বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) কয়েকটি অবকাঠামো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠান উপলক্ষে গতকাল প্রায় দিনভর হাসপাতালে সব ধরনের চিকিত্সা কার্যক্রম বন্ধ থাকে।
হাসপাতালের ভেতর ও বাইরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আসা অতিথি, নিরাপত্তারক্ষীদের কারণে পুরো হাসপাতাল অবরুদ্ধ থাকে দুপুরের পর পর্যন্ত।
চিকিত্সা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় প্রায় অর্ধশত রোগীর নির্ধারিত জরুরি অপারেশনও গতকাল হয়নি। একদিকে মুমূর্ষু কোনো রোগীকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা যায়নি, অন্যদিকে চিকিত্সার প্রয়োজনে রোগীদের এ হাসপাতাল থেকে অন্য কোনো হাসপাতালেও নিতে পারেননি। প্রধানমন্ত্রী হাসপাতাল থেকে চলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত লাশ নিয়েও কেউ বেরুতে পারেননি।
গতকাল ভোরে মারা যাওয়ার পরও হাসপাতালের সি-ব্লকের নিচতলায় এক রোগীর লাশ নিয়ে স্বজনরা দাঁড়িয়ে থাকেন দুপুর ১টা পর্যন্ত। প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান শুরুর আগে ও চলাকালে চিকিত্সকরা ছিলেন চরম ব্যস্ত। তারা রোগীর ওয়ার্ডেও তখন যাননি। অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পরও অনেক চিকিত্সক প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনায় ব্যস্ত থাকেন। তাতে রোগী ও তাদের স্বজনরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
ভিড় লেগে যায় নিরাপত্তা বলয়ের বাইরে। রোগী ও তাদের স্বজনের আহাজারিতে হাসপাতালের বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।
তথ্যমতে, সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের সময় নির্ধারিত ছিল। বিএসএমএমইউ সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালে উপস্থিত হন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। তিনি পৌনে একটা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন।
এ সময় হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে শুরু করে আন্তঃবিভাগে সব ধরনের চিকিত্সা কার্যক্রম বন্ধ থাকে। সূত্রমতে, হাসপাতালটির সার্জারি অনুষদের দশটি বিভাগে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০ রোগীর অপারেশন হয়। গতকাল তা হয়নি। অতীতে এভাবে কোনো সময়ে এ হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান উপলক্ষে চিকিত্সা কার্যক্রম বন্ধ থাকার ঘটনা ঘটেনি বলেও সূত্র উল্লেখ করে।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর এ অনুষ্ঠানে ভিন্নমতে বিশ্বাসী চিকিত্সকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
একাধিক চিকিত্সকের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষের কেউ তাদের মৌখিকভাবেও আমন্ত্রণ জানাননি। ফলে তাদের অনেকে গতকাল হাসপাতালে উপস্থিত হননি। তাতেও অনেক রোগীর দুর্ভোগ বাড়ে। এ প্রসঙ্গে বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্তের বক্তব্য নানাভাবে চেষ্টা করেও জানা সম্ভব হয়নি।
গতকালের অনুষ্ঠানে প্রদত্ত বক্তৃতায় খেটে খাওয়া মানুষের ঘামে ভেজা টাকায় চিকিত্সক হওয়ার ঋণ সেবা দিয়ে পরিশোধ করার জন্য চিকিত্সকদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের জন্য মানসম্পন্ন চিকিত্সাসেবা নিশ্চিত করা এবং গবেষণার পরিধি বাড়াতে চিকিত্সকদের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানসহ ওষুধ প্রস্তুতকারকদের এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান তিনি। ৪০ শয্যার নতুন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র, অর্টিজম সেন্টার উদ্বোধনসহ প্রধানমন্ত্রী আউটডোর পেসেন্ট ডিপার্টমেন্টের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
Click This Link
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।