আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তাদের স্বপ্নপূরণ ও সমুদ্রে ঘর বাড়ি, বিমানবন্দর - নতুন সম্ভাবনা

শূন্য হৃদয়ে ডঙ্কা বাজে এ কিসের, জানো কি হে!
মফিজের বাড়ি ছিল জামালপুর। সেখান থেকে যমুনার ভাঙ্গণে সর্বস্ব হারিয়ে কুল কিনারা না পেয়ে গিয়েছিলেন রাজধানী শহর ঢাকায়। সেখানে কিছুদিন থাকার পর বুঝতে পারলেন এ শহর তার নয. এখানে থেকে জীবন চালানোর চেয়ে নদীর ধারে তীরে খেয়ে না খেয়ে বাস করাও শান্তি ও স্বস্তি বেশি। ....................স্ত্রী ও তিন ছেলেমেয়ে নিয়ে দুর্ভাবনার মাঝে তার কাছে নতুন সম্ভাবনা হিসেবে ধরা দিয়েছে সমুদ্রের ডাক। তিনি শুনেছেন সে ডাক. চলে গেছেন সমুদ্রের বুকে, সমুদ্রের অতি কাছে চর এলাকায়।

চরের বিস্তীর্ণ ভূমিতে আছে অনেক ঝুঁকি, জমি নিজের নয়, রাষ্ট্রের। তাতে কী. থাকার জায়গা হয়েছে. জীবনে তো মরতে একদিন হবেই, এখানে যদি হয় তাহলে সমস্যা নেই. এভাবেই কিছু দুঃখে আর খান্কি শান্তির সুখে কাটছে মফিজের সংসার। আয় অর্জন তেমন নেই। কিন্তু থাকার জায়গা যেখানে আছে সেখানে সংসার চলে যাচ্ছে এটা সেটা করে। -- এই মফিজের সংসার নয়, এরকম শত শত হাজার হাজার মানুষের সংসার গড়ে উঠেছে নদীর পাড়ে. সমুদ্রের কিনারে. চরের বুকে।

....................সীমিত ভূমি আর ছোট, নানা সীমাবদ্ধতার দেশে মানুষের ক্রমবর্ধমাণ চাপে একটু আশ্রয় ও ঘরের আশায় ছুটছে মানুষ দক্ষিণে, সমুদ্রের দিকে. সেখানে ঝুঁকির জীবন আছে, তবে আছে বেঁচে থাকার আনন্দও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমুদ্রের মুখে এবং কাছে যাওয়ার সময় চলে এসেছে। সরকারকেই এক সময় ভাবতে হবে সেখানে স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে. ....................শুনেছি মুন্সীগঞ্জের আড়িয়ল বিলে বিমানবন্দর করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। যেখানে নতুন এয়ারপোর্টটি নির্মিত হবে সেটি একটি বড় জলাভূমি। স্থানটি বন্যাপ্রবণও বটে।

তবে প্রযুক্তির মাধ্যমে সেখানে পাইলিং বা শক্ত, মজবুত নির্মাণ কাজের বদৌলতে একটি বড় স্থাপনা হয়তো নির্মিত হবে। ....................অবশ্য সেখানকার অনেক মানুষ চান না বিপুল পরিমাণ কৃষি জমি, জলাভূমি, নিজেদের ঘর নষ্ট করে সেখানেই বিমানবন্দরটি নির্মাণ করা হোক. তাদের দাবি অন্যত্র করার. যদিও করলে তাদের যথাযথ নিরাপত্তা ও ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ। তারপরও ডিজিটাল সরকারের প্রযুক্তি নির্ভর সেই স্থাপনা সমুদের কাছেও হতে পারে. ব্যাপক এলাকা জুড়ে যে সমুদ্রের ডেল্টার স্তরবিন্যাস তাতে ৫ মিটার পর্যন্ত গভীর সমুদ্র এলাকায় সহজেই মাটি ভরাট করে, প্রযুক্তির সহায়তায় নির্মাণ করা যায় বিমানবন্দর বা আরো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বেসরকারি স্থাপনা। ....................দেশে জলাভূমি বা ওয়েটল্যান্ড বলে যেসব বিল, হাওর এবং ম্যানগ্রোভ এরিয়া আছে সেখানে ভূমি সংকটের কারণে মানুষের বসতি ও স্থাপনা নির্মাণ থেমে নেই। সমুদ্রের মাঝে জীবনের প্রতিধ্বনি খুঁজতে যাওয়ার সময় এসেছে।

সীমিত সম্পদ ও সামর্থ্য এবং মানুষের ক্রমবর্ধমান চাপে সেই ধ্বনির সঙ্গ দেয়ার সময় চলে এসেছে। ....................প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বর্তমান বিশ্বে নতুন করে গড়ে উঠছে অনেক কিছু। জীবনযাত্রাকে সহজ ও সাবলীল করার জন্য তৈরী হয়েছে নানা আধুনিক যন্ত্রপাতি। বিস্ময়কর প্রযুক্তির কল্যাণে এমন অনেক কিছু হচ্ছে যা হওয়ার কথা ছিলোনা কয়েকদিন আগেও। .....................আমোদ প্রমোদে মানুষ মাটি ছেড়ে সমুদ্র, আকাশে , মহাশূন্যে যাচ্ছে।

দূরে থেকেও কাছে থাকার প্রচেষ্টা ও সফলতা অনেক আগের। সমুদ্রের নিচে মানুষ বাস করছে বিভিন্নভাবে। .....................আমরা এই নতুন শতাব্দীতে প্রযুক্তির মাধ্যমে কি করতে পারি? দুর্যোগপ্রবণ দেশ বাংলাদেশে দুর্যোগের ঘনঘটা এতোই যে এখানে মানুষের জীবন যাপন ও স্থাপনা নির্মাণে ভাবতে হয় হাজার বার। কিন্তু সমুদ্রের ডাকই যদি শুনতে হবে এক সময়, তবে কেন সমুদ্রে নয় এখনই. .!!
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.