বাংলাদেশে আসছেন লরেন্স লিফৎসুলজ : জিয়া বলেছিলেন পাকিস্তান ফেরত আর্মি অফিসারদের চাপ ছিলো তাহেরকে সরিয়ে ফেলার জন্যে। এছাড়া আর কোন বিকল্প ছিল না।
*************************************************************
লরেন্স লিফৎসুলজকে কোর্টে হাজিরের আহ্বান
০০ ইত্তেফাক রিপোর্ট
২১ জানুয়ারি ২০১১
সামরিক আদালতে দন্ডপ্রাপ্ত কর্ণেল (অব) আবু তাহেরের গোপন বিচারের বিষয়ে তথ্য দিতে ফার ইষ্টার্ন ইকনোমিক রিভিউয়ের দক্ষিণ এশীয় বিষয়ক তৎকালীন সংবাদদাতা মার্কিন সাংবাদিক লরেন্স লিফৎসুলজকে আদালতে হাজিরের আহবান জানিয়েছে হাইকোর্ট। আগামী ২৬ জানুয়ারির মধ্যে তাকে আদালতে হাজির হওয়ার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কর্নেল তাহেরের গোপন বিচারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের শুনানিকালে বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনকে নিয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
এর আগে ঢাকার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মহিবুল হক এবং ওই বিচারে দন্ডপ্রাপ্ত বিমান বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা কর্পোরাল আবদুল মজিদ আদালতে জবানবন্দি দেন।
লরেন্স লিফৎসুলজ বর্তমানে আমেরিকার ওয়াশিংটনে বসবাস করছেন। 'কর্ণেল তাহের : অসমাপ্ত বিপস্নব' এই শিরোনামে তিনি ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের ঘটনাবলী এবং ১৯৭৬ সালে কর্নেল তাহেরের গোপন বিচারের বিষয়ে একটি বই লেখে। বইটি ইংরেজি এবং বাংলা ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে। গোপন বিচারের সংবাদ সংগ্রহের একপর্যায়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে থেকে তাকে আটক করে জোরপূর্বক বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল এডভোকেট এম কে রহমান বলেন, 'ওই সময় লরেন্স লিফৎসুলজ তাহেরের বিচার পর্যবেক্ষণ করেন এবং এ নিয়ে তিনি একটি প্রামাণ্যচিত্র (ডকুমেন্টারি) তৈরি করেছেন। তাঁর বক্তব্য শোনা হলে অনেক অজানা তথ্য পাওয়া যাবে। ' এ পর্যায়ে আদালত লিফৎসুলজকে আদালতে হাজিরের আহবান জানান।
ওই বিচারে দণ্ডপ্রাপ্ত বিমান বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা কর্পোরাল আবদুল মজিদ জবানবন্দিতে বলেন, কর্নেল তাহেরকে ফাঁসি দিতেই সেদিন সাজানো মামলার আয়োজন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমান একজন সেক্টর কমান্ডার ছিলেন।
অথচ পরে তিনি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তির কারসাজিতে এ বিচার সম্পন্ন করেন। তিনি বলেন, ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার জন্য জিয়াউর রহমান এটা করেছেন। যারা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ছিল তাদের খুশি করার জন্য এটা করা হয়েছে। তাহেরের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য না দেয়ায় রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত বলে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়।
মহিবুল হক জানান, যে কোনো মামলার রায়ের পর প্রশাসকের কার্যালয়ে একটা কপি আসে, কিন্তু এ মামলার রায়ের কপি তিনি খুঁজে পাননি।
তিনি আরো উলেস্নখ করেন, যশোরে জেলা প্রশাসক (ডিসি) হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি দেখেছেন শের শাহের আমলের নথিও সেখানে রয়েছে। তিনি বলেন, বেসামরিক প্রশাসনকে না জানিয়ে এ মামলার কার্যক্রম চালানো হয়েছে। এটা আইনের বিচু্যতি।
এর আগে তাহেরের গোপন বিচার চলাকালে ঢাকার তৎকালীন ডিসি হিসাবে দায়িত্বপালনকারী এ এম এম শওকত আলী হাইকোর্টের নির্দেশে মঙ্গলবার আদালতে হাজির হয়ে জবানবন্দি দেন।
এদিকে অন্য এক মামলায় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ওই কোর্টে হাজির হলে আদালত তাকে জিজ্ঞাসা করে 'ডেমোক্রেসি এন্ড দ্যা চ্যালেঞ্জ অব ডেভেলপমেন্ট' শিরোনামে আপনি একটি গ্রন্থ লিখেছেন।
তার ৯৫ পৃষ্ঠায় উলেস্নখ রয়েছে জিয়া বলেছেন, পাকিস্তান ফেরত আর্মি অফিসারদের চাপ ছিলো তাহেরকে সরিয়ে ফেলার জন্যে। এছাড়া আর কোন বিকল্প ছিল না। এ তথ্য কি সঠিক? জবাবে মওদুদ বলেন, 'বইতে কি আছে এ মুহুর্তে বলতে পারব না। তবে বইতে যা লেখা আছে তা সঠিক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।