সকাল আর আসেনা গোলাপ হয়ে ফোটেনা কিশোরীর হাতে
মলয় শব্দের আভিধানিক অর্থ উদ্যান ,বাগান, দখিনা বাতাস। সেই থেকে গানের নামকরণ মলয়া।
যে গানের সুর মানুষের মনে দখিনা বাতাসের আমেজ এনে দেয়। আমরা আজকে বাংলার লোক সঙ্গীতের একটি অন্যতম ধারা মলয়া সঙ্গীত এবং এর রচয়িতার জীবন এবং গান সম্পকে কিছু বিষয় তুলে আনার চেষ্টা করব। আমরা চাই মলয় সঙ্গীতের এই বাতাস বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌছে যাক।
লালনের গানের চেয়ে মলয়ার আবেদন ও কম নয়। কিন্ত্ত প্রসার ততটা নেই।
কাননে ফুল আপনি ফুটে,
বিহগে গীত আপনি গায়।
ফুলটি নিজে ফুটেই সুখি,
আপনা রঙ্গ আপনি চায়।
এমনি একফুল গানের পাখি ,সর্বধম্মের সাধক পুরুষ শ্রী শ্রী মনোমোহন দত্ত।
পূর্বপুরুষের আদি নিবাস নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে। রাজবল্লব দত্ত নামীয় এক মহাপরাক্রমশালী জমিদারের বংশধর। বাঙলা ১২৮৪ সালের ১০ই মাঘ এক প্রভাত বেলায় বাবা পদ্মনাথ দত্ত এবং মাতা হরমোহনীর ঘর আলো করে জন্ম নেয় এক শিশু। তৎকালীন ত্রিপরা জেলার সাতমোড়া গ্রাম। বর্তমান বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার সাতমোড়ায়।
নবীনগর যেখানে জন্ম নিয়েছেন জগৎখ্যাত সজ্ঞীতজ্ঞ বাবা আলাউদ্দীন খাঁ,আয়েত আলী খাঁ সহ কীর্তিমান পুরুষ।
সংস্কৃতির রাজধানী এই নবীনগরের আরেক প্রবাদ পুরুষ মহর্ষি মনোমোহন দত্ত। মাত্র দুই মাস বয়সেই বাবা মা মনোমোহনকে তুলে দেন গুরু শ্রী শ্রী আনন্দ স্বামীর কোলে। আর তাই হয়তবা তিনি আজীবন গুরু ভক্তি হৃদয়ে লালন করে গেছেন। সেই গুরু ভক্তির কথা অকপটে উঠে আসে তার অনেক গানে।
তেমনি একটি গান, যাতে তিনি বাউলা সুরে বলেছেন গুরুর প্রয়োজনীয়তার কথা,
ওরে মন মাঝিরে
লাগাও তরী শ্রী গুরুর ঘাটে।
যদি সুখে রবি ,পার হবি ভব সঙ্কটে।
ঘাটে আছে একবাজার,সাধু সঙ্গ নাম তার,
কত হীরে মানিক বিনা মূল্যে ,বিকাইছে সেই হাটে।
হাল দিয়া কান্ডারীর হাতে, দাড় টান ভাই বসে বসে,
ভাব বুঝে সে দেবে শলা,যখন যেমন খাটে।
ভয় করোনা ঝড় তুফানে,চালাও তরী প্রাণ পণে
দেখবে তুমি নামের গুণ, আপনি লাগবে ঘাটে।
সময় বয়ে চলে সেই সাথে তিরতির করে বেড়ে উঠতে থাকেন মনোমোহন। ছেলেবেলায় পূজোর থালা হতে যে শিশু চুরি করে কলা খেতেন কে জানতো বড় হলে সে হাজার হাজার ভক্তের হৃদয় জয় করবে। মা হরমোহিনী রাগ করলে তিনি অভিমান করে বলতেন-' মা আমাকে খেতে দে আমিই তোর দেবতা'। তাই বলে জনক জননীর প্রতি তার কোন শ্রদ্ধার কমতি ছিলনা। তারঁ গুরু তত্তের গানে দেখা যায় পিতা মাতাকেই গুরু শ্রেষ্ঠ বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি গেয়েছেন,
দয়া আমার মা জননী ,
দয়াময় বাবা।
কাজ কি আমার বহুরূপে,
কাজ কি অন্য দেবী দেবা
পিতামাত সত্য গুরু,
জ্ঞানদাতা কল্পতরু,
ব্রহ্মাণ্ড দেখিতে পাই তারি মাঝে
নিশি দিবা।
হৃদি আলোকিত রূপে
মজ মন সুধা কূপে;
একরূপে অনন্তময় জেনে কর
গুরুসেবা।
অনন্তের মধ্যে বিন্দু.হৃদাকাশে গুরু ইন্দু
আকর্ষিয়ে প্রেম সিন্ধু মন্থনে
পূর্ণ প্রতিভা।
মনোমোহন গ্রাম্য পাঠশালা,গ্রাম্য স্কুল এবং ছাত্রবৃত্তি স্কুলে পড়ালেখা করেছেন।
পরবর্তীতে ইংরেজি শিক্ষার কথাও আমরা জানতে পারি স্বহস্তে লিখা লীলা রহস্য নামক পুস্তকে। মনোমোহন হয়ত একাডেমিক শিক্ষায় তেমন শিক্ষিত নন। কিন্ত্ত তার রেখে যাওয়া ফসল অসংখ্যগান এবং কবিতায় আমরা পাই সক্রেতিস ,লালন কিংবা নিমাইয়ের মত বড় বড় মনিষীদের চিন্তার সামঞ্জস্য।
তিনি পৃথিবীর তাবৎ ধর্মের ভেতর নিজেকে তথা ঈশ্বরের সন্ধান করেছেন।
তাইতো তিনি বলেছেন,
হরি তোমায় জানতে গিয়ে, পড়েছি এক বিষম গোলে।
আসল কথার ঠিক পাইনা তার,শুনি কেবল যে যা বলে।
পুরাণে কয় এরুপ সেরুপ,কে জানে তার কিবা কোন্ রুপ,
বেদান্তে কয় অরুপ স্বরুপ,ঘটে পটে সর্বস্থলে।
বাইবেলে কয় ঈশার পিতা,আর যত হয় সবই মিথ্যা,
ঠিক পাইনা তার কোন কথা,কোন্ কথা রয়েছে মূলে।
কোরাণে কয় ঠিক দূরস্ত,বটে মহম্মদের দোস্ত
হয়ে গেলঅমম হেস্তনেস্ত,পড়ে মস্ত কথার ভুলে।
গৌরাঙ্গে কয় কৃষ্ণরাধা,বৌদ্ধ বুদ্ধের কথা,
নাস্তিকে কয় ঈশ্বর মিথ্যা আপনি জগৎ চলে।
.............................................
.........................................
.ঠিক পাইনা তার কোন কথার,কেহ কয় সহজে মিলে।
কেহ কয় ভজন সম্বল,কেহ কয় কৃপাহি কেবল,
তার ইচ্ছাতে হচ্ছে সকল ফল নাই তার কিছু কর্ম ফলে।
যে যা বলে সবারি মূল,এক ব্রহ্ম সূক্ষ স্থুল,
লীলাতে ঘটাইতে গোল,দীনহীন মনোমোহন বলে।
কৃপা হলে পাবে কৃপা স্ববস হবে অজপা,
তুচ্ছ হয়ে সোনা রূপা,রূপে যাবে নয়ন ভূলে।
মনোমোহন ইশ্বরের সন্ধান করেছেন সারা জীবন।
ধর্মের গোড়ামি ছিলনা। ঈশ্বরকে পেতে তিনি
মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। গ্রামে গ্রামে ছুটে গিয়েছেন ধর্মলোচনায়। সর্বোপরি তিনি যেন নিজের অন্তরেই ঈশ্বরের ডাক শুনতে পেয়েছিলেন। আর তাইতো তিনি করূণ সুরে গেয়েছেন,
মন মাঝে যেন কার ডাক শুনা যায়।
কে যেন আমারে অতি সাধ করে,
হাত দু'খানা ধরে কাছে টেনে নিতে চায়।
ঈঙ্গিতে সঙ্কেতে পলকে পলকে,
কোথা যেতে নারি পাছে থেকে ডাকে,
শুনে সেই তান চমকে উঠে প্রাণ,বলে কথা মান ফিরে ফিরে আয়।
অবহেলা করি দৌড়াইয়া যাই,
চৌদিকে নেহারি নাহি কিছু পাই,
ফিরে এসে কাছে,দেখি হৃদিমাঝে দাড়াইয়া আছে আমার অপেক্ষায়।
হেন প্রাণ বন্ধু হৃদয়ের স্বামী,
কাছে রেখে আমি দূরে দূরে ভ্রমি,
করি কত দোষ,নাহি করে রোষ,সুজন পুরুষ মাখা মমতায়।
আমি হলে তারি সে হতো আমারি,
নিলে তারি মর্ম কাটত কর্ম ডুরি,
কেন কি কারণ নিলে না তার মন,বৃথা মনোমোহন নামটি ধরায়।
মনোমোহন সংসার করতে চেয়েছিলেন কিন্ত্ত হৃদয় যে তার গানের পাখি, তাই কর্মের সন্ধানে ঘুরে ফিরে শেষ বুঝতে পারেন এ সংসারের কামক্রোধ ,হিংসা তার জন্যে নয়। মন যে তার বনের পাখির মত সারাক্ষণ গানের জন্য আকুলি বিকুলি করে। সংসার ফাঁকি দিয়ে যারা জঙ্গলের পাখির মত ঘুরে বেড়াতে চান মনোমোহন সেই সব পাখির দলে-
আমার মন পাখি মিশিতে চায় , যেয়ে সেই সব পাখির দলে।
যেসব পাখি ফাঁকি দিয়ে ঘুরে বেড়ায় বন জঙ্গলে। ।
কত করে করে করি রে মানা পাখিরে বাসা ছেড়না;
সে আমার কথা শোনেনা তার সনে পারি না বলে।
শিকলী কেটে ময়না টিয়া,অই সব পাখির দলে গিয়া;
আবোল তাবোল বুল বুলিয়া,হারা হতে চায় মূলে।
হারেরে জঙলা পাখি,আর তুমি দিওনা ফাঁকি;
মনোমোহনের মনো আঁখি কেমনে রাখি উল্টা চলে।
মনোমোহনের জীবন পর্যালোচনায় এক পর্যায়ে দেখা যায় নদীয়ার নিমাইয়ের প্রভাব। নিমাইয়ের মত তিনিও যেন সংসারে থেকেও নেই।
তিনি প্রাণের টানে বাসা বাঁধেন গাছতলে। বেলগাছ তলায় দিনের পন দিন চলতে থাকে সাধন ভজন। সঙ্গী উস্তাদ আফতাবউদ্দিন খাঁ,বাবু লব চন্দ্র পাল।
নিমাইয়ের মত তিনিও নিষ্কামপ্রেমে মগ্ন হন। (উস্তাদ আপ্তাব উদ্দিনের আরেকটি পরিচয় হলো উনি
উস্তাদ আলা উদ্দিন খাঁ'র বড় ভাই যদিও সংগীত জগতে তিনি স্বমহিমায় উজ্জল)
কামেতে প্রেম করিল বিনাশ।
স্বকর্মে বিপাকে টানে না হতে প্রকাশ।
বহে প্রেম সোমধারা,পুলকে আপনা হারা,
উধ্বগতি মূলাধার তদুদ্র্ধে নির্মলাকাশ।
আকাশে প্রকাশে ইন্দু,ঝরে সুধা বিন্দু বিন্দু,
কামিনী কাটাক্ষে সিন্ধু উথলিয়ে হয় হ্রাস।
আকর্ষণে বিকর্ষণে স্খলিত মধ্যাকর্ষণে,
কালের ঘরে ফেলে টেনে,দুর্বল চিদাভাস।
ধরিতে সরল রেখা অমনি হয়ে যায় বাঁকা,
হল না সাধন রাখা, লাগিল অতি তরাস।
মণিতে জনমে মন,সে ধন বিনে সাধন,
হবে না যে কখন,মনোমোহন নিরাশ।
নিমায়ের তথা নদীয়ার শ্রী চৈতন্য দেবের জীবনের প্রভাব যে তাঁর জীবনে ছিল তারই প্রমাণ স্বরুপ একটি গান-
পড়রে মন তোতাপাখি ভজনের পাঠশালাতে
পন্ডিত নিমাই পগল হয়ে টোল খুলেছে নদীয়াতে।
আকার ছাড়া ব্যাকরণ বর্ণ ভেদ নাই ধনে মানে,
অর্থছাড়া অভিধান,প্রেমাক্ষর শিখাইছে তাতে।
উল্টাইয়া দেখাইছে ভূগোল,অখন্ড মন্ডল গোল,
রেখা টানা জ্যামিতি ভুল,জটিল অঙক দেয় গণিতে।
সাহিত্যের তার হিতবচন,সৎপ্রসঙ্গ বিনয় ভাষণ,
ড্রয়িং এ তার ছবি অঙ্কন স্বভাবের তুলিকা হাতে।
কর্তা কর্ম ক্রিয়া পদে,গোল ঘটায় তার পদে পদে,
একই বস্তু দুই বর্ণেতে,বিশেষ করে বিশেষ্যেতে।
হয় যার কর্তা কর্ম ঠিক,ভ্রান্তি হয় না কখনো দিক,
করলে পরে এদিক সেদিক,শাস্তি হয় তার ধারামতে।
শ্রীপদে মজায়ে মন,ভেবে কয় মনোমোহন ,
কত বিদ্যাবাগীশ ফেল হয়ে যায় পাঠশালায় পরীক্ষা দিতে।
যে বেলতলায় মনোমোহণ সাধন ভজন করতেন সেই বেলতলা আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এ সময়টা মনোমোহনের এক গুরুত্তপূর্ণ সময় অন্তত গানের ক্ষেত্রে।
মনোমোহন গান লিখতেন আর উস্তাদ আফতাব্ উদ্দিন সেই সব গান সুরারোপ করে গ্রামে গঞ্জে গেয়ে জনপ্রিয় করেনআফতাব উদ্দিন ছিলেন মনোমোহনের আত্তার আত্বীয়, সাধনার সঙ্গী। আফতাব উদ্দিনের নাম উঠে এসেছে মনোমোহনের ইসলামী সংগীত গুলোতে তেমনি একটি হচ্ছে-
ফকিরি লইতে মমিনমনে যদি আছে,
আগে এক 'ব' মাঝে দুই 'ব' তিন 'শ' রেখ পাছে।
মুরশিদের কথা লইয়া,সাধরে আনন্দ হইয়া,
থাকতে পারলে রইয়া সইয়া হাসিলি আছে।
জরু লারকা দুনিয়ার,কেবা সঙে যাবে কার,
দুই চক্ষু মুছিয়া গেলে সকলই মিছে।
কালেপে আলেক সাঁই,তালাসিয়া দেখ ভাই
মক্কা মদিনা যত সকলই কাছে।
দিলের গড়রী ছাড়,হাকিমের হুকুম ধর,
কেয়ামত স্মরণ কর কি হবে পিছে।
আপ্তাবউদ্দিন নিরুপায় ,মুর্শিদ কহিছে তায়,
সাবুদ ঈমানে চায়,পায় নৈলে মিছে।
মনোমোহনের গানের সুর ও বৈশিস্ট্য স্বতন্ত্র। লালনের মত তার গানের পসার হয়তো বেশী নয়
কিন্ত্ত আবেদন সর্বময়। এক একটি গান যেন হৃদয়ে গেঁথে যায় ।
তেমনি একটি গান,একটি শান্তির গান,একটি তাপদগ্ধ হৃদয়ের গান-
খুলে দাও শান্তির দুয়ার।
কাছে বসে তাক তুমি সর্বদা আমার।
করাঘাতে হাতে বেদনা প্রচুর,ডেকে ডেকে বুকে বেজে গেছে সুর,
নিশি ভোর ভোর,হ্যারে চিত্তচোর,বড়ই কঠোর অন্তর তোমার।
সুখে শয্যা মাঝে, শুয়ে আছো তুমি,অন্ধকারে দ্বারে ভ্রমিতেছি আমি,
আশা দিয়ে টেনে ,দ্বারের কাছে এনে,দূর্বলের সনে একি ব্যবহার।
ধরা দিবে বলে,প্রাণে দিয়ে আশা, ঘর ছাড়াইয়া চুপি চুপি হাসা,
হায়রে ভালোবাসা কূল ধর্মনাশা, গাছতলা বাসা করিলি এবার।
তবুও যদি দয়া হইত তোমার খুলে দিতে চির রুদ্ধ দ্বার,
জনমের ধার,জীবনের ভার,ভুলে যেত মনো বিপত্তি অপার।
ঈশ্বরের স্বরুপ সাধনে মনোমোহন হৃদয়ের দগ্ধ বিদগ্ধতার পরিচয় ফুটে উঠে তেমনি আরেকিট গান,
আঁখি নীরে টেনে আনে, প্রাণের প্রাণ কাছে।
চোখের জল আর প্রাণের টান,তা বিনে কি মন্ত্র আছে।
প্রাণ ভরা করুণ সুরে প্রেম ভরে ডাকলে পরে,
অমনি এসে হেসে হেসে,আনন্দ অন্তরে নাচে।
খেলায় খেলে প্রাণ পুতুল,দোল দোলাদোল দোদুল দোলুল,
যে দেখেছে তার সেই দোল মায়ের কোল ছেড়ে দিছে।
আভাস পেয়ে মনোমোহন গাছতলাতে করছে রোদন,
ছুটবে কি তার কর্মবন্ধন, জন্ম মরণ যাবে ঘুচে।
২য় পর্বঃ Click This Link
তথ্যসূত্রঃমলয়া ১ম,২য়,৩য়, মনোমোহনের স্বহস্তে লিখিত জীবনী 'লীলারহস্য এবং এ প্রবাদ পুরুষকে নিয়ে লেখা বিভিন্ন নিবন্ধ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।