আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্বদেশী সাংবাদিকদের নির্লজ্জ মিথ্যাচার | হাতেনাতে ধরা | অতঃপর উর্ধে নিক্ষিপ্ত জুতা পরলো নিজেদেরই গালে | প্রসংগ ড. ইউনুস

অবাক হৃদয়

নিচের লিঙ্কগুলো আগে পরে নিনঃ নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মন্তব্য বাংলাদেশী মিডিয়ার জঘন্য মিথ্যাচার ইন্ডিয়ান হাইকমিশনের মন্তব্য আমরা এমনি একটা জাতি, যদি আমাদের কেউ নোবেল প্রাইজ পেয়ে যায় আমরা বলে বেড়াই- আরে ওই ব্যাটাতো সুদ খেয়ে, গরিবের রক্ত চুষে নোবেল পেয়েছেঃ এই ধরনের মন্তব্য করে আমরা অনাবিল আনন্দ লাভ করি। “বাংলাদেশীর মত পৃথিবীর নিকৃষ্টতম জাতির কেউ কখনো নোবেল প্রাইজের মতো পুরষ্কার সৎ উপায়ে পেতে পারেনা” – শুধুমাত্র এই এসাম্পশনের উপর ভিত্তি করে আমরা যখন শুনি একজন বাংলাদেশী নোবল পেয়েছে- আমরা কড়া ১০০% কনফিডেন্স নিয়ে বলে বেড়াইঃ নিশ্চয়ই ওই ব্যাটা লবিং করে নোবেল পেয়েছে (এমন কনফিডেন্স আমরা বাংলাদেশ ছাড়া আর কোথায় পাবো??)। আমরা নোবেল কমিটির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলতে রাজি আছি, মাগার এই কথা মানতে নারাজ যে একজন বাংলাদেশী দুর্নীতি ছাড়া নোবেল প্রাইজ আর পৃথিবীর সেরা সেরা সব পুরস্কার পেতে পারেন। [কথাবার্তা শুনলে মনে হয় যেন শাহবাগের মোড়ের গাঞ্জাখোরেরা নোবেল প্রাইজ বিলায়] চট্টগ্রামে ‘বাঙ্গাল’ শব্দটি একটি অপমানজনক বিশেষন হিসেবেই ব্যবহৃত হয়। প্রতিনিয়তই আমরা আমাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য দিয়ে প্রমান করে চলেছি আমরা বাঙ্গাল তথা বাংলাদেশী (আমি ইন্ডিয়ান বাংগালীদের এই অপবাদ দিবনা)।

ভবিষ্যতে নোবেল কমিটি কখনো কোনো বাংলাদেশীকে নোবেল দেওয়ার আগে অন্ততঃ ১০০ বার চিন্তা করবেঃ “এই জাতির কাউকে নোবেল দিলে এই বাংগালই আমারে গালি দিবে যে আমরা ঘুষ খেয়ে/পলিটিক্স করে নোবেল দিচ্ছি, এই জাতিই দাবি তুলবে যে বাংগালীরে নোবেল দেওয়া উচিত হয়নাই-অচিরেই নোবেল ফিরিয়ে নেওয়া হোক, হয়তো নোবেল কমিটির বিরুদ্ধে কেউ আন্তর্জাতিক আদালতে মামলাও করে বসতে পারে...” গ্রামের একটি গল্প বলিঃ গাঁয়ের এক মোড়লের বাসায় এক সন্তান হয়েছে, গায়ের রংটা একটু শ্যামলা হয়েছে, তো পাশের গাঁয়ে খবর ছড়ালো যে মোড়লের সন্তান দেখতে কালো হয়েছে, তার পরের গাঁয়ে খবর ছড়ালো যে মোড়লের বউ একটি কুচকুচে কালো বাচ্চা প্রসব করেছে, আর তার পরের গাঁয়ে খবর ফাটলো যে মোড়লের বউয়ের একটি কাক হয়েছে। এই হলাম আমরা। আজ R TV এর টকশোতে দেখলাম, যারা প্রথম বাংলাদেশের মিডিয়াতে এই খবরটি প্রচার করে যেঃ Yunus 'siphoned Tk 7bn aid for poor তারাও বললেন যে ব্যাক্তি ইউনুসের বিরুদ্ধের কোনো দুর্ণীতির অভিযোগ তারা তাদের রিপোর্টে করেননি, কিন্তু পরে তাদের কাছ থেকে যারা রিপোর্টটি নিয়ে নিজেদের মিডিয়ায় প্রকাশ করে, তখন তারা নিজেদের ইচ্ছেমতো রঙ লাগায়। এই রঙ এর কারিগর দের সাথে যোগ দিলেন আমাদের আবেগী প্রধানমন্ত্রী। দীর্ঘদিনের জমে থাকা আবেগের ঠেলায় উনি ড. ইউনুসকে রক্তচোষা ড্রাকুলাই বানিয়ে ফেললেন।

প্রধানমন্ত্রী একটুও ভাবলেননা, এই রক্তচোষা প্রতিষ্ঠানটিই রক্ত চুষে চুষে কিন্তু এনে দিয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা অর্জনঃ নোবেল, পৃথিবীর অলমোস্ট প্রত্যেকটি দেশই ঝাপিয়ে পরেছে এইরকর রক্তচোষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে, পৃথিবীর অনেক দেশ গ্রামীন ব্যাংককে পরামর্শক হিসাবেও নিয়োগ করেছে-তাদের দেশে এই ধরনের প্রতিষ্ঠার গড়তে সহায়তা করার জন্য, নরওয়ে সরকার এই রক্তচোষা প্রতিষ্ঠানকেই বলেছে পৃথিবীর অন্যতম সফল প্রতিষ্ঠান, পৃথিবীর প্রায় সকল সেরা সেরা পুরষ্কার এবং সম্মানে ভুষিত করা হয়েছে এই রক্তচোষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতাকে!! মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সবিনয়ে জানতে চাই, গরিবের রক্ত চুষলে যদি নোবেল পাওয়া যায়, তাহলেতো আপনাদের ঘরের শোকেস আলমারি সবতো নোবেল প্রাইজ দিয়ে ভর্তি হয়ে যাওয়ার কথা, কিন্তু একটিও নোবেল আপনি বা আপনার দলের কেউ আনতে পেরেছেন কি? নোবেল পাওয়ার মাপকাঠি কি গরিবের রক্তচোষা? আপনি কি তথ্যের ভিত্তিতে "ধোকাবাজি" শব্দটি ব্যবহার করলেন? ফান্ড ট্রান্সফার প্রক্রিয়ায় আপনার সরকারের যে তিনজন প্রতিনিধি প্রত্যক্ষভাবে এই "ধোকাবাজি" এর সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন, তাদের জবাবদিহিতা কে নিশ্চিত করবে - গ্রামীন ব্যাংক নাকি আপনার সরকার? এই রঙ লাগানোর খেলা চলতে চলতে অবশেষে একটি বাংলাদেশী মিডিয়া তার টগবগ করতে থাকা উত্তেজনা ধরে রাখতে না পেরে ইন্ডিয়ার প্রাইম মিনিস্টার মানমোহন সিং কে বানিয়ে দিলেন সুপার স্টার শাহরুখ খান, এই বলে যে উনি হলেন বাংলাদেশের বাইরে পৃথিবীর প্রথম নেতা যিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আদলে (একই ভাষায়) ইউনুসের সমালোচনা করলেন। বাংগালি আবার শান্তির দম ফেললোঃ উফফ! যাক গালি খালি আমরা, আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেয়নাই, বিদেশীর গালি শুনার মজাই আলাদা, আফটার অল এই গালি শুনার জন্যই তো আমরা এতদিন অপেক্ষায় ছিলাম, বাংগালিরে কোন বিদেশী সম্মান দিলে আমাদের খারাপ লাগে, গালি দিলেইতো আমাদের বাংগালি জনমের সার্থকতা। এইতো সেদিন (২২ শে নভেম্বর, ২০১০) বাংলাদেশ ঘুরে গেলেন নরওয়ের Minister of Environment and International Development, Mr. Erik Solheim. তো এই লোকের জানতে ইছা করলো আসলে কাহিনীটা কি?? তিনি নোরাডকে অনুরোধ করলেন তাঁর কাছে নরওয়ে টেলিভিশনে প্রচারিত প্রতিবেদনের উপর একটি রিপোর্ট জমা দিতে। রিপোর্টটি পাওয়ার পর Mr. Erik Solheim এর মন্তব্যটি নরওয়ের MINISTRY OF FOREIGN AFFAIRS এর সরকারি website থেকে সরাসরি তুলে ধরছিঃ “According to the report, there is no indication that Norwegian funds have been used for unintended purposes, or that Grameen Bank has engaged in corrupt practices or embezzled funds. The matter was concluded when the agreement concerning reimbursement of the funds was entered into in May 1998 under the government in office at the time,” আমি নিশ্চিত, নরওয়ের হাইকমিশনের বিরুদ্ধে বাংগালী এখন দুর্ণীতির অভিযোগ তুলবে। হঠাত্‌ করেই মনে হলো দেখিতো ঢাকার ইন্ডিয়ান হাইকমিশন website কি বলে।

দেখি হোমপেজের প্রথম লিঙ্কে লেখাঃ December 7, 2010 - Statement by the Spokesperson of the High Commission of India in Dhaka on false reports in the Bangladesh media about Prime Minister Dr Manmohan Singh and Noble Laureate Prof Muhammad Yunus ক্লিক করলাম লিঙ্কে, কন্টেন্ট পড়েতো আক্কেল গুডুমঃ Responding to question on false reports in Bangladesh media about Prime Minister Dr Manmohan Singh and Nobel Laureate Prof Muhammad Yunus, the Spokesperson of the High Commission of India in Dhaka said, “The reports stating that Prime Minister Dr. Manmohan Singh criticised Nobel laureate Prof. Muhammad Yunus are false and erroneous. No such comments have been made by the Prime Minister of India”. [:-? বাংগালী চিন্তা করে ইন্ডিয়ান হাইকমিশনও টাকা খাইসে, মনে হয় দুনিয়াডা একদম ধংসের দ্বারপ্রান্তে] আমরা অবশেষে এটা আবারো প্রমান করলাম যে আমরা বাংলাদেশী। কবে পৃথিবীর মানুষ বুঝবে যে আমরা বাংলাদেশী। এভাবে আর কতো প্রমান আমাদের দিতে হবে!! পরিশেষে একটি কথা বলতে চাই, ভাগ্য ভালো স্টিফেন হকিং বাংলাদেশে জন্মাননি, না হলে উনার ফার্মগেট ওভারব্রিজের নিচে ভিক্ষা করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকতোনা!!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.