ট্রুথ নট সেইড টুডে, কুড টার্ন টু আ লাই টুমোরো সাঈদীর বিচারের রায়ের প্রতিক্ষা শেষ হতে যাচ্ছে। কেন এত দেরি হলো রায় দিতে, শাহবাগ আন্দোলনের কারণেই কি এই দেরি হলো? এমন প্রশ্ন আসলে তার উত্তর দিতে হলে পুরাতন পত্রিকা ঘাটাঘাটি করতে হবে। ট্রাইব্যুনাল১ এর প্রথম রায় এটি। এর আগের দুটি রায় ট্রাইব্যুনাল২ দিয়েছিল। দেলওয়ার হোসেন সাঈদীর যুদ্ধাপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ অনেক পুরোনো।
সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের করা ৫০ শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় সাঈদীর নাম ছিল। নিচে সাঈদীর বিচারের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তারিখ ও ঘটনা দেয়া হলো যা প্রশ্নের উত্তর খুজতে সহায়তা করবে।
২৯ জুন ২০১০: ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার। পরে সাঈদির বিরুদ্ধে ২০টি অভিযোগ আনা হয় ট্রাইব্যুনালে।
২৭ মার্চ ২০১২: রাষ্ট্রপক্ষের ১৯ জন সাক্ষী নানা কারণে উপস্থিত হতে না পারায় তাদের লিখিত জবানবন্দি সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহন করার আবেদন করা হয়।
সাঈদির বিপক্ষের সাক্ষীরা অনেকে শারিরিক কারণে, বার্ধক্যের কারণে, স্মৃতিলোপের কারণে, হুমকির মুখে পলাতক হবার কারণে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হয়। সাক্ষী উপস্থিত করতে প্রায় ১৫বার ব্যর্থ হয়েছে প্রসিকিউশন। ডেইলি স্টার লিঙ্ক
১৩ আগস্ট ২০১২: ডিফেন্সের ক্রসএক্সামিনেশন শেষ হয়। মোট ৪৮ দিন সময় লাগে এই জেরা শেষ হতে। এক এক জন সাক্ষীকে ২/৩ দিন জেরা করা হয়।
ডেইলি স্টার লিঙ্ক
৮ ডিসেম্বর ২০১২: দা ইকোনমিস্টে বিচারপতি নাসিমের সাথে ড.জিয়াউদ্দিনের ১৭ ঘন্টার স্কাইপ কথাপোকথান ও আড়াইশো ইমেইল ফাঁস হবার খবর আসে। আমার দেশ এই কথাপোকথান হুবুহু তুলে দেয়। কিন্তু কে এই কথাপকথন ফাঁস করেছে সেটা এখনও বিচারাধীন। ট্রাইব্যুনাল এই ফাঁস হবার ঘটনায় ইকোনমিস্টের দুই সাংবাদিককে তলব করেন।
১১ ডিসেম্বর,২০১২- আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান নিজামুল হক নাসিম পদত্যাগ করেন ব্যক্তিগত কারন দেখিয়ে।
উল্লেখ্য, এটি ট্রাইব্যুনাল১ এর দ্বিতীয় বিচারকের পদত্যাগের ঘটনা।
২০ ডিসেম্বর ২০১২: এরপরে ট্রাইব্যুনাল থেকে এই হ্যাকড কথাপকথন প্রচার করা বেআইনী এবং এর বিশ্লেষন করে কোন রিপোর্ট করতেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। ডেফেন্স থেকে বিচারকের সাথে জিয়াউদ্দিন সাহেব ও প্রসিকিউশনের মালুম সাহেবের গোপন আঁতাতের যুক্তিতে রিট্রায়ালের আবেদন করা হয়। রিট্রায়ালের জন্য বিদেশি মানবাধিকার সংস্থাগুলো চাপ দেয়।
বিচারপতি নাসিমের পদত্যাগের পর ট্রাইব্যুনাল ১ পুনঃগঠন করে পুনরায় দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শোনা শুরু হয়।
সুতরাং আংশিক রিট্রায়াল হয়েছে বলা যায়। উল্লেখ্য, সাক্ষীদের জেরার কাজ বিচারপতি নাসিমের চেয়ারম্যানশিপের সময় শেষ হয়।
২৯ জানুয়ারি ২০১৩: সাঈদির বিচারের বাদি বিবাদির যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। রায়ের জন্য অপেক্ষা।
৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩:কাদের মোল্লার রায় ঘোষনা।
যাবজ্জীবন পাওয়া কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে শাহবাগ আন্দোলনের শুরু।
যুক্তিতর্ক পুনরায় শোনার ৩০ দিন পর ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩ সাইদির রায় ঘোষনা হতে যাচ্ছে। একই দিনে জামাত হরতাল ডেকে দেশে আতংক তৈরি করার চেষ্টা করবে বলে মনে হচ্ছে। কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে যুক্তিতর্ক শেষ হবার ১৯ দিন পর রায় হয়। এই বেশি সময় লাগার কারন শাহবাগ আন্দোলন ও এরপরে জামাতের হরতাল সহিংসতা দায়ী কি? আমি ব্যক্তিগতভাবে তা মনে করি না।
মনে রাখতে হবে, সাঈদির বিচারপ্রক্রিয়া অনেক চড়াই উতরাই পার করে শেষ হয়েছে। অভিযোগের সংখ্যাও কাদের মোল্লার চেয়ে বেশি ছিল। তাই বিচারিক কাজে সময় বেশি লাগাই স্বাভাবিক। আগামীর শুভকামনায়
-বাঙ্গাল
২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৩
(লেখার ভূলভ্রান্তি ধরিয়ে দিলে সংশোধন করার ইচ্ছা রাখি। শুভ রাত্রি)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।