আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ.....

পড়ো, তোমার প্রতিপালকের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন জমাটবদ্ধ রক্ত হতে। পড়ো, আর তোমার প্রতিপালক মহিমান্বিত, যিনি কলমের দ্বারা শিক্ষা দিয়েছেন। শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না। (আল-কুরআন, সূরা-আলাক, আয়াত ১-৫)

بسم الله الرحمن الرحيم الحمد لله رب العالمين، والصلاة والسلام على سيدنا محمد وآله وصحبه وأتباعهم أجمعين. সবাইকে নতুন বছরের নতুন চাঁদের শুভেচ্ছা*** হে মানুষ! "বাচঁতে হলে জানতে হবে",অবশ্যই আপনাকে "বাচঁতে হলে জানতে হবে"।

এই কথাটির ব্যাখ্যা অনেকে অনেক ভাবে করে থাক। আজ আমি একটু ভিন্ন ভাবে ব্যাখ্যা করব ইনশাল্লাহ...। সকল শ্রেণীর মানুষের প্রতি আহব্বানঃ- হে মানুষ! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর। যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এক নফস থেকে। আর তা থেকে সৃষ্টি করেছেন বহু পুরুষ ও নারী।

আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যার মাধ্যমে তোমরা একে অপরের কাছে চেয়ে থাক। হে মানুষ জাতি প্রজ্জলিত আগুনের শাস্তি থেকে "বাচঁতে হলে জানতে হবে" তোমার করনিয় কি? পড়ো, তোমার প্রতিপালকের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন জমাটবদ্ধ রক্ত হতে। পড়ো, আর তোমার প্রতিপালক মহিমান্বিত, যিনি কলমের দ্বারা শিক্ষা দিয়েছেন। শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না।

(আলাক-১-৫) "বাচঁতে হলে জানতে হবে" জানার জন্য প্রথম শর্ত আপনাকে পড়তে হবে বা শুনতে হবে। মানুষ যা জানত না সৃষ্টিকর্তা তা শিক্ষা দিয়েছেন, পৃথিবীর প্রায় সব মানুষই একেক জন একেক ধর্মের উপর বিশ্বাষী, তারা তাদের জীবনকে পরিচালনা করে তাদের ধর্মগ্রন্থ দিয়ে। অথচ, তাদের ধর্মগ্রন্থে কি বলেছে তা অধিকাংশ মানুষ জানে না। তাদের সে সমস্ত ধর্মগ্রন্থে প্রধান প্রধান যে বিষয়গুলো আছে তাঃ- তোমরা এমন এক কথার দিকে আস, যেটি তোমাদের মধ্যে ও আমাদের মধ্যে সমান যে, আমরা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া (যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন) কারো ইবাদাত না করি। আর তার সাথে কোন কিছুকে শরীক না করি এবং আমাদের কেউ কাউকে আল্লাহ ছাড়া রব হিসেবে গ্রহণ না করি।

(ইমরান-৬৪) প্রত্যেক মানুষের কাছে তার সৃষ্টিকর্তা উর্দ্দে কাওকে প্রাধান্য দেওয়া মোটেও ঠিক না। প্রতিটি মানুষের জীবনের উদ্দেশ্য আছে। উদ্দেশ্যকে লক্ষ্য করে মানুষের জীবনের গতি নির্ধারক। লক্ষ্য উদ্দেশ্য মানুষকে দেয় সফল হওয়ার প্রেরণা। মরিয়া হয়ে চেষ্টা-সাধনা করার আকাঙ্ক্ষা।

আর লক্ষ্য যত বড় হবে ত্যাগ ও তিতিক্ষাও সে অনুপাতে বেড়ে যাবে। কর্মচাঞ্চল্য বেড়ে যাবে। অর্জন হবে অভীষ্ট সফলতা যদি কেউ নিজেকে পরিষ্কার ও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার মাঝে দৃঢ়তার সাথে ধরে রাখে। বর্তমান প্রবন্ধে একজন মানুষের জীবনে লক্ষ্য কি হওয়া উচিত এবং কিভাবে তা নির্ধারণ করতে হবে তাই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছেঃ- মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। জল-স্থলের সর্বত্র মানুষের কতৃত।

মহাশূন্যেও তার দৃপ্ত পদচারণা। পৃথিবী এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। বিজ্ঞানের নানা আবিস্কার মানুষের বুদ্ধিবৃত্তির ফসল। তাই মানুষকে এখন আর অসহায় প্রাণী বলে ভাববার কোন অবকাশ নেই। কিন্তু কি উদ্দেশ্যে মানুষের আগমন এই পৃথিবীতে? কি তার করণীয়? তার জীবনের স্বরুপ কি? এসব মৌলিক প্রশ্নের দিকে তাকাবার সুযোগ পায় খুব কম মানুষ।

অথচ প্রতিটি মানুষের প্রাথমিক কর্তব্য ছিল এ প্রশ্নগুলোর সমাধান খুজেঁ বের করার চেষ্টা করা। একটি উন্নত জীবনের অপরিহার্য দাবীসমুহের মধ্যে এই চিন্তাভাবনা অন্তর্ভূক্ত। মানুষের লক্ষ্য হচ্ছে জীবনের গতি নির্ধারণ। হাল ছাড়া নৌকা যেমন গন্তব্যের পানে অগ্রসর হতে পারে না, লক্ষ্যহীন জীবনে তেমনি সাফল্যের আশা করা যায় না। বিশেষ মর্যাদা দান করে মানুষকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে তার জন্যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা প্রয়োজন।

কারণ, মানুষকে এখানে নিরর্থক পাঠানো হয়নি। (মুমিন-১১৫) এক বিশেষ উদ্দেশ্য সামনে রেখে মানুষকে দুনিয়াতে পাঠানো হয়েছে। মানুষের উচিৎ আল্লাহর সে উদ্দেশ্য সফল করার জন্যে নিজ জীবন পরিচালনা করা। ইমাম গাযযালী (রহ) বলেন, মানুষ অনদি নয়, তাই চিরস্থায়ী। অর্থাৎ মানব জীবনের শুরু আছে শেষ নেই।

তাই মানুষের উচিৎ এমন লক্ষ নির্ধারণ করা যা তার চিরস্থায়ী জীবনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। পার্থিব জীবন ক্ষণস্থায়ী, তাই যদি কেউ পার্থিব জীবনের মধ্যে তার জীবনের লক্ষ্য সীমিত রাখে, তাহলে তা হবে বুদ্ধিমত্তার পরিপন্থি। একজন বুদ্ধিমান ব্যক্তি কি কোথাও ভ্রমনে গিয়ে সেখানে স্থায়ী নিবাস গড়ে তোলে, আবার নিজ বাড়ীতে কেউ তাবু টানিয়ে বাস করতে চায়, কখনো না। সময়কালে তারতম্য অনুযায়ী প্রত্যেক নিজ নিজ কর্মসূচী প্রণয়ন করে। সম্পত্তি ও আহার্য মানুষের লক্ষ্য উদ্দেশ্য নয়।

সৃষ্টিকর্তা সকল প্রাণীর আহারের দায়িত্ব নিজের কাছেই রেখেছেন। পৃথিবীতে যে বিচরণশীলই রয়েছে, আল্লাহর দায়ীত্বে তাদের জীবিকা। (হূদ-৬) আল্লাহ তায়ালা নিজেই অনুগ্রহ করে সে দায়িত্ব নিয়েছেন। সম্মান লাভ মানুষের লক্ষ্য নয়। সম্মানের প্রকৃত মালিক আল্লাহ তায়ালা।

তিনি যাকে যতটুকু ইচ্ছা তা দান করেন। সম্মান অর্জনের চেষ্টায় লিপ্ত হওয়া মানুষের উচিৎ নয়। বরং আল্লাহর হুকুম পালন করে যাওয়াই তার কর্তব্য। মানবজীবনের মূল লক্ষ্য কি হওয়া উচিৎ, সে কথাও আল্লাহ তায়ালা জানিয়ে দিয়েছেন। আমি মানুষ ও জ্বিনকে একমাত্র আমার ইবাদতের জন্যেই সৃষ্টি করেছি।

(যারিয়াত-৫৬) অর্থাৎ আল্লাহর ইবাদতই মানুষের জীবনের প্রথম ও প্রধান কর্তব্য। এটিই মানুষের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিৎ। আল্লাহর উদ্দেশ্য যাতে পূর্ণ হয়, সে লক্ষ্যেই পরিচালিত হওয়া উচিৎ মানুষের জীবন। সৃষ্টিজীব হিসেবে স্রষ্টার উদ্দেশ্য পূরণে ব্রতী হওয়া মানুষের একান্ত কর্তব্য। অতএব, আল্লাহর ইবাদতই মানুষের জীবনের লক্ষ্য হওয়া উচিৎ।

সবার মঙ্গল কামনা করে আজকের বিদায়। মা-আসসালাম..........

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.