সাধারণ মানুষ যার জানার কিছু ইচ্ছা আছে।
জন্ডিস বা হলুদ চক্ষু
JAUNDICE
চোখের সাদা রং এর স্থলে হলুদ রং হইলে তাকে জন্ডিস বলে। জন্ডিস যখন সামান্য হয় তখন শুধু চোখেই উহা দেখা যায়। কিন্তু যখন জন্ডিস বেশী হয় তখন জিহ্বার নীচে, নখে ও শরীরের চামড়া হলুদ রং দেখা যায়। মানব দেহে লিভারে পিত্ত তৈরী হয় ।
আর এই পিত্তকে Bile বাইল বলে। যার রং হলুদ,আর এই রং এর নাম হল বাইল পিগামেন্ট Bile pigment । ঐ রং রক্তের লাল কনিকা হতে সৃষ্টি যা লিভারে পিত্ত তৈরী হবার পর কিছুঠা গল ব্লাডারে Gallbladder জমা হয়। যাবতীয় খাদ্য গ্রহনের পরে উহা কিছুটা বাইল ডাকট.Bile duct...নামক পথ দিয়ে ক্ষুদ্রঅন্ত্রে আসে। আইর উহা আমিষ ও চর্বি জাতীয় খাদ্যকে হজম করতে সাহায্য করে।
গুরুপাক খাদ্যের পরে পিত্ত কোষে সঞ্চিত পিত্ত আনেক খানি বাহির হইয়া ক্ষুদ্রাঅন্ত্রে আসে হজমের কার্যে সহায়াতা করার জন্যে। নানা পরি বর্তনের পর ক্ষুদ্রঅন্ত্রের এই পিত্ত হতে মলের স্ভাভাবিক রং এর সৃষ্টি হয়। যদি কোন কারনে পিত্ত বাহির হবার পথে বাধা থাকে ,যথা পাথর, তখন পিত্ত ক্ষুদ্রাঅন্ত্রে আসতে পারেনা ফলে উহা রক্তে মিশ্রিত হয় এবং চোখে ও অন্যান্য জায়গাতে হলুদ রং দেখা দেয় ও জন্ডিস রোগের সৃষ্টি হয়। আবার লিভারের কতগুলি রোগে যখন পিত্ত নিয়মিত ভাবে বাহির হতে পারেনা অর্থাৎ বাধা প্রাপ্ত হয় তখন উহা রক্তে মিশ্রিত হয় এবঙ জন্ডিস রোগের সৃষ্টি হয়। আমরা উপরে বলেছি যে,রক্তের লাল কনিকা হতে পিত্তের রং সৃষ্টি হয়।
কাজেই কোন কোন রোগ যখন রক্তের লাল কনিকা ধ্বংস করে তখন বেশী বাইল পিগামেন্ট সৃষ্টিহয় এবংউহা প্রয়োজনের অতিরিক্ত হয় বলিয়া রক্তে মিশে গেলে এই অবস্থায়ও জন্ডিস সৃষ্ট হয়।
এখন জন্ডিস হবার কারন বর্ননা করবো।
নানা ভাবে প্রধানত জন্ডিস হতে পারে
১। পিত্তনির্গমনের পথে বাধা হতে।
২।
লিভার রোগ হতে।
৩। রক্ত কনিকা ভেঙ্গ যাবার কারনে।
৪। ব্লাড টান্সফিউসন ও ব্যবহিত ইনজেকশন ও ব্যবহিত অস্ত্রাদি থেকে।
পিত্ত র্নিগমনের পথে বাধা । যেমন-
ক) গল ষ্টোন gallstone বা পিত্ত কোষের পাথর,যখন উহা কমন বাইল ডাকটে আটকে যায়।
ক্যান্সার অব হেড প্যানক্রিয়াস cancer of head of pancreas যখন উহা পিত্ত র্নিগমনের পথে চাপা দিয়ে রাখে বা এমন কোন টিউমার যাহা কমন বাইল ডাকটের উপর চাপ দেয় বা কৃমি যাগা পিত্ত নৃইরগমনের পথের মুখ বন্ধ করে।
খ) লিভার এর রোগ সমূহ । যেমন-
১) ক্যান্সার অব লিভার cancer of liver. যখন উহা পিত্ত নির্গমেন পথে বাধা প্রদন করে।
৪)ইনফেকটিভ হেপাটাইটিস Infective Hepatitis
৫) কতগুলি ঔষধ যাহা লিভারের উপরে বিষ ক্রিয়া করে যেমন আর্সেনিক ,বিসমাস,টেটরাক্লোরইথাইলিন।
৬) অন্তঃস্বত্তা অবষ্থায় কখনো কখনো জন্ডিস হতে পারে।
৭)সিরোসিস লিভার Cirrhosis liver
গ) রক্ত কনিকা ভেঙ্গে যাবার কারনে । যেমন
এই রোগে রোগীর রক্তের লহিত কনিকা ভেঙ্গে ধ্বংস হতে থাকে । রক্তের এই লহিত কনিকা আর,বি,সি ধ্বংস হওয়া কে হেমোলাইসিস বলে।
আর এই হেমোলাইসিস জন্ডিস রোগের প্রধান কারন।
# মালেরিয়া জ্বর malaria fever
# জন্ডিস অব দি নিওবরণ Jaundice of the newbornবা ইকটেরাছ নিওনেটোরাম Icterous neonatorum
# ব্লাক ওয়াটার ফেবার Black water fever
# পারনিয়াছ এনিমিয়া pernicious Anemia
# ব্লাড টান্সফিউশন Blood transfusion অর্থাৎ কোন সুস্থ ব্যাক্তির রক্ত হতে কোন রোগীর শরীরে রক্ত দেওয়া থেকে যদি ঐ রক্তের বাচনিকে ভুল হয় ।
# এক ধরনের ভাইরাস থেকে জন্ডিস হয়,স্বর্প দংশন থেকে হতে পারে।
এই রগের রগীর মধ্যে বিষেশ কত গুলি লক্ষন দেখাযায়। য়থাঃ-
১)রোগীর পায়ের চামড়া,চোখের শ্বেতাংশ ,নাকের মুলভাগ প্রভৃতিতে হলুদ ভাব দেখা যায়।
২) মুত্রের বর্ন হলুদ হয়, বিছানায় দাগ লাগলে তা হলুদ হয়ে যায়। তাছাড়া রোগীর চোখ হলুদ হবার করনে সকল কিছু ঞলুদ দেখতে পায়।
৩) অনেক সময় এই সকল লক্ষনের সাথে লিভার ব্যাথা বা পেটের বাম দিকে ব্যঅথা থাকে।
৪) ক্ষুধা মন্দা এবং আহারের অরূচী দেখা যায়।
৫)কখনো কখনো কোষ্ঠকাঠিন্য আবার কখনো উদারাময় দেখা দেয়।
আর মুখে সব সময় অরুচী ও ভিন্ন স্বাদ থাকে।
মল কখনে কাদার মত ,কখনো কাল ,আবার কখনো সাদা বর্নের হয়।
৬)নাড়ী অত্যন্ত দূর্বল যাহা ৭২ থেকে কুমে ৬০ হতে ৫০ হতে পারে । এছাড়া কখনো ধীর গতি আবার কখনো দ্রুত গতি হতে পারে।
৭) শরীর অত্যন্ত দূর্বল ও অবসন্ন হয়ে পড়ে,আবার মাঝে মাঝে জ্বর জ্বর হতে পারে যা সাধারনত ৯৯˚ থেকে ১০৩˚ উঠতে পারে।
রোগীর জ্বিহ্বা সাদা লোপ থাকে। লীভারে নীচের বর্ডারে হাত রাখিয়া জোরে শ্বাস টানিলে ব্যাথা অনুভূত হয়্
৮)রিভার বৃদ্ধি পাইতে পারে ।
রক্তে পিত্ত মিশ্রিত হইলে এমন অবস্থার সৃষ্ট হইতে পারে তখন রোগী হুস হারাইয়া ফেলে। অঙ্গ প্রতঙ্গ খিচুনি দেয় এবং জন্ডিস পূর্ন মাত্রায় দেখাদেয়। আর এই অবস্থাকে বলা হয় কালমিয়া (Cholemia)
৯) জন্ডিস অত্যন্ত কঠিন ব্যাধি আর এইব্যাধি থেকে আনেক মারাত্তক উপসর্গের সৃষ্টি হয়ে থাকে।
আর এই অবস্থায় রোগীর মৃত্যু ভয় অত্যন্ত প্রকট হয়। কখনো কখনো লিভার সিরোসিস হয়ে যায়।
১০)জন্ডিস থেকে কখনো লিভার ফোড়া ,এমন কি লিভার ক্যান্সার হয়ে থাকে।
পথ্যঃ-
১) রোগীকে একদম বিশ্রামে থাকতে হবে। বেশী নড়াচড়া করা কোন মতেই উচিত নয়।
২) দ্রুত চিকিৎসা গ্রহন করতে হবে।
৩)পেট ব্যাথা হলে গরম শেক দেওয়া যেতে পারে।
৪)লিভার স্থানে ও পেটের বাম দিকে সেক দিলে উপকার পাবে।
৫)কমলা লেবু আখের রস,বাতাবি লেবু রোগীর জন্য উপকারী।
৬)পুরাতন যব,গম,চাল,মশুড়ের ডালের জুস উপকারী।
৭)ঘি,তৈল,ইলিশ মাছ,মসলা যুক্তু খাদ্য অবশ্যই বর্জনীয়।
৮)গ্লকোজের পানি পান খুবই উপকারি।
৯) বর্তমানে সরকারী ভাব হেপাটাইটিস বি ইনজেকশন দেওয়া হচ্ছ তা গ্রহন করে এই মারাত্তক অসুখ থেকে নিরাপদ থাকতে পারি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।