আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জামাতী পরিবারের অবস্থা : ফারজানা মাহবুবার গতিবিধি

লাল তরঙ্গ, লাল বিপ্লবের বার্তা বয়ে আনে
সেদিন সাহেব বাজার মোড়ে এক বড় ভাইকে দেখে অবাক হলাম। রাস্তায় দাড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছেন। তিনি চারদলীয় জোটের সময় রাজশাহী কলেজের শিবিরের নেতা ছিলেন। সামনে গিয়ে সালাম দিলেন। তিনি ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলেন।

সালামের জবাব দিলেন না। আমাকে চেনেন না ভান করে জিজ্ঞেস করলেন, কে তুমি? তার চোখের পাতা পিট পিট করছে। আগলে ছাগুলে দাড়ি ছিল। এখন ক্লিন শেভড। বললাম মনির ভাই আমাকে চিনলেন না! কী হয়েছে আপনার? আপনি না শিবির নেতা ছিলেন।

দাড়ি-মোছ কেটে ফেলেছেন কেন? আমি হিমুর ছোট ভাই। তিনি এবার ভাবলেন আর লোকোচুরি করবেন না। বললেন, হ্যা, হ্যা। কেমন আছ তুমি? বললাম ভালো আছি। তিনি মুখ নিচু করে বললেন দিন কাল খারাপ।

কথায় জানালেন, তিনি এখন ইসলামী ব্যাংকে চাকরি করেন। পোস্টিং চট্টগ্রামের চকবাজার ব্রাঞ্চে। রাজশাহী এসেছেন পারিবারিক কাজে। দিনকাল খারাপ বিধায় ক্লিন শেভড হয়ে গেছেন। তার পার্টির কথা জিজ্ঞে ৎস বেচারা খুব খেপে গেলেন।

বললেন অনেক দিনের ভন্ডামী ফাঁস হয়ে গেছে। পার্টির বড় বড় নেতারা তাদের মতো যুবকদের দিয়ে জিহাদ করিয়েছেন। কিন্তু নিজেদের ছেলে মেয়েৎরা এক একটা ভীষণ খারাপ মানুষ। তার মতে বেশির ভাগ জামায়াত নেতার ছেলে-মেয়েরা প্রাইভেট ইউনিতে পড়ে। সিগারেট খায়, মদ খায়।

মেয়েদের সঙ্গে সেক্স করে। মেয়েরাও হিজাব পড়েনা। ছেলেদের সঙ্গে সেক্স করে। আমি টাশকি খেয়ে গেলাম। বলে কি? জামাত খারাপ।

কিন্তু এত খারাপ জানতামনা। তিনি বললেন জামাত নেতা ব্যারিস্টার রাজ্জাকের মেয়ে ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় এক হিন্দু ছেলের সঙ্গে প্রেম কৎরতো। অনেক বার সেক্সও করেছে। ক্যাম্পাসে সবাই জেনে যাওয়ায় তাকে লন্ডনে পড়তে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। অধ্যক্ষ তাহেরের মেয়ে ফারাজানা মাহবুবারও নাকি এমনই রেকর্ড।

চট্টগ্রামে থাকতে এই মেয়ে অনেক ছেলের সঙ্গে প্রেম করেছে। এক ছেলেকে বিয়ে করে ৫ লাখ টাকা মোহরানা ও ১০ ভরি স্বর্ণ আদায় করে তিন মাসের মাথায় তালাক দিয়েছে। এখন আরেক ধনীর দুলালকে বিয়ে করেছে। মনির ভাই খুব দুঃখ করে বললেন, আমরা খেয়ে না, খেয়ে শিবির করলেও জামাত নেতারা ছেলেমেয়েদের এক একটা খচ্চর বানিয়েছেন। তার মতে শিবির ছাড়ার পরে আর তিনি জামায়াত করেন নি।

কিন্তু পুরনো পাপ পিছু ছাড়ে না বিধায় তিনি দাড়ি কেটে ফেলেছেন। নিয়মিত সিগারেট খান। তবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। আমার বড় ভাই হিমু মনির ভাইয়ের সহপাঠী ছিলেন। ভাইয়ার সঙ্গে স্কুল জীবন থেকে পড়েছেন।

ভাইয়া সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট করতেন। ভাইয়ার বন্ধুসূত্রে তিনি নিয়মিত আমাদের বাসায় আসতেন। তার মাধ্যমে প্রভাবি ৎত হয়ে আমিও শিবির করেছিলাম। মানে সমর্থক ফরম পূরণ করেছিলাম। ভাইয়া জেনে বাসায় খুব চিল্লালেন।

মনির ভাইয়েরও আমাদের বাসায় আসা বন্ধ হলো। ভাইয়া এখন প্যারিসে থাকে। ভাইয়া আর আমি খুব ফ্রি। ভাইয়াকে গুগল টকে জানালাম মনির ভাইয়ের পরিণতি। ভাইয়া বললো ওনার কথা নাকি ঠিক আছে।

ভাইয়া জানালো জামায়াত নেতাদের ছেলে মেয়েরা নাকি আরো খারাপ কাজ শুরু করেছে। তারা ইসলামের নামে সাম্রাজ্যবাদের প্রজেক্ট বাস্তবায়ন শুরু করেছে। ইসলামকে বিকৃত করে মডারেট ইসলাম শুরু করেছে। আমিও নেটে মডারেট ইসলাম নিয়ে মার্কিন যু্ক্তরাষ্ট্রের প্রজেক্ট সম্পর্কে অল্প-বিস্তর পড়েছি। তাই আগ্রহ বাড়লো।

ভাইয়া বললো জামায়াত নেতাদের ছেলে-মেয়েরা এখন ইসলামকে বিকৃত করে পশ্চিমা ডিগ্রী ও ডোনেশন ভাগাতে চেষ্টা করছে। ইসলাম সম্পর্কে সামান্য কথা বলেও বাংলাদেশে অনেক প্রগ্রেসিভ লোককে মোল্লারা কাফের-মুরতাদ বলেছে। কিন্তু জামাত নেতাদের ছেলেমেয়েরা ইসলামের কোরান-হাদিস নিয়াও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। তারা রিসার্চ করে দেখাচ্ছে ইসলামে কী কী ভুৎল। বিষ্মিত হলাম।

এতদূর! ভাইয়া অধ্যক্ষ তাহেরের মেয়ে ফারজানার ব্যাপারে বললো। এই মেয়ে নাকি যাযাবর নামে ব্লগিং করে। সে নাকি তার লেখায় ইসলামের বিভিন্ন প্রথাকে আক্রমণ করে লেখে। ভাইয়া জানালো আসলে জামায়াতের নেতাদের ভন্ডামী বাচ্চাদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ছে। অধ্যক্ষ তাহের এক সময় কিন্ডারগার্টেন স্কুলের অধ্যক্ষ ছিল।

সেই পরিচয়কে তিনি এমনভাবে ব্যবহার করে যে আসলে কোন কলেজের অধ্যক্ষ ছিল। ভাইয়াকে আমি বললাম তুমি এতো কিছু জান কিভাবে? ভাইয়া বললো ইউরোপে শিবিরের প্রচুর ছেলে থাকে। তারা পার্টির নেতাদের ভন্ডামী নিয়া খুব সোচ্চার। তারা অনেক কিছু নাকি শেয়ার করে। ভাইয়া আমাকে বললো যাযাবরের লেখা পড়তে সোনার বাংলা ব্লগে যেতে।

এই ব্লগ সম্পর্কে ভাইয়া বলল ব্লগটি চালায় শিবিরের কিছু সাবেক সাংবাদিক ও ইঞ্জিনিয়ার। তাদের মধ্যে একজন নাকি দিনাজপুরের মোকাররম। আরেক জন নিউএজের সাংবাদিক হৃদয়। এরা সবাই মডারেট মুসলমান। ব্লগে ৎর নাম করে ইহুদী লবীর টাকা খাচ্ছে।

আর ফারাজানাসহ জামাত নেতাদের ছেলে-মেয়েরা এখানে নিজেদের প্রজেক্টেৎর ক্যাম্পেইন করেছে। এই ব্লগে তারাই ইসলাম সম্পর্কে নোংরা পোস্ট দিচ্ছে। ভাইয়া জানালো এক মজার তথ্য। সামুতেও নাকি জামাত নেতাদের-ছেলেমেয়েরাই ইসলাম বিদ্বেষী পোস্টগুলো দিচ্ছে ছদ্ম নিকে। আমি আগ্রহী হয়ে সোনার বাংলাৎ ব্লগে ফারজানার ব্লগ দেখতে গেলাম।

সেখানে এক পোস্টে দেখলাম এক ব্লগারের প্রশ্নের জবাবে (১৮ নম্বর মন্তব্যের জবাব) সে বলছে- ইসলামের এমন কোন হুকুমত কি দুনিয়াতে খুজে পেয়েছ যেখানে শরীয়া ও সুন্নাহ নারীর প্রতি সংঘটিত সহিংসতাকে প্রশ্রয় ও পৃষ্ঠপোষণ দেয়? "প্রয়োজনে স্ত্রীকে প্রহার" "অর্ধেক সাক্ষ্য" "পুরুষের বাঁকা হাড় থেকে নারীর সৃষ্টি" "নারীর জ্ঞান ও বুদ্ধি পুরুষের অর্ধেক" -এগুলো মনে হয় আরবীতে লিখে দিলে বিশ্বাস হবে আপনার যে এগুলো কোর'আন আর হাদীসের কথা। তার এই মন্তব্য পড়ে আশ্চর্য হলাম। মেয়ে বলে কি? কোরআনের এই সব কথা বার্তা নিয়ে তার আপত্তি! জামাত নেতার মেয়ে না হয়ে অন্য কেউ এমন কথা লিখলে তার ব্যাপারে জামাতের হুজুরদের কি ফতোয়া হতো? আশি শিবির করি নাই। কিন্তু ধর্ম হিসেবে ইসলামকে এখনো গুরুত্ব দেই। কতো সরলপ্রাণ মানুষ এ ধর্মকে পালন করছে।

আর সেই ধর্মকে মাথায় পট্টিলাগিয়ে জামাতীরা বেচাবিক্রি করছে!
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।