একখানা মতামত দিয়েন কিন্তু!!!!!!
আজ ৫ ডিসেম্বর ২০১০। রবিবার। দিনটির সাথে কবিগুরুর নামের কি অপূর্ব মিল। দেখাও হলো তার সাথে এই দিনে। তাও তার মৃত্যুর প্রায় ৬০ বছর পর।
তার হঠাৎ এ আগমনের হেতু জেনে আমিতো হতবাক। একবিংশ শতাব্দীতে এমন ঘটনা প্রতক্ষ করার জন্যে কি আমার উদয়? প্রশ্নটা শুধু আমার নয়; আপনারও। ঘটনাটা কিভাবে, কোথায় এবং কেন ঘটল তা নিয়েই আজকের লেখা। রবীন্দ্রনাথের প্রতি যাদের আগ্রহ শুধু তাদের জন্যে।
কখনও কল্পনাও করিতে পারিনাই যে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্বয়ং আমার ছোট্ট কুঠুরীতে পদাধুলী দিবেন।
অনেক দিনের সম্পর্ক উনার সাথে। (শুধু আমি চিনি উনাকে; উনি আমাকে নয়। ) সে প্রায় ২৫ বছরের। তবুও উনি নিজে আমার বাটীতে আসবেন এটা কল্পনাও করিনাই। আমি তো উনাকে দেখিয়া অবাক হইলাম।
আবার যার পর নাই খুশি ও হইলাম। আমার অবস্থা অনুধাবন করিয়া উনি আমার আরো কাছে এগিয়ে আসিলেন। আমার শোবার ছোট্ট খাটের পাশের কেদারাটার উপর আসন গ্রহণপুর্বক আমাকে জিজ্ঞাসা করিলেন:
: "ওহে বৎস! অবাক হইতেছো কেন?"
: (আমি প্রতিউত্তর দেয়ার সাহস পাইলাম না। )
উনি আবার বলিলেন:
: "তুমি আমাকে আসতে বাধ্য করিয়াছো। "
এবার আমি আমতা আমতা করে ভয় ও শ্রদ্ধা নিয়ে বলিলাম:
"বেয়াদবী মাফ করিবেন কবিগুরু, কিন্তু কিভাবে?"
উনি বলিলেন: "সম্প্রতি আমি লক্ষ্য করিতেছি যে তুমি আমার সাথে ষঢ়যন্ত্রে লিপ্ত হইয়াছো।
"
আমিতো আরো অবাক হইলাম। করোজোড়ে বলিলাম: "গোস্তাকী মাফ করিবেন গুরুদেব, এমন দুঃসাহস আমি কখনও দেখাইতে পারিনা। আমি যে আপনাকে অনেক ভালবাসি, শ্রদ্ধা করি। তবুও নিজের অজান্তে যদি কোন ভুল করে থাকি তাহ হইলে ক্ষমা ভিক্ষা করিতেছি। "
আমার কথা শুনিয়া কিছুটা আশ্বস্ততার অভা তাহার শশ্রুমন্ডিত চেহারার মধ্যে ফুটিয়া উঠিল; আমি দিব্যি লক্ষ্য করিলাম।
মনে মনে চিন্তা করিলাম "মহৎ জনেরাও তাহা হইলে তৈল খায়?"
মনে হইল উনি আমাকে বিশ্বাস করিলেন। তবুও কর্কশ স্বরে আমাকে বলিলেন: "এই বয়সেই তুমি আমাকে ছাড়িয়ে যাইবার স্বপ্ন দেখিতেছো?"
আমি আবারও অবাক হইলাম। কন্ঠ তার আরও ভারী হইয়া যাইতেছে। চেহারায় অভিযোগ আর উৎকণ্ঠার ছাপ স্পষ্ট। এইবার আর তাহার মুখের দিকে তাকাইতে পারিলাম না।
চিন্তায় ডুবিয়া গেলাম।
উনি আমার অবস্থা কিঞ্চিত বুঝিতে পারিলেন। স্নেহমাখা ভঙ্গিতে অনুযোগের সূরে আমাকে বলিলেন: "ওহে বৎস! প্রথম এশিয়ান হিসেবে (বাঙ্গালীও) আমার নোবেল বিজয়ের ১০০ বছর পুর্তিতে এখনও তিন...(একটু ঢোক গিলিয়ে, দম নিয়ে).. তিন বছর বাকি, আর তুমি কিনা ....?
কথাটি আর শেষ করিতে পারিলেন না। বয়সের ভারে নূজ হয়ে গিয়েছেন তো তাই আর লম্বা বাক্য একবারে শেষ করিতে পারেন না।
আমি একটু জল-পানি জোগাড়ের জন্য উঠিতে ব্যস্ত হইলাম এহেন মুহুর্তে উনি আমার হাত ধরে থামিয়ে দিলেন।
আমি অবনত মস্তকে দাড়িয়ে রইলাম। আমাকে জিজ্ঞাসা করিলেন:
"কখনও কি স্কুল পালাইয়েছো?"
আমি আরো অবাক হইলাম। হঠাৎ এমন প্রসঙ্গহীন প্রশ্ন শুনে একটু স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করিলাম। জবাব দিলাম: "না"।
(মনে মনে বলিলাম তাহলে তো আর এই পর্যায়ে আসতে পারতাম না, এই টুকুতো গুরুদেবের বুঝা উচিৎ)
উনি বললেন: "তাহলে?"
(আমি মনে মনে ভাবলাম তাহলে কী?)
গুরুদেব আওড়াতে লাগিলেন: "তাহলে কিভাবে...? কিভাবে...?"
আমি সাহস নিয়ে বলিলাম: "গুরুদেব! তাহলে কিভাবে কী?"
একটু অন্যমনস্ক হয়ে বলিলেন: "ঐ যে কবিতাটা... কবিতাটা...।
"
(কথাটি তিনি শেষ করতে পারিলেন না) এমন সময় ঘড়ির এলার্ম বেজে উঠল। বিশ্রী এর শব্দটা। আমার খুবই অপছন্দ। তবুও খুব জরুরী মুহুর্তে এটা দিয়ে ঘুমাই। এলার্ম বন্ধ করে ভাবতে লাগলাম।
কেন এমন স্বপ্ন দেখলাম? আমি তো কবিতা লিখিনা। হঠাৎই মনে পড়িল: "ও তাইতো....:
"দু'দিন আগে খেলার ছলে
সামুতে লিখিছিুন ছোট্ট একটি ছড়া
তাতেই কবিগুরু এতই ক্ষিপ্ত
লাগল চিন্তায় কড়া?"
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।