আজকে মতিঝিল থেকে জিগাতলা আসতে ৩ ঘন্টা ১৫ মিনিটি লেগেছে, বাসায় আসতে আরো ১৫ মিনিট। গাড়ি দু’কদম আগায় আধ ঘন্টা ঝিমায়। শাহবাগ মোড়ে গাড়ি, আর গাড়ি-অরণ্য, কোথাও একবিন্দু জায়গা নেই। একটা রিকশা গলে বেরোবাবও উপায় নেই। আগামীকাল না হয বিজয় দিবস বলে বৃহস্পতি-শুক্র-শনিবার দু-তিন দিনের ছুটিকে সামনে রেখে বিজয় দিবস উদযাপনে জন্য লোকজন সব ছুট দিয়েছে বাড়ির দিকে।
কিন্তু প্রতিদিন কি ্ওই টুকু রাস্তা ২ ঘন্টার কমে পাড়ি দেয়া যায়? সকালে আধ ঘন্টা সময় লাগে গাড়ি পেতে আর ১ ঘন্টা মতিঝিল যেতে। আমার মনে আর বেশি দিন নেই এমন একটি দিনের যেদিন মতিঝিল থেকে অফিস ফেরত বাবুরা বাসায় ফিরতে গিয়ে রাত পার করে দিবেন রাস্তায় । যখন ভোর হবে তখন ঢুলুঢুলু চোখে তিনি কী আবার মতিঝিলে ফিরবেন না কি বাসয়? প্রিয় ব্লগার আপনার কী মনে হয়।
যানজটে আমার তেমন সমস্যা হয় না কারণ আমি প্রায় খেটে খাওয়া মানুষ। কিন্তু বড়লোক আর আপিসের বড়কর্তাদের জন্য একটু খারাপ লাগে আর কি।
আহসান সাহেব কত কষ্ট করে সরকারি অফিসের চাকরিটা বাগিয়েছেন ঘুষ-টুষ খেয়ে মাশাল্লাহ বেশি না উত্তরায় একটা বাড়ি ( নাহ গুলশানে বোধয়!), দু’টি গাড়ি করেছেন। বাড়ি করেছেন অধের্কটা রাস্তার উপর নিয়ে। তিনি একা নন ঢাকা শহরের সব বাড়ি ওয়ালাই বাড়িকে রাস্তায় রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেছে, করে যাচ্ছে। আহসান সাহেবের পাশের বাড়ির জামিল সাহেব গার্মেন্টেসের মালিক। পাঁচ বছরের মাথায় তার একটা গার্মেন্টস এখন পাঁচটায় হয়েছে।
অবশ্য সেদিন তার একটা গার্মেন্টসে শ্রমিকরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে মাসিক ২০০০ বেতনের শ্রমিকরা তাও দুমাসের পাওনা ছিল বলে। জামিল সাহেব বাধ্য হয়ে ছেলে মেয়েদের জন্য আলাদা আলাদা গাড়ি কিনেছেন। কারণ ঢাকা শহরে প্রচন্ত জ্যাম একটা গাড়ি সকালে বের হলে আসতে আসতে দুপুর হয়ে যায়। আহসান সাহেবের অপর পাশের বাড়িটা করিম সাহেবের তিনি একটা এজিও চালান । লোকজন বলে এনজির টাকার মারতে না-কি বেশি মজা কারণ বিদেশিরা না কি কাগজপত্র মানে প্রজেক্ট পেপার, রিপোর্ট ত্ইা দেখে।
আর এসব ঠিকঠাক রাখতে পারলে....। গত তত্বাবাধায় সরকার এজিওদের প্রাপ্ত অর্থ সাহায্যের অধের্ক টাকা দর্শন যোগ্য উন্নয়নে ব্যয় করতে বলে কি ঝামেলায় না ফেলে দিয়েছিলেন এনজিও ওলাদের। কেন করিম সাহেবের বাড়িটা কি দর্শনযোগ্য নয়? করিম সাহেব অবশ্য লোকজনকে বলে বেড়ান বাড়িটা তার আমেরিকা প্রবাসী ভগ্নিপতির টাকায় গড়া। -ভাই উপরের চরিত্রগুলো কাল্পনিক। কিন্তু ঢাকা শহরে এই চরিত্রগুলো প্রেতাত্মার মতো ঘুরাঘুরি করছে।
প্রিয় ব্লগার উপরোক্ত চরিত্রগুলোর কথা বলে শেষ করা যাবে না। আসুন একটু কল্পনা করি, ধরুন ঢাকা শহরের রমনা পাকের মতো গোটা পঞ্চাশেক পার্ক আছে। তখন ঢাকা শহর।
গাড়িগুলো যখন ্ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে তখন কোন তখন ঘন্টায় ৮০ কি.মি বেগ। ফার্মগেট থেকে শাহবাগের মাঝখানে বিশাল একটা রমনা পার্ক আবার শাহবাগ থেকে পল্টন পর্যন্ত একটা বিশাল একটা রমনা পার্ক আবার পল্টন থেকে মতিঝিল পর্যন্ত একটা রমনা পার্ক ।
পার্কে যেহেতু অফিস আদালত নেই, তাই হাকারও নেই আর তাই গাড়ি থামার প্রশ্নই আসে না। বড়লোকরা সব আবাস গড়েছে গাজিপুরে । কারণ ঢাকা থেকে গাজীপুর আসতে মাত্র পোনে এক ঘন্টা লাগে। সমস্ত গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীগুলো পদ্মার পাড়ে মানিকগঞ্চ-রাজবাড়ী এদিকটায়। নদী পথে গার্মেন্টর্সের শিপমেন্ট চলছে নারায়ণগঞ্জ বন্দর দিয়ে।
অসংখ্য প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি গড়ে উঠেছে টাঙ্গাইলে। ট্যানারী রাজ্য হলো হোমনা, কুমিল্লা ঢাকা থেকে মাত্র একঘন্টার পথ হোমনা। মুন্সিগঞ্জ সরকারী অফিস আদালতের দ্বিতীয় জোন। ঈদের ছুদিতে লোকজন ঢাকায় বেড়াতে আসে আশপাশের উল্লিখিত জায়গাগুলো থেকে কারণ ঢাকায় শিশুপার্ক, চিড়িয়াখান, মধুমিতা, বলাকা সিনেমা হল, শাহবাগ জাদুঘর, নভোথিয়েটার ইত্যাদির আকর্ষনে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।