চলছে গাড়ি যাত্রাবাড়ি।
ইত্তেফাকে প্রকাশিত লিংকটি-
Click This Link
ছোট কিছু ঘটনা অনেক সময় বড় ব্যবসার জন্ম দিতে পারে, যদি সেটার পেছনে দৃঢ় সংকল্প থাকে। প্রথম দর্শনে মনে হতে পারে ব্যাপারটি হাস্যকর। কিন্তু পরবর্তীতে এর ব্যাপকতা সবাইকে মুগ্ধ করে। এমনই দৃষ্টান্ত রেখে গেছে ক্যাথেরিন কুক নামের ছোট একটি মেয়ে।
যার অভিনব চিন্তা তাকে মিলিয়নিয়ারের খেতাব এনে দিয়েছে। ২০০৫ সালের মার্চ নাগাদ ইন্টারনেটের এ মহাসাগরে যুক্ত হয় আরো একটি জাহাজ, নাম_ মাই ইয়ারবুক ডট কম। মুহূর্তেই তৃতীয় স্থানে চলে আসে সেটি। আলোচনার মূলে আসার আরো একটি কারণ হলো, এর নিমর্াতাদের বয়স, ডেভিড (১৯) ও ক্যাথেরিন (১৮)। এ ঘটনার প্রায় বছর তিনেক আগে ডেভিড ও ক্যাথেরিন তাদের স্কুলের বর্ষসংখ্যার জন্য ইন্টারনেটে ঢুঁ মারছিলো।
তারা তাদের স্কুলের প্রজেক্টের জন্য সারা বছরের কিছু ছবি আর বিশেষ কোনো ঘটনার জন্য ব্রাউজ করছিলো, যেটা আমেরিকার বেশিরভাগ স্কুলের জন্যই খুব সহজ ব্যাপার। খুঁজতে গিয়ে তারা সেখানে তাদের এক পরিচিত মুখের দেখা পেল। দুজনেই তারা সম্মতি জানাল যে, ছবিটি আসলেই সুন্দর। কিন্তু যখনই নেট থেকে তা নামানো হলো, ছবির ফরমেট ভেঙে গেল। স্বভাবতই তাদের মনে প্রশ্ন জাগে, এমনটি কিভাবে হলো।
হঠাৎ ক্যাথেরিনের মাথায় একটা চিন্তা আসলো, এভাবে আমরা অনলাইনেই একটা ইয়ারবুক বানিয়ে ফেলি না কেন, যেখানে সবাই তাদের পছন্দমতো ছবি রাখতে পারবে। একবাক্যে সেটি হবে তাদের_অনলাইন ইয়ারবুক। যেই ভাবা সেই কাজ, দুজনে কাজে নামলো। কিন্তু ব্যাপারটা তাদের জন্য মোটেও সহজ ছিলো না। তবে, সেখানেও সাথে ছিলো তাদের ভাগ্য।
তাদের বড় ভাই জফ, যে কিনা আগে থেকেই একজন সফল ডেভেলপার ছিলেন। তার বানানো দুটো সাইট 'ইজি এইজ' ও 'রিজুম এইজ' অনলাইনে ভালোই চলছিলো। অনলাইন লেখালেখির কাজ সরবরাহ করতো সাইট দুটি। যখন দুই ভাইবোন তাদের পরিকল্পনার কথা তাকে বলে, তিনি মনে করেন, ব্যাপারটা ফেসবুকের পর্যায়েই পড়ে। তাদের পরিবার অবশ্য এর ব্যাপকতা না বুঝে মনে করে_এটা তাদের এক রকমের পাগলামী।
কিন্তু জফ সমর্থন দেন। তিনি ইয়ারবুক প্রজেক্টের জন্য ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার নির্ধারণ করেন। সেটি হোস্টিংয়ের জন্য ওয়েব সার্ভার কোম্পানি খুঁজতে থাকেন, সাথে সাথে একটা প্রোগ্রামিং টিমও দাঁড় করিয়ে ফেলেন। টিমটা ছিলো ভারতের মুম্বাই শহরের। প্রজেক্টটি লাইভ করার জন্য ২৫ হাজার ডলারের ব্যবস্থা করেন।
শুরুতে এটা ছিলো এক রকম ফটো শেয়ারিং ফিচারের মতো। পরবর্তীতে তাতে আরো যুক্ত করা হয় ব্যবহারকারীদের যোগ্যতা শেয়ার করার ব্যবস্থা। ক্যাথেরিন মন্তব্য করেন, 'প্রজেক্টটি ধীরে ধীরে ব্যাপক একটা রূপ পেতে যাচ্ছে। ' এপ্রিল ২০০৫। তারা প্রথমবারের মতো তাদের ক্যাম্পেইন শুরু করে।
'তুমি হাই স্কুলের সবচেয়ে সুন্দরী মনে করো নিজেকে? নিজেকে খোঁজো মাইইয়ারবুক ডট কমে। ' এমন সেস্নাগান লেখা টিশার্ট নিয়ে তারা প্রচারণা চালায়। প্রথমে তাদের ব্রিটিশ কিছু ছাত্র তাদের অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। কিন্তু নিউ জার্সিতে ঘটে উল্টো ঘটনা। তারা এক সপ্তাহের মধ্যে প্রায় ২০০ জনের সাড়া পায়।
অর্থাৎ, সাইটে ২০০ জন সাইনআপ করে। ব্যবহারকারী প্রত্যেক সাইনআপের জন্য ৫টি করে বিনামূল্যে টিশার্ট পায়। এবং ৯ মাসের মধ্যে প্রায় ৯৫০ হাজার টিনেজার তাদের সাইট মেম্বার তালিকায় চলে আসে। সাইট শুরুর দু'বছরের মাথায় অথর্াৎ জুলাই ২০০৭-এর দিকে তারা প্যারামাউন্ট ফিল্ম কোম্পানির বিজ্ঞাপন পেয়ে যায়। বিজ্ঞাপনের জন্য ৫ লাখ ডলারও পায় তারা।
হঠাৎ করেই মাই ইয়ারবুক বিশাল অঙ্কের আয় করতে থাকে। এদিকে সেটা নিয়ে দুই ভাইবোন কখনও মাথা ঘামায়নি। এক সময় তারা উপলব্ধি করে যে, তাদের কোষাগারে প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলারের মতো জমা হয়েছে। এবং প্রতি বছর প্রায় ৩ মিলিয়ন ডলারের মতো আয় করছে তাদের কোম্পানি। কিন্তু একই সাথে ব্যবসা ও পড়াশোনা করা অনেক সময় কষ্টকর হয়ে পড়ে।
ক্যাথেরিন ওয়াশিংটনের জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির ছাত্রী। এখনও সে তার পড়াশোনা শেষ করতে পারেনি। সে ক্লাসে যায় কিন্তু কখনোই মন দিয়ে পড়ে না, তার ক্যারিয়ারে একগাদা পরীক্ষা জমে আছে। তার সহপাঠিরা অনেক সময় তাকে নিয়ে মন্তব্য করে, 'মাঝে মাঝে ওর জন্য আমাদের দুঃখই হয়। ' তবে ক্যাথেরিনকে এ ব্যাপারে চিন্তিত হতে দেখো যায় না।
সে তার মাইইয়ারবুকের বিশালতা নিয়ে ভাবতে থাকে প্রতিক্ষণে।
০০ প্রাঞ্জল সেলিম ০০
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।