আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাপের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া উচিত

তাহমিদুর রহমান

আমার এক বন্ধু মাস্টার্সে পড়ে। তার বাড়ি বাংলাদেশের কোন এক গ্রামে। তো সকাল বেলা তার মা টেবিল গোছাতে আসলে আমার বন্ধুটি বলল, -মা তুমি এটা কি করলা? -কি করলাম? -তোমার হাতে ঐটা কি? -কেন? তোর বই? -কি বই জান? -না। -ঐটা মাস্টার্সের বই। এই বই আমার গুষ্টি, তোমার গুষ্টি জীবনে চোখে দেখে নাই।

আর তুমি কিনা বইটা হাতে নিয়ে নিলা। আমার বন্ধুর মার ব্যাপারটা বুঝতে একমিনিট লাগল। তারপর হাতে ঝাঁটা নিয়ে ছেলের দিকে এগিয়ে আসেন। আর আমার বন্ধুটি হা হা করে হাসতে হাসতে ভোঁ দৌড়। সেই বন্ধুটি কিছুদিন আগে মাস্টার্স পাশ করেছে।

সার্টিফিকেট হাতে পেয়ে সে আমাকে বলল, -দোস্ত দেখ। কাগজটারে দেখ। বাপরে গিয়া দেখামু। তারপর হা হা করে হাসতে থাকে। আমি তেমন কিছু না বলে মাথা নাড়লাম।

মাঝখানে আবার কিছুদিন তার সাথে দেখা হয় নাই। তো আমি তাকে মোবাইল করলাম। -দোস্ত কেমন আছিস? -হুম। ভাল। কিন্তু আমার ইচ্ছা করতেছে মোবাইলটা পানিতে ফেলে দেই।

আমি অবাক হয়ে বললাম -কেন? -এই যে তুই আমাকে কল দিছিস এজন্যে। কিন্তু কি করব দোস্ত বল। নতুন মোবাইল কেনার টাকা নাই। তাই ফেলতে পারছি না। তারপর হা হা করে হাসতে থাকে।

আমিও হাসি। বন্ধুকে গালি দেয়া যায় এরকম একটা গালি দিলাম তাকে। কিছুদিন পরে তার সাথে সামনা সামনি দেখা। দেখা হতেই আমাকে বলল, -কেমন আছিস। -ভাল নাইরে।

-কেন? কেউ প্যাঁদানি দিছে নাকি? -নাহ। চাকরি নিয়া দুশ্চিন্তায় আছি। -আরে তুই আছস চাকরি নিয়া দুশ্চিন্তায়। আর আমি আছি বিয়া নিয়া। মনে হয় বাপের মাথা ফাটিয়ে দেই।

বিয়ার সাথে বাপের মাথার কি সম্পর্ক বুঝলাম না। জিজ্ঞেস করলাম, -ক্যাঁ? তোর বিয়া নাকি? -আরে না। বাপ তো বিয়াই দিবার চাই না। -ও। এই কথা।

-হ। বাপে যখন বিয়া করে তখন তার বয়স ছিল ২১। এখন আমার বয়স ২৫। তবু বাপে বিয়া দিবার চাই না। আমি হাসব না কি করব বুঝতে পারলাম না।

কিন্তু নিজের অজান্তেই বলে ফেললাম, -হ। তাইলে তো বাপের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া উচিত।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।