩. আশরাফুল
(আমার দলে আশার ফুল আশরাফুলে জায়গা ৭ এর উপর হবে না !)
১৪. শফিউল (রিজার্ভ আক্রমনাত্নক পেসার !)
১৫. জুনায়েদ (রিজার্ভ ওপেনার নয়তো খুব প্রয়োজন হলে ৪ নং)
কিন্তু আফসোস, আমি তো নির্বাচক না, তাই রকিবুলই সই।
তবে তাকে ১১ জনের দলে নেয়া হবে আত্নঘাতি সিদ্ধান্ত। তার বদলে আশরাফুল/শুভকে ১১ জনের দলে নিয়ে লেট অর্ডারে খেলানো উচিৎ। বাংলাদেশ দলটা এখন মোটামুটি দাড়িয়ে গেছে, তাই আমরা অন্তত অপশন নিয়ে চিন্তা করতে পারছি!! আগে তো সেই সুযোগটাও ছিল না।
বাংলাদেশ দল যেমনই খেলুক, শুভ কামনা বাংলাদেশ দলে প্রতি।
আল্লাহ না করুক তারা ২য় পর্বে না যেতে পারলেও আফসোস থাকবে না যদি তারা কমিটমেন্ট দিয়ে ভাল খেলা উপহার দেয়।
দোয়া করি এবং আশা রাখি রকিবুল আমার ধারনাকে এই বিশ্বকাপে ভুল প্রমান করে দেবে !!
গুড লাক টাইগার্স!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।