আমি সততা ও স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করি।
গত কয়েক দিন ধরে শ্রীমঙ্গল উপজেলার সর্বত্রই পিতলের তৈরী সোনালী রংয়ের ১ টাকার ধাতব মুদ্রার চরম সংকট দেখা দিয়েছে। এদিকে রহস্যজনকভাবে পিতলের তৈরী এই ধাতব মুদ্রা সংগ্রহে এক শ্রেণীর লোকজন বাজারে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রতিটি মুদ্রা ২০ টাকা থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিষয়টি এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে।
রহস্যজনকভাবে হঠাৎ করে বাজারে পিতলের তৈরী ১ টাকার এই ধাতব মুদ্রার সংকট দেখা দিলে উপজেলার সর্বত্রই প্রতিটি মুদ্রা ২০ টাকা থেকে ১০০ টাকা হারে ক্রয় করতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে এক শ্রেণীর উৎসাহী জনগন। ফলে বাজারে এখন এই মুদ্রার ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যাপারটি বেশ জমে উঠেছে। শহরের বাইরে প্রত্যন্ত এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকেও তাদের পরিচিতজনরা মোবাইল ফোনে বা বিভিন্ন মাধ্যমে ১ টাকার মুদ্রাটি আছে কি না জানতে চাইছেন। বিষয়টি নিয়ে শহরের বিভিন্ন মহলে নানা জল্পনা কল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি বাজারের অধিকাংশ ব্যবসায়ী ও কিছু উৎসাহী জনতা এ রহস্যের জাল উৎঘাটন করতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে।
অনেকে আবার রহস্যের খোজে বিভিন্ন ব্যাংক, বীমা, অফিস-আদালত ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরে যোগাযোগ করলেও এ ব্যাপারে কোন সঠিক উত্তর খোজে পান নি বলে জানিয়েছেন। কি কারণে, মাত্র ১ টাকা মূল্যমানের ধাতব মুদ্রাটি অধিকমূল্যে কিনতে চান এ প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হচ্ছেন না মুদ্রা সংগ্রহকারীরা। তবে যারা এই মুদ্রা সংগ্রহে মাতোয়া হয়ে উঠেছেন তারা অধিকাংশই স্থানীয় কিংবা তেমন সুপরিচিত নন। বাইরে থেকে তাদের আত্মীয় পরিজনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে তারা মুদ্রা সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত রয়েছেন।
এলাকায় একটি গুজবে শুনা গেছে, এই মুদ্রাগুলি নাকি আমেরিকার এক ধরণের স্বর্ণের ধাতব পদার্থ দিয়ে তৈরী করা হয়েছে।
আর এই গুজবে কান দিয়ে এক শ্রেণীর অতি উৎসাহী জনতা অধিকমূল্যে মুদ্রা সংগ্রহ ও বহিঃবিশ্বে পাচারের চেষ্টা চালাচ্ছে। এদিকে এলাকার সচেতন মহলের লোকজন মনে করছেন, একটি প্রতারক চক্র গুজবটি বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দিয়েছে এবং ঐ চক্রের সদস্যরাই বাজারের বিভিন্ন স্থানে মুদ্রার বিনিময়ে দর কষাকষি করছে। এমনকি প্রতিটি মুদ্রা ২০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকায় পর্যন্ত কিনে নিয়ে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রতারক চক্র কর্তৃক সংগৃহিত মুদ্রাগুলি পরে একসময় এলাকার গুজব বিশ্বাসী লোকদের কাছে অত্যাধিক মুল্যে বিক্রি করে লাপাত্তা হয়ে যেতে পারে ঐ প্রতারক চক্র।
বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা বলেন, হঠাৎ করে বাজারে স্বর্ণের দাম বৃদ্ধির কারণে একটি প্রতারক চক্র মুদ্রাগুলি সংগ্রহ করে নিচ্ছে।
পরে তা আগুনে পুড়িয়ে স্বর্ণ সদৃশ পদার্থ তৈরী করে সাধারণ জনগণের চোখে ধূলা দেওয়ার আসংখা রয়েছে।
এ ব্যাপারে সোনালী ব্যাংক শ্রীমঙ্গল শাখার ব্যাবস্থাপক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, গুজবটি আমরাও শুনেছি। তবে মানুষ কেন যে তা বিশ্বাস করে তা তিনি জানেন না। তিনি আরো বলেন, যদি সত্যিই এরকম কিছু হতো, তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক তা পত্রিকান্তরে নিয়ে আসতেন। তিনি সাধারণ মানুষের স্বার্থে এ ব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগীতার প্রযোজন রয়েছে বলে জানিয়েছেন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়েজ আহাম্মদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গুজবে পরে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়ই হোক না কেন, অধিক মূল্যে, যেভাবে মুদ্রা কেনাবেচার হিড়িক পড়েছে তা আইনত অপরাধ। তবে এ গুজবের রহস্য খোজে বের করতে তিনি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল¬াহকে অনুরোধ করেছেন।
শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল¬াহ এ প্রতিবেদককে জানান, শহর ও শহরতলীতে যারা অধিকমূল্যে মুদ্রা বিনিময় করছেন বা আগ্রহ প্রকাশ করছেন তাদের ধরে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার থানার সকল অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।