জানা-অজানায়,আজ সে আমায়
এলোমেলো করে,কোন সে নেশায়
টলোমলো পায়ে,তার পানে চলি
আমি যে নিরুপায়,দাঁড়াও আমার আঁখির আগে-
পংক্তি গুলো আসছে আকাশ থেকে সহসা আশনিপাতের মতন। কোনও পূর্বপ্রস্ততি ছিল না,মনের গ্রহন কোনেও এই চিন্তার অস্তিত্ব ছিল না। মন খারাপের যেমন কোন কারণ থাকে না,স্বপ্নের যেমন যুক্তি নেই,তেমনি শিল্প সৃষ্টিরও উৎস বোঝা যায় না!মন খারাপের সাথে শরীর খারাপেরও একটা সম্পর্ক আছে। আমার বুকের ভেতর গুরুতর রোগের আশঙ্কা জমছে ধীরে ধীরে। একটা স্পেশালিস্ট দেখানো খুব দরকার।
প্রায়ই বুকে ব্যাথা হয়। এই ব্যাথার কথা কাউকে জানানো হয়নি। পুরুষ মানুষের অসুখের কথা মা এবং স্ত্রীর কাছে লুকানো যায় না। আমার তো স্ত্রী নেই,আর কোন সমস্যার কথাই তো মাকে বলি না। সারাদিনে মা'র সাথে দু'একটা কথা হয়।
অসাড় হয়ে পড়েছে আমার মন। বিশেষ করে সন্ধার পর আর কিছুই ভালো লাগে না।
প্রতিটি সন্তানই বাবা-মা'র আত্মার একটি অংশ। একটি বিশেষ অংশ। বাবা-মা নিজে অনেক কষ্ট সহ্য করে কিন্তু সন্তানের কষ্ট দেখলে তাদের বুক একেবারে আথালি পাথালি করে।
বাবা-মাকে সবচেয়ে অসহায় লাগে যখন সন্তানের কষ্ট দূর করার কোনোও উপায় খুঁজে পায় না। কিন্তু দুঃখের কথা হলো,ছেলে মেয়েদের তো বেশিদিন ধরে রাখতে পারে না বাবা-মা'রা। সন্তান দূরে সরে যাবেই।
সচ্ছল পরিবারে,বাপ মায়ের আদরে যারা লালিত,তাদের অনেক কিছু না জানলেও চলে,কিন্তু যাদের কোনও সহায় সম্বল নেই,বেঁচে থাকার জন্য যাদের সারাক্ষন লড়াই করতে হয়,জীবনের ভয়ংকর দিকগুকি তাদের না জানালে,না বুঝালে চলে না। মেয়ে মানুষেরা ভাবে অন্যের কথা শুনেই তাদের সারা জীবন চলতে হবে।
বাপ-দাদার সংসার বা স্বামীর সংসারের বাইরে মেয়ে মানুষের একটা রাতও কাটাবার অধিকার নেই। পুরুষ ছেলেদের দোষ হয় না। তারা যেখানে খুশি যায়,যেদিন ইচ্ছে ফিরে আসে। হারানো ছেলে ফিরে এলে বাড়িতে সবাই আনন্দে নেচে ওঠে। পাড়া-পড়শিদের ডেকে পার্টি দেয়।
হারানো মেয়েদের ফিরে আসার পথ চিরকালের জন্য বন্ধ।
গভীর রাতে কাউকে কিছু না বলে চলে যাই ছাদে। কেউ যাতে ডাকতে না আসে সে জন্য দরজা বন্ধ করে রাখি। চেয়ে থাকি তারা ভরা আকাশের দিকে। মেঘশূন্য,অমলিন,জ্যোস্নাময় আকাশে ঝিকমিক করে অজস্র গ্রহ-নক্ষত্রপুঞ্জ।
আমার মতো বয়সী ছেলেরা কি কখনও এত রাতে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে?মানুষের জীবনের কত অশান্তি,কত দ্বন্ধ,কত অবিশ্বাস,কত আত্মযাতনা তৈরি হয় নিছল ভুল বোঝাবুঝির জন্য।
গতকাল গভীর রাতে হিমি আমাকে ফোন করে বলল,তোমার ভূতের ভয় নেই তো?মাঝে মাঝে নাকি মধ্যরাত্রের দিকে নূপুরের শব্দ শোনো,নারী কন্ঠের খিল খিল হাসি,ভূতে ধরা আর ভূতের নজর লাগা কাকে বলে জানো?ভূতে ধরলে বুঝতে পারবে কিন্তু ভূত দেখতে পারবে না। কিন্তু ভূত তোমায় দেখবে,আর তাতেই তোমার নজর লেগে যাবে। এরপর তুমি যেখানেই যাও- দিন দিন শুকিয়ে যাবে,অসুস্থ হয়ে পড়বে,মাথার সব চুল পড়ে যাবে। ভূত তোমাকে মৃত্যুলোকের ওপারে নিয়ে যাবে।
আর.... । হিমির কথা শেষ হওয়ার আগেই আমি ফোন লাইনটি কেটে দিয়ে মোবাইল বন্ধ করে দেই।
আচ্ছা,আমি কি হিমিকে ভালোবাসি?যাকে পাওয়া যাবে না,তার জন্য বুকের মধ্যে মৃদু ব্যথা সব সময় ছড়িয়ে থাকে কেন?এ এক রহস্য!আমি কি ইচ্ছে করলে হিমিকে বিয়ে করতে পারি না?এদেশে কোনোও পুরুষের জন্য কখনও পাত্রীর অভাব হয় না। কিন্তু আমি তো হিমি ছাড়া অন্য কোনোও নারীর প্রতি সামান্য টানও অনুভব করি না।
আমার এখন শাহী মোরগ পোলাও খেতে ইচ্ছে করছে।
আচ্ছা,হিমি কি শাহী মোরগ পোলাও রান্না করতে পারে?পুরান ঢাকার একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার হলো শাহি মোরগ পোলাও। রেসিপিটি দিয়ে দেই,- উপকরনঃচাল,একটি মুরগী(চার ভাগ করা),পেস্তা বাদামের গুড়া,আলুবোখরা,তেল,ঘি,পিয়াজ,আদা,রসুন,ছোট এলাচ,দারুচিনি,জয়ত্রি,জয়ফল,লবঙ্গ,শাহি জিরা,টকদই,দুধ,কাঁচামরিচ,সাদা গোলমরিচ,লবন পরিমাণ মতো,শুকনা মরিচ এবং পিয়াজ ভাজা।
প্রনালীঃ মুরগী চার টুকরা করে নিতে হবে। মুরগী ৩০ মিনিট লবন পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর মুরগীর টুকরা লবন পানি থেকে তুলে ফেলতে হবে।
পিয়াজ,আদা,রসুন বাটা,গরম মসলা গুঁড়া,দুধ দিয়ে মুরগীর মাংস মেখে কিছু সময় রাখতে হবে। মাখানো মাংস পাত্রে মালাই,জয়ফলসহ বিভিন্ন মসলা দিয়ে আগুনের ওপর কিছু সময় রাখতে হবে। চাল আলাদাভাবে আধা সেদ্ধ করে দিতে হবে। মুরগী সেদ্ধ হয়ে গেলে সেটা রেখে দিতে হবে। আধা সেদ্ধ চাল মুরগীর তেলেই রান্না করতে হবে।
এভাবেই তৈরি করা যায় মজাদার শাহি মোরগ পোলাও।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।