আইসিটি নীতিমালা সংশোধনপূর্বক প্রণয়ন, ইন্টারনেটে ট্যাক্স আদায়, ভিওআইপি উন্মুক্তকরণ, স্বল্পমূল্যে ল্যাপটপ কম্পিউটার প্রদানের উদ্যোগ, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দুটি করে কম্পিউটার প্রদানসহ ল্যাব স্থাপন, টেলি কনফারেন্স সুবিধা, উপজেলা স্তরে তথ্য সেবাকেন্দ্র চালুকরণ, জেলা তথ্য বাতায়ন চালুকরণ, ইন্টারনেট ও মোবাইলে ভর্তি কার্যক্রম, ডিজিটাল পুর্জি, ইন্টারনেট রেডিও চালুকরণ, ইজিপট চালুকরণ, মোবাইল নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি, থ্রিজি নেটওয়ার্ক চালুর উদ্যোগ ইত্যাদি।
অন্যতম প্রয়োজন ছিল একটি যুগোপযোগী আইসিটি নীতিমালা। সরকার এ বছর আইসিটি নীতিমালার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। আইসিটি নীতিমালা প্রণয়নের ফলে তথ্যপ্রযুক্তিতে একটি গুণগত পরিবর্তন ও উন্নতি হবে বলে আশা করা যায়। যে কোন কাজেরই একটি নির্দিষ্ট লৰ্য ও বাস্তবায়নের দিকনির্দেশনা থাকা উচিত।
প্রণীত আইসিটি নীতিমালা সেই কাজটি করবে বলে আশা করা যায়।
বাংলাদেশে সমর্থবান অনেকে নানা জটিলতার কারণে ট্যাক্স প্রদান করেন না। এই ট্যাক্স প্রদানকে ঝামেলামুক্ত করতে এবং সহজে ট্যাক্স প্রদানের লৰ্যে এ বছর ইন্টারনেটে ট্যাক্স প্রদান ব্যবস্থা চালু করা হয়। এই সুবিধার কারণে এ বছর ট্যাক্স আদায় আগের বছরের তুলনায় অনেক বেড়েছে। প্রযুক্তির এই ব্যবহার ডিজিটাল বাংলাদেশেরই একটি অংশ।
অবৈধ ভিওআইপি অনেক আগে থেকে বাংলাদেশে চালু হয়ে আসছে। এই অবৈধ ভিওআইপি বন্ধ করা এবং ইন্টারনেটে সহজে যোগাযোগ স্থাপনের লৰ্যে সরকার এ বছর ভিওআইপি উন্মুক্ত করে দেয়। এর ফলে এখন স্বল্প মূল্যে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বের যে কোন প্রানত্মে কথা বলার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, যা এতদিন অবৈধ ছিল। অবশেষে এ বছরই তা বৈধতা পেয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তির প্রসার ব্যাপক হলেও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য চাই প্রযুক্তি ব্যবহারের সরঞ্জামের যথেষ্ট প্রাপ্যতা।
স্বল্পমূল্যে প্রযুক্তি উপকরণ পাওয়া গেলে প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসার ঘটানো সম্ভব। আর এ লৰ্যে সরকার স্বল্পমূল্যে ল্যাপটপ প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ উদ্যোগ যথাযথভাবে বাসত্মবায়িত হলে অবিলম্বে জনগণের হাতে এই ল্যাপটপ পেঁৗছে যাবে বলে আশা করা যায়। এছাড়া সরকার এ বছর দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে অনেক বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে।
এসব ল্যাবের যথাযথ ব্যবস্থার করা হলে এর সুফল অবিলম্বে পাওয়া যাবে। এসএসসি পরীৰার ফলাফল এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিজ নিজ শিৰাপ্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার থেকে পাওয়া যাবে।
সরকারী শিৰাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তি বাণিজ্য নিয়ে অভিযোগ ওঠে প্রায়ই। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে এই অভিযোগ থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। ইতোমধ্যে সরকার বিভিন্ন শিৰাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য ইন্টারনেটে, মোবাইলের এসএমএসের মাধ্যমে ফরম বিক্রি ও ভর্তির ব্যবস্থা নিয়েছে।
এ বছর প্রথম দেশের সকল সরকারী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ইন্টারনেটের মাধ্যমে অর্থাৎ অনলাইনে ভর্তি ফরম পূরণ ও ভর্তির মাধ্যমে এক বিরল দৃষ্টানত্ম স্থাপন করা হয়েছে। শিৰা মন্ত্রণালয়, কারিগরি শিৰা অধিদফতর ও বাংলাদেশ কারিগরি শিৰা বোর্ড যৌথভাবে এই কার্যক্রম সফল করে।
আখ চাষিদের আখ বিক্রির জন্য আগে আখ কেটে মিলের সামনে লাইন ধরতে হতো। কৃষকের কেটে আনা আখ কবে মিল কর্তৃপৰ কিনে নিবে তার কোন সঠিক তারিখ ছিল না। ফলে অনেক সময় কৃষকদের আখ নিয়ে বেকায়দায় পড়তে হতো।
সরকার এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য চালু করেছে 'ডিজিটাল পুর্জি'। ডিজিটাল পুর্জির মাধ্যমে এখন আখ চাষিরা মিল কর্তৃপৰের একটি এসএমএসের মাধ্যমে জানতে পারবে কবে মিল কর্তৃপৰ আখ কিনবে। আর সে অনুযায়ী কৃষক আখ কেটে মিলগেটে হাজির হবেন এবং তার আখ বিক্রি করবেন। দেশের কৃষি সেক্টরে প্রযুক্তির আরও ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
আনত্মর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা (ওঈঅঙ)-এর নীতিমালা অনুযায়ী এ বছরের এপ্রিল থেকে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট ও ভিসা চালুর বাধ্যবাধকতা করা হয়েছে।
অনেকেরই কৌতূহল থাকতে পারে কেমন ধরনের এই পাসপোর্ট? মূলত এটি দেখতে অনেকটা সাধারণ পাসপোর্টের মতো। মূল পার্থক্য হলো মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বিমানবন্দরে রাখা কম্পিউটার পড়তে পারে। কিন্তু হাতে লেখা পাসপোর্ট কম্পিউটার পড়তে পারে না। আনত্মর্জাতিক নিয়মানুযায়ী বিগত এপ্রিল থেকে এই পাসপোর্ট চালুর বাধ্যবাধকতা থাকলেও যাঁরা হাতে লেখা পূর্বের পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন তাঁরা এই পাসপোর্ট ২০১৫ সাল পর্যনত্ম ব্যবহার করতে পারবেন। তবে বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী ২০১৫ সালের পর এই পাসপোর্ট আর ব্যবহার করা যাবে না।
তাই কোন ব্যক্তিকে বিদেশে যেতে কিংবা প্রবাসীদের দেশে ফিরে আসতে হলে বিমানবন্দরের ভোগানত্মি এড়াতে চাই মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট। ইন্টারনেটে িি.িফরঢ়.মড়া.নফ ওয়েবসাইট থেকে মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের আবদেনপত্র সংগ্রহ করা যাবে। মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট এ বছর থেকে চালু করা হয়েছে।
বিশ্বমানের মোবাইল ফোন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান 'ইজিটপ' বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরম্ন করেছে এই বছরের শেষের দিকে। এই প্রতিষ্ঠানের সেবার মাধ্যমে বিশ্বের যে কোন দেশে অবস্থান করে বাংলাদেশের মোবাইল ফোনে এ্যাকাউন্ট রিচার্জ করা যাবে।
ইউরোপ-আমেরিকায় মোবাইল ফোনে এ্যাকাউন্ট রিচার্জের এ সুবিধাটি পুরনো হলেও বাংলাদেশে এটিই প্রথম উদ্যোগ।
থ্রিজি নেটওয়ার্ক বাংলাদেশে চালু হতে যাচ্ছে। এ উদ্যোগ এ বছর নেয়া হয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে থ্রিজি নেটওয়ার্ক চালু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এই নেটওয়ার্ক স্থাপনে কারিগরি সহায়তা করবে চীন।
জানা গেছে, বাংলাদেশে থ্রিজি নেটওয়ার্ক চালু হলে পাশর্্ববতর্ী দেশ ভারতের চেয়েও সসত্মায় মিলবে এই সেবা।
বছরের শেষের দিকে চালু হয়েছে ইন্টারনেট রেডিওর যাত্রা। এখন থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে রেডিও শোনা যাবে। সীমাবদ্ধতার দূরত্ব ঘুচিয়ে দিয়েছে ইন্টারনেট রেডিও। সুরের মূর্ছনায় মন রাঙাতে কিংবা গল্প-আড্ডার ভুবনে হারিয়ে যেতে ইন্টারনেট রেডিও হয়ে উঠছে তরম্নণদের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম।
কর্মব্যসত্মতার মাঝে তরম্নণদের মুহূর্তগুলোকে রাঙিয়ে চলেছে এই ইন্টারনেট রেডিও। এফএম রেডিওর পাশাপাশি ইন্টারনেট রেডিও এখন বেশ জনপ্রিয়। দূরত্বের সীমাবদ্ধতা ঘুচিয়ে দিয়েছে ইন্টারনেট রেডিও। টেলিকনফারেন্স এখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন জরম্নরী সময় দেশের প্রত্যনত্ম অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করে দিকনির্দেশনা প্রদান করছেন।
রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ টেলিকনফারেন্সকে তাদের যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিচ্ছেন।
সরকারী তথ্য পাওয়ার অধিকার সকলেরই আছে। সরকার প্রতিটি উপজেলায় তথ্যকেন্দ্র চালু করেছে। যেখান থেকে সরকারী বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ বা জানা যাবে। প্রতিটি জেলার সরকারী ওয়েব পোর্টাল চালু করা হয়েছে।
এর মাধ্যমে বিভিন্ন জেলার তথ্য এখন ঘরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব। বাংলাদেশের প্রত্যনত্ম অঞ্চলে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কের বিসৃত্মতি এ বছর বেশ ঘটেছে। পার্বত্য অঞ্চল মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে সরকারী ও বেসরকারী প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সরকারের অন্যতম ঘোষণা এবং ভিশন।
এই ভিশন বাসত্মবায়নে সরকারী ও বেসরকারী সকলেরই অংশগ্রহণ প্রয়োজন।
Click This Link
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।