গত কিছুদিনে কলমানি রেট এক থেকে দেড় শতাংশ বাড়লেও এই হারকে স্থিতিশীল বলেই মনে করছেন ব্যাংকারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার সর্বোচ্চ ৮ শতাংশ সুদ হারে নিজেদের মধ্যে অর্থ ধার দিয়েছে ব্যাংকগুলো। অবশ্য ব্যাংক বর্হিভূত কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৯ শতাংশ হার সুদেও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে।
একটি ব্যাংক এক দিনের জন্য অন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে যে সুদ হারে ঋণ নেয় তাকে বলা হয় কলমানি রেট।
সাধারণত ঈদের আগে টাকা তোলার হার বেড়ে যায় বলে ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকায় টান পড়ে।
তখন কল মানি রেটও বেড়ে যায়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেট ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, সোমবার মুদ্রাবাজার থেকে সবচেয়ে বেশি ধার করেছে মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড। ৮ শতাংশ হার সুদে ৭৬৫ কোটি টাকা অন্য ব্যাংক থেকে নিয়েছে তারা।
এছাড়া ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড ৩৫০ কোটি টাকা, সাউথ ইস্ট ব্যাংক ২৫০ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংক ১০০ কোটি টাকা ধার করেছে।
আর বেশিরভাগ অর্থ ধার দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, রূপালী এবং বেসরকারি সিটি ব্যাংক এনএ, এইচএসবিসি, ডাচ-বাংলা ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড।
ঈদের আগে আর মাত্র একদিন (বুধবার) ব্যাংকে লেনদেন হবে। যে কারণে সোমবারই টাকার সবচেয়ে বেশি চাহিদা ছিল ব্যাংকগুলোতে। কিন্তু সেই হিসেবে কলমানি রেট বাড়েনি বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হাসান জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিভিন্ন কারণেই বাজারে অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকও বিশেষ রেপোর মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দিচ্ছে।
এর ফলে মুদ্রা বাজার স্থিতিশীল। ”
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের প্রথম পাঁচ দিনে বাংলাদেশ ব্যাংক ৩ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকার সার্কুলেশন বাড়িয়েছে। অর্থাৎ, ওই পরিমাণ ছাপানো নোট বাজারে গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বর্তমানে ব্যাংকিং খাতের ৭২ হাজার কোটি টাকা উদ্বৃত্ত রয়েছে। যদিও এর মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা সরকারি বিল ও বন্ডে ব্যাংকের বিনিয়োগ; যা থেকে ব্যাংকগুলোর আয় হচ্ছে।
বাকি প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের সুযোগ থাকলেও চাহিদার অভাবে ব্যাংক বিনিয়োগ করতে পারছে না।
এ বিষয়ে পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এবিবির ভাইস চেয়ারম্যান হেলাল আহমদ চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ব্যাংকে অতিরিক্ত তারল্য থাকায় এবার কলমানি মার্কেটে টাকার চাহিদা কিছুটা কম। এ কারণে সুদের হার স্থিতিশীল। ”
মাত্র তিন বছর আগে অর্থাৎ ২০১০ সালের ১৯ ডিসেম্বর মুদ্রাবাজারে নগদ টাকার সঙ্কটের কারণে নজিরবিহীন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ওই দিন ১৯০ শতাংশ সুদে টাকা ধার করতে হয়েছে অনেক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে।
তবে গত বছর থেকেই পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করেছে। আমানত টানতে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত সুদ গুণলেও কলমানি লেনদেন হয়েছে ৭ থেকে ১২ শতাংশের মধ্যে। তবে ঈদের আগে তা ১৮ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছিল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।