আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘তাইন্দং সহিংসতায় কেউ মারা যায়নি’

এমনকি সেদিন কোন পাহাড়িকে নির্যাতন বা আটক করা হয়নি। বরং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যদি ঘটনাস্থলে না থাকত তাহলে অনেক রক্তপাত হতে পারত বলে মনে করেন বিজিবি জানিনীপাড়া জোনের জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল সিহাব উদ্দীন সোয়েব।
গত শনিবার মোটরসাইকেল চালক মো. কামাল উদ্দীনকে অপহরণ করা হয়েছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে পাহাড়িদের গ্রামে আগুন দেয়া হয়। অনেকে আতঙ্কে নো-ম্যান্স ল্যান্ডে গিয়ে আশ্রয় নেন।
এ ঘটনার পর গত মঙ্গলবার পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন (সিএইচটি) এক বিবৃতিতে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায়।

বিবৃতিতে এ ঘটনায় অন্তত একজন নিহত ও চারজন গুরুতর আহত হন বলে দাবি করা হয়।
পাহাড়িদের উপর বিজিবি নির্যাতনও করছে বলে অভিযোগ আনে সিএইচটি।
তবে সিএইচটি’র দাবি নাকচ করে দিয়ে বিজিবি কর্মকর্তা শোয়েব বলেন, তারা পাহাড়ি-বাঙালি দাঙ্গা যেন না হয় সে ব্যাপারে খুব সতর্ক ছিলেন। তাইন্দংয়ে ৯৫৭টি পরিবারের মধ্যে ৩৫টি ঘর পুড়েছে। এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা।


“মোবাইলের মাধ্যমে স্থানীয় বাঙালিরা পাহাড়িদের বাড়িঘরে আগুন ও লুটতরাজ চালায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে অনেক বিজিবি সদস্যকে নাজেহাল হতে হয়। ”
বিজিবি কর্মকর্তা বলেন, কামালকে খুঁজতেই বগাপাড়া গ্রামের মেম্বার ফনিভূষণ চাকমাসহ অনেক পাহাড়ি গ্রামবাসীকে নিয়ে বিজিবি সদস্যরা বান্দর সিং এলাকায় যায়। গ্রামে তখন অনেক বাঙালি জড়ো হয়। বাঙালিরা বিজিবির সঙ্গে পাহাড়িদের দেখে উত্তেজিত হয় এবং হামলা করতে আসে।

তখন পুলিশ লাঠিপেটা করে বাঙালিদের উপর।   
“বান্দর সিং এলাকায় কয়েকটি বসতবাড়িতে আগুন জ্বলতে দেখে পিছনের বগাপাড়া, সর্বেস্বর পাড়াসহ ৪টি গ্রামে আগুন দেয় বাঙালিরা। ”
এশিয়ান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটসের পরিচালক সুহাস চাকমা পাহাড়িদের উপর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ আনেন।
সুহাস নির্যাতনের শিকার তিনজনের নামও উল্লেখ করেন। তাদের মধ্যে একজন তাইন্দং ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ফণিভূষণ চাকমা।


তবে ফণিভূষণ চাকমা গত বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তাকে বিজিবি আটকও করেনি নির্যাতনও করেনি। তাকে মারধর করেছে বাঙালিরা।
“বাঙালিদের হামলায় বাড়িঘর পুড়লেও কেউ মারা যায়নি। বগাপাড়া গ্রামের তুলাপতি চাকমাকে (৭৫) পাওয়া যাচ্ছিল না। তিনি দুদিন পর জঙ্গল থেকে ফিরে আসেন।


একই কথা বলেন বগাপাড়া গ্রামের বিমল চাকমাও।
একই গ্রামের বিনয় চাকমা বলেন, সেদিন শত শত বাঙালি তাদের গ্রামে জড়ো হয়। এ সময় তারা ১১ পাহাড়িকে মারধর করে। বিজিবির ক্যাম্পে শনিবার রাত কাটিয়ে তিনিসহ কয়েকজন রোববার গ্রামে ফিরে আসেন।
নির্যাতিতরা হলেন- বগাপাড়া গ্রামের মৃত জলিয়া মোহন চাকমার ছেলে কালাকাজি চাকমা (৩৭), মৃত সুর মোহন চাকমার ছেলে মেরেয়া চাকমা (৪২), বীরেন্দ্র চাকমার ছেলে বিনয় চাকমা (৫২), মৃত মন্ত্রী মোহন চাকমার ছেলে সুনীল কান্তি চাকমা, বাঁশী মোহন চাকমার ছেলে বৃশকেতু চাকমা (৩৮), মদন মোহন চাকমার ছেলে জীবন বিকাশ চাকমা (২৩), বন্তকর চাকমার ছেলে শুশীলময় চাকমা (৩৪), সুরেশলাল চাকমার ছেলে ফণিভূষন চাকমা এবং বান্দরসিং গ্রামের মৃত পূর্ণবাহু চাকমার ছেলে সুখমনি চাকমা (২৮), মহেন্দ্র চাকমার ছেলে অমৃত চাকমা (৩৮)।


তাইন্দং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম জানান, শনিবার ঘটনার সময় বগাপাড়া গ্রামের তুলাপতি চাকমা নামে এক বৃদ্ধ নিখোঁজ ছিলেন পরে তাকে পাওয়া গেছে।
“একজন পাহাড়ির মৃত্যুর খবরটি গুজব। ”
আমস্টার্ডামভিত্তিক সিএইচটি ক্যাম্পেইন ও কোপেনহেগেনভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ওয়ার্ক গ্রুপ ফর ইন্ডিজেনাস অ্যাফেয়ার্সের যৌথ উদ্যোগে ১৯৯০ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন গঠন করা হয়।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।