আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশে তৈরি আরও একটি জাহাজ ছিনতাই করেছে সোমালীয় জলদস্যুরা।

সকালের মিষ্টি রোদ পেরিয়ে আমি এখন মধ্যগগনে,

বাংলাদেশে তৈরি আরও একটি জাহাজ ছিনতাই করেছে সোমালীয় জলদস্যুরা। চট্টগ্রামের ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডে নির্মিত 'গ্রোনা এমারসন' (বর্তমান নাম 'ইএমএস রিভার') নামে জাহাজটিও ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছে। ভারত থেকে গ্রিসে যাওয়ার পথে মঙ্গলবার রাতে গালফ অব এডেনে ছিনতাইয়ের শিকার হয় এটি। চট্টগ্রামে এসে ২৬ নভেম্বর ৫ হাজার ২০০ টন ধারণক্ষমতার এ জাহাজটি বুঝে নেয় জার্মানির মালিক গ্রোনা শিপিং। ছিনতাইয়ের বিষয়টি স্বীকার করেন ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাখাওয়াত হোসেন।

গতকাল বুধবার জার্মান মালিকের কাছে ফোন করে এ বিষয়ে নিশ্চিত হন বলে জানান তিনি। এদিকে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে মুক্তিপণের ৫৫ লাখ ডলার দিয়ে সোমালীয় দস্যুদের হাত থেকে সোমবার মুক্ত করা হয়েছে জার্মানির মালিকানাধীন একটি জাহাজ। আট মাস ধরে এ জাহাজে জিম্মি ছিলেন ২২ জন নাবিক ও ক্রু। তাদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশি দুই নাবিকও। একই প্রক্রিয়ায় সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছ থেকে বাংলাদেশি জাহাজ 'জাহান মণি' এবং জিম্মি ২৬ নাবিক ও ক্রুকে মুক্ত করতে চায় মালিক পক্ষ।

জিম্মিদের মুক্ত করতে প্রথমে অস্ট্রেলিয়ার একটি প্রতিষ্ঠানকে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে চিন্তা করেছিল জাহান মণির মালিক পক্ষ ব্রেভরয়েল শিপিং। কিন্তু তাদের শেষ পর্যন্ত নির্ভরযোগ্য মনে না হওয়ায় এখন হেলিকপ্টারের মাধ্যমে মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে স্বীকার করেছে মালিকপক্ষ। বিষয়টি অবহিত করতে জাহান মণি জাহাজে আটক ২৬ জিম্মির স্বজনদের আজ বৃহস্পতিবার নগরীর সেন্টমার্টিন হোটেলে আমন্ত্রণ জানিয়েছে তারা। জানা গেছে, সোমালিয়ার দস্যুদের হাত থেকে মুক্ত হওয়া জার্মানির মালিকানাধীন 'এমটি মারিডা মারগুরিড' নামে জাহাজে রয়েছেন চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমী থেকে পাস করা দুই ক্যাডেট। তারা হচ্ছেন জাহাজের চিফ অফিসার জাফর ইকবাল ও সেকেন্ড অফিসার এবিএম গিয়াসউদ্দিন আজম খান।

৫৫ লাখ ডলার মুক্তিপণ দিয়ে এ জাহাজের ২২ নাবিক ও ক্রুর সবাই মুক্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে এ দুই জিম্মির পরিবার। ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, গত ৮ মে ওমানের সালালা বন্দরের ১২০ মাইল দক্ষিণে গিয়ে এটি সোমালিয়ান দস্যুদের কবলে পড়ে। শেষ পর্যন্ত সোমবার হেলিকপ্টার থেকে মুক্তিপণের ৫৫ লাখ ডলার ছুড়ে দিয়ে জাহাজ ও জিম্মিদের মুক্ত করে এ জাহাজের মালিক পক্ষ। জলদস্যুদের আস্তানা ছেড়ে জাহাজটি বাহরাইনের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে জাহাজে থাকা সেকেন্ড অফিসার এবিএম গিয়াস উদ্দিন আজম খানের বাবা আবুল বশর চৌধুরী সমকালকে বলেন, 'মুক্ত হওয়ার পর মঙ্গলবার রাত ৯টায় আমার সঙ্গে কথা বলে সে।

গিয়াস জানায়, সবাই পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে উদগ্রীব হয়ে আছে। বেশিক্ষণ কথা বলা যাবে না। আমরা মুক্ত হয়েছি। এখন বাহরাইন যাচ্ছি। পাঁচদিন পর সেখানে পেঁৗছে সবার সঙ্গে কথা বলব।

' তবে গতকাল বুধবার আবার ফোন করার সুযোগ পেয়েছেন গিয়াস। এবার তিনি কথা বলেছেন স্ত্রী বিবি ফাতেমার সঙ্গে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক আবুল বশর চৌধুরী আরও জানান, জিম্মি অবস্থায় ছেলের সঙ্গে তাদের সর্বশেষ কথা হয় রমজানের প্রথম সপ্তাহে। গত পাঁচ মাস পরিবারের কারও সঙ্গে গিয়াসকে কথা বলতে দেয়নি দস্যুরা। এদিকে দস্যুদের হাতে আটক বাংলাদেশি জাহাজ 'জাহান মণি' উদ্ধারেও তৎপরতা শুরু করেছে মালিক পক্ষ ব্রেভ রয়েল শিপিং।

মুক্তিপণের অঙ্ক ৯০ লাখ ডলার থেকে কমাতে দস্যুদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছেন তারা। তবে তৃতীয় কোনো পক্ষ না থাকায় তাদেরও হেলিকপ্টারের মাধ্যমে মুক্তিপণের টাকা দিতে হবে। এ প্রসঙ্গে কবির গ্রুপের চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। তবে কবির গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ব্রেভ রয়েল শিপিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহেরুল করিম বলেন, 'দস্যুদের মুক্তিপণের টাকা দিতে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হচ্ছে হেলিকপ্টার। তাই আমরাও সে বিষয়টি মাথায় রেখে সামনে এগোচ্ছি।

' তবে দস্যুদের সঙ্গে তাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে না বলে জানান তিনি। মেহেরুল করিম বলেন, 'দস্যুদের সঙ্গে আমাদের সর্বশেষ কথা হয় ২৬ ডিসেম্বর। সেদিন যে কথা হয়েছে তা জানাতে জিম্মিদের পরিবার ও স্বজনকে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম আসতে বলেছি আমরা। ' সুত্র

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.