নায়িকারা এই মাটির কেউ নয়, ধরাছোঁয়ার বাইরের তারা, মাটির কয়েক ইঞ্চি ওপর দিয়ে হাঁটে—ছোটবেলায় নায়িকা সম্পর্কে এমনই ধারণা ছিল আমার। একসময় ধরাছোঁয়ার মধ্যে যাদের নায়িকা মনে হতো, তারা সবাই ছিল পাশের বাড়ির মেয়ে। আমার প্রথম নায়িকা-দর্শন সিনেমার পর্দায়, সারেং বৌ ছবিতে কবরীকে। ‘সারেংয়ের বেটা কী বেহাইয়া গো’—কবরীর এই সংলাপের মধ্যে যে অদ্ভুত রোমান্টিকতা ছিল, সেটি ছোটবেলায় না বুঝলেও এখন বুঝি। তবে বাস্তব জীবনে এখন অবশ্যই আমার বউ জুঁই-ই আমার নায়িকা (ইদানীং টেলিভিশনের পর্দায়ও তাকে নায়িকা হিসেবে পাই)।
পর্দায় আমার নায়িকাদের সম্পর্কে বলতে গেলে অনেকের কথাই আসবে। তিশা, সুমাইয়া শিমু, অপি করিম—আরও কত নাম! সম্ভবত তিশার সঙ্গেই আমার বেশি কাজ করা হয়েছে এ পর্যন্ত। এই নায়িকা গুণী অভিনেত্রী। সাধারণত একজন শিল্পী তাঁর সহশিল্পীর কাছ থেকে যে রকম সহযোগিতা আশা করেন, তিশা তার ষোলো আনাই দিতে সচেষ্ট। এ কারণে তাঁর সঙ্গে কাজটাও আমার জমে ভালো।
বাস্তবে আমাদের সম্পর্কটি বন্ধুত্ব ও হাসি-তামাশার। N এখন সুমাইয়া শিমুর কথা বলি। শিমুর সঙ্গে বেশ কয়েকটি ধারাবাহিকসহ বিভিন্ন নাটকে কাজ করেছি। অনেক নাটকে সে আমার নায়িকা হলেও হাউসফুল ধারাবাহিকে করেছিল আমার ভাগনির চরিত্র। সেই থেকে পথে-ঘাটে নানা জায়গায় শিমু আমাকে মামা বলে ডাকে।
এতে কখনো হয়তো আমি খেপে গিয়ে বলি, এই, খবরদার! আমাকে মামা বলবা না। তখন তার বাঁধভাঙা হাসি দেখে কে! ওর সঙ্গে কাজ করে একটা আলাদা মজা পাওয়া যায়। কারণ, নাটকে তাৎক্ষণিকভাবে আমি কোনো অ্যাকশন করলে শিমু সুন্দরভাবে রি-অ্যাকশন দিতে পারে। চরিত্রের মধ্যে ও আস্তে আস্তে প্রবেশ করে; কিন্তু একসময় দেখা যায়, চরিত্রটি সে দখল করে নিয়েছে। সু-অভিনেত্রী ছাড়া এটা সম্ভব নয়।
নায়িকাদের কথা বলার ক্ষেত্রে একটা বিপদ আছে। নানাজনের সঙ্গে কাজ করেছি। তাদের মধ্যে অনেকেই ভালো অভিনয়শিল্পী। এই স্বল্প পরিসরে কার কথা বলব? একজন সম্পর্কে বলতেই তো দিস্তা কাগজ ফুরিয়ে যাবে। তাই আপাতত বিদায় নায়িকাগণ! ভবিষ্যতে তোমাদের কথা আরও বিশদ লিখব।
এখন তবে একটু বউবন্দনা করি। পাঠক, বিশ্বাস করুন, এতক্ষণ যাদের কথা বললাম, তারা কেউই আমার আসল নায়িকা নয়। আমার খাস নায়িকা আমার বউ জুঁই। তার মধ্যে একই সঙ্গে আমি সমাপ্তির মৃণালিনী, পথের পাঁচালীর দুর্গা ও লালসালুর জমিলাকে পাই। সে আমার একের ভেতরে তিন।
অনুলিখন:।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।