এবার এইচএসসি পরীক্ষার সময় রাজনৈতিক অস্থিরতা ছিল সীমাহীন। এর প্রভাব পড়েছে ফলাফলে। হরতালের কারণে ৩২টি পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। এর মধ্যে কোনোটির তারিখ পাঁচবার বদলানো হয়। এই চাপ শিক্ষার্থীরা নিতে পারেনি।
এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের চাপ নেওয়ার একটা সীমা আছে। পরীক্ষার তারিখ, সময়, প্রস্তুতি এগুলো নিয়ে তাদের একটা মাইন্ডসেট থাকে। সেখানে ব্যতিক্রম হলে অবশ্যই এর খারাপ প্রভাব ফলাফলে পড়ে। সোমবার আরটিভির টক-শো 'আওয়ার ডেমোক্রেসি'-তে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী এ কথা বলেন। জামিল আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত।
ড. আজাদ বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর ৪ শতাংশ অর্থাৎ ৪০ হাজার শিক্ষার্থী বেশি ফেল করেছে। জিপিএ-৫-এর সংখ্যাও কমেছে। অথচ শিক্ষার মানের সঙ্গে অন্য হারগুলো প্রতি বছর বাড়ার কথা। তা সমান থাকলেও কথা ছিল। এবার নিম্নমুখী হয়েছে, যা উদ্বেগের বিষয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রথম বিষয় হচ্ছে শিক্ষার্থীর জ্ঞান আহরণে আগ্রহ। এর পরে শিক্ষা পদ্ধতি ও স্বাভাবিকভাবে পরীক্ষার পরিস্থিতি, রাজনীতি সবকিছুই ফলাফলে প্রভাব ফেলে। এবার রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরীক্ষার্থীদের জন্য অনুকূল ছিল না। ড. আজাদ রাজনীতিবিদদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, শিক্ষাজীবন যাতে ব্যাহত না হয় সেদিকটা মাথায় রাখুন। আগামী প্রজন্ম ভবিষ্যৎ অর্থনীতির চালিকাশক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারাই জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তির বিকাশ ঘটাবে, দেশকে এগিয়ে নেবে।
তাদের বিকশিত হওয়ার পথ রুদ্ধ করে দিলে দেশে যে-ই ক্ষমতায় আসুক তাতে জনগণের কোনো লাভ হবে না।
তিনি বলেন, দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলে প্রথম বর্ষে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ আসন আছে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েই রয়েছে ৫ লাখ ২০ হাজার আসন। সুতরাং ভর্তি হতে কোনো সমস্যা হবে না। প্রতিযোগিতা হবে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় ও বিষয় নিয়ে।
এর বাইরে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও চুয়েট, বুয়েট, রুয়েটের মতো প্রযুক্তিভিত্তিক অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেসরকারি পর্যায়ে গড়ে উঠেছে। কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুণগতমানে অনেক এগিয়ে গেছে। তারাও অনেক শিক্ষার্থীকে সুযোগ দিতে পারবে। তবে তাদের বেতন কাঠামো মধ্যবিত্তদের জন্য নয়। আরেক প্রশ্নের জবাবে ড. এ কে আজাদ বলেন, বিস্তৃতির দিক দিয়ে এশিয়ার মধ্যে চীন, ভারতের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান।
২৬ লাখ শিক্ষার্থী আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়ে। তবে গুণের ব্যাপারে কোনো আপস করা যাবে না। কথায় আছে_ 'মানের সঙ্গে আপস করে বিস্তার ঘটালে তা বিপর্যয় ডেকে আনবে'। এ বিপর্যয় রোধ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বিভিন্ন কাজ করছে। কমিউনিটি কলেজগুলোকে শক্তিশালী করতে পদক্ষেপ নিয়েছে।
কিন্তু এখানে একটা বৈপরীত্য চোখে পড়েছে। কমিউনিটি কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আর শিক্ষকদের নিয়োগ-পদোন্নতি নিয়ন্ত্রণ করে মন্ত্রণালয়। দেখা যায়, স্নাতক পর্যায়ে বিষয়ভিত্তিক এমন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে যার সে যোগ্যতাই নেই। অথবা পরীক্ষার আগে বদলি করে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু করার থাকে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।