আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দূর্ণীতির সাথে সম্পৃক্ত পুলিশ , নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে জনগণ

সামুতে অর্থহীন অশুদ্ধ বাংলা ও বাংলিশ শব্দ পরিহার করি

বিশ্ব কবির সোনার বাংলা, নজরুলের বাংলাদেশ, জীবনানন্দের রূপসী বাংলা, রূপের যে তার নাইকো শেষ । চির সবুজ-শস্য শ্যামল ছায়া সুনিবিড়, শান্তির নীড় আমাদের বাংলাদেশ। যে দেশ অনেক রক্ত ও প্রাণের বিনিময়ে বিশ্ব দরবারে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিল সে দেশ কয়েক বছর আগেও বিশ্বের কাছে প্রধান দূর্ণীতিপরায়ন দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিল। পর পর দু’বার বিশ্বের এক নম্বর দূর্ণীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে পরিচিতি বাঙ্গালী জাতির জন্য চরম লজ্জার বিষয়। আজ এদেশের রাজনীতি ও প্রশাসনে দুর্ণীতি চলছে এ কথা আমাদের সকলেরই জানা।

আমাদের দেশে প্রায় সব ক্ষেত্রেই দূর্ণীতি চলছে এমনকি ধর্মভিত্তিক কর্মকান্ডেও । তবে সবচেয়ে বেশী দূর্ণীতি হয় পুলিশ বিভাগে। বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীর দূর্ণীতির ব্যাপারে সরকারের অনেক ঝানু ঝানু মন্ত্রী ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মন্তব্য দূর্ণীতিতে পুলিশের সম্পৃক্ততা প্রমান করে। পুলিশের আইজিপি জনাব শহুদুল হক বলেছেন, ” পুলিশের গাফলতি আছে। তারা পুলিশ রেগুলেশন অব বাংলাদেশ (পিআরবি) ফলো করেনা, থানায় মামলার সঠিক তদন্ত হয়না, প্রয়োজনীয় সুপারভিশন নাই।

থানার ওসি খোঁজই রাখেন না তার থানায় কী হচ্ছে, তার অধীনস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কী করছে। সেন্স অব ডাইরেকসন্সও তাদের মধ্যে কাজ করেনা। অনেক কর্মকর্তা ডিউটি বাদ দিয়ে ওয়্যারলেস বন্ধ করে বসে থাকে”। পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারই যদি পুলিশ বাহিনীর ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেন তা হলে জনগণের দোষ কী ? আমরা বলছিনা পুলিশ বাহিনীর সকল সদস্যই গড্ডালিকা প্রবাহে নিজেদের সপে দিয়ে বিবেক বিজর্সন দিয়েছেন। পুলিশের কিছুসংখ্যক অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য আজ গোটা পুৃিলশ প্রশাসন কলঙ্কিত।

তাদের কারণে পুলিশ বাহিনীর অধিকাংশ নৈতিক চরিত্রবান পুলিশের অবদান ম্লান হয়ে যাচ্ছে। তবে পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বড় একটা অংশ যে ছিনতাই, হত্যা, দূর্নীতিসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কার্যকলাপের সাথে জড়িত তার প্রমাণ মিলে প্রতিদিনের পত্রিকার পাতা খুললেই। বিনাদেষো কাউকে কোন অন্যায় কাজে ফাসিয়ে দিয়ে অনৈতিক ভাবে তার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করাসহ বিনা দেষে অনেককে যাবত জীবন জেল ও খাটিয়ে ছাড়ে আমাদের এই পুলিশ বাহিনীর অসাধু সদস্যেরা। স¤প্রতি বিভিন্ন কারাগার থেকে যাবত জীবন দন্ডপ্রাপ্ত এক হাজার কয়েদীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে যাদের অধিকাংশ বিনা অপরাধে জীবনের সোনালী দিনগুলো কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে কাটাতে বাধ্য হয়েছেন। এ কথা স্বীকার করেছেন পুৃলিশ বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।

২০০৪ সালের ২১শে আগস্টের নৃৃশংস গ্রেনেড হামলায় নিরপরাধ গোবেচারা জজমিয়া নাটক সাজিয়ে ছিলেন যে তিন কর্মকর্তা তারা আজ বিচারের সম্মুখীন। এক সময় পুলিশের বিরুদ্ধে কেবল ঘুষ গ্রহণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মতো অভিযোগ সীমিত ছিল। কিন্তু আজ তাদের অপরাধের ক্ষেত্রগুলো ডাল পালা বিস্তার করে অপরাধের সর্বক্ষেত্রে তাদের হস্ত প্রসারিত করেছে। পুলিশের বিরুদ্ধে আজ চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, হত্যা, ধর্ষণ, ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়, মিথ্যা মামলা ও ডাকাতিসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত। বিশেষ করে সিভিল পোষাকধারী নিম্ন পর্যায়ের পুলিশ সদস্য ও অপরাধী মিলে গড়ে তুলেছে ক্রিমিনাল সিন্ডিকেট।

এদের সংঘটিত অপরাধের মধ্যে রয়েছে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অপহরণ, জমি দখল, এবং গ্রেফতার বাণিজ্য। সোর্সের সাথে মিলে পুলিশের অসাধু সদস্যরা এ ধরণের কর্মকান্ডে জড়িত বলে পুলিশ কর্মকর্তারাও স্বীকার করেছেন। সিএমপির একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, শুধু উর্ধ্বতন কর্মকর্তা নয় এদের কারণে পুরো পুলিশ ডিপার্টমেন্টই বিব্রত। ”পুলিশ জনগণের বন্ধু” এই শ্লোগান আজ মিথ্যায় পর্যবেশিত হয়েছে। পুলিশের নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই পায় নাই, ছাত্র-ছাত্রী,শিক্ষক,সাংবাদিক, শিশু ও মহিলা সহ সব পেশা ও সকল শ্রেণীর জনগণ।

পুলিশের দূর্ণীতির খতিয়ান এ ক্ষুদ্র পরিসরে দেওয়া সম্ভব নয় তবে সবাই তাদের সম্পর্কে ওয়াকেবহাল বলেই আমার বিশ্বাস। আমাদের দেশে দূর্ণীতি দমন কমিশন নামে একটি সংস্থা আছে তবে তাদের বিরুদ্ধেও রয়েছে দূর্ণীতির অনেক অভিযোগ। যে সংস্থা নিজেই দূর্ণীতির সাথে জড়িত অর্থাৎ রক্ষক যদি ভক্ষক হয় তবে তার দ্বারা আর যাই হোক দূর্ণীতি রোধ করা অসম্ভব। এ ব্যাপারে মানবাধিকার সংস্থাসহ দাতা গোষ্ঠী একমত পোষণ করে আসছে। তাই তারা ঘোষণা দিয়েছে দূর্ণীতি কমাও তা না হলে সাহায্য বন্ধ।

সাধারণ মানুষ আজ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। মানুষ এ থেকে পরিত্রান চায়। পুলিশের চাঁদাবাজি বা অপরাধ প্রবণতার মূল কারণ কী তা খতিয়ে দেখার সময় এসেছে। তাদের অপরাধের কারণ চিহ্নিত করা গেলে এবং তার প্রতিকার হলে সম্ভবত পুলিশের অপরাধ করার প্রবণতা কমে যাবে। সাধারণ শান্তিপ্রিয় জনগণের সাথে আমরাও আশা করব পুলিশের সাধারণ কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে সাথে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলির অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তদন্তপূর্বক আইনানুযায়ী কঠো শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

যাতে প্রতিয়মান হবে কেউই আইনের উর্ধ্বে নয়, তা হলে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে, জনগণের বিশ্বাস ফিরে আসবে পুলিশের প্রতি। পুলিশ বাহিনী ফিরে পাবে তার হৃত গৌরব।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।