পাওয়ার অব পিপল স্ট্রংগার দেন দি পিপল ইন পাওয়ার। http://mhcairo.blogspot.com/
মিশর অর্থনৈতিক ভাবে আরবের অন্যান্য দেশের ন্যায় অত শক্তিশালি না হলেও কালচারল দিক থেকে বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের চেয়ে বেশ শক্তিশালি। আর মিশরের আলেকজান্ড্রিয়া শহড়কেতো বলাই হয় 'দ্যা ক্যাপিটাল অব ইসলামিক কালচার'। এর নিদর্শন মিশরে আপনি আসলেই পাবেন। প্রতিটি শহড়েই রয়েছে বড় বড় লাইব্রেরি, সান্স্কৃতি উৎযাপন কেন্ত্র, মিউজিয়াম এবং বড় বড় কনফারেন্স কেন্দ্র।
বছরের অধিকাংশ সময় জুড়েই কায়রো অপেরা হাউজে লেগে থাকে বিভিন্ন ধরনের ফেস্টিবল। বাংলাদেশ থেকেও আজকাল বিভিন্ন ফেস্টিবলে প্রতিনিধি এসে থাকে।
গতবছরের ১১ থেকে ১৬ ই অক্টোবর কায়রোর আন্তর্যাতিক কনফারেন্স উৎযাপন কেন্দ্রে ছিল সমস্ত ইসলামিক বিশ্বের দেশ গুলো নিয়ে ১২ তম বানিজ্য মেলা। ইসলামিক দেশ গুলোর পরস্পরের মাঝে লেনদেন ও বানিজ্যিক সম্পর্ক বারানোই হচ্ছে এই মেলার লক্ষ ও উদ্বেশ্য।
এ্যামবাসি থেকে আমাদের ছাত্রদের ফোনদিয়ে বলাহলো আপনাদের সময় থাকলে প্রতিদিন কিছুটা সময়ের জন্য ঐ মেলায় কাটানোর জন্য কারণ বাংলাদেশ থেকে ১১ টি কম্পানিও এতে অংশগ্রহণ করছে।
এবং ভাষাগত বা অন্যান্য কোন বিষয়ে সাহায্য লাগলে তা যেন আমরা যতটুকু সম্ভব করে থাকি।
যাই হোক বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশি পন্যের চাহিদা এবং আরো অনেক গুলি বিষয় মাথায় নিয়ে অতি উৎসাহে প্রথম দিনেই মেলায় গেলাম। দুরথেকে বাংলাদেশ লেখা দেখেই মনটায় কেমন যেন এক ভাল লাগা শুরু হলো। কাছে গেলে বাংলীদের দেখে বেশ ভাল লাগল। ধিরে ধিরে সবার সাথে পরিচয় হলাম, তাদেরও বেশ উৎসাহি মনে হল।
তারপর.....
তারপরই আসল চেহারা বের হওয়া শুরু হলো। প্রত্যেকেই কিভাবে কম্পানির দেয়া বাজেট বাচিয়ে তা পকেটে নেয়া যায় সেই পন্থা খুজতে লাগল। কিভাবে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যাব হার করা যায়, হোটেল ছেরে অন্য কোথায় থাকলে খরচ কমবে, কোথায় কমদামি খাবার পাওয়া যায়, কোথায় ছাত্র আইডি ব্যাবহার করে ফ্রিতে ঘুরা যায় এইসব। যাক গড়িব দেশের মানুষ হিসেবে তারা এইসব করতেই পারে। এগুলো নিয়ে আমাদের কথা না বলাই ভাল।
এছাড়াও তারা আর যা যা করেছে তা নিয়ে কিছু না বললেই নয়।
১) বানিজ্য মেলায় তাদের পাঠানো হয়েছে পন্যের পরিচিতি তুলে ধরে তার গুনাগুন বুঝানো এবং বিভিন্ন কম্পানি কিংবা বায়ারদের কিছু পন্য সৌজন্যমুলক দেয়া যাতে করে সে পন্য ব্যাবহার করে ভাল লাগলে কম্পানির সাথে যোগাযোগ করে। কিন্তু মেলার তৃতীয় দিনে গিয়েই দেখাগেলো তারা সমস্ত পন্য কম দামে মানুষের কাছে বিক্রিকরে শুন্য ষ্টল নিয়ে বসে আছে। ৫০-১০০ টাকায় কিউট ক্রিম বিক্রি করে কি মেলায় অংশ গ্রহণের টাকা উঠানো যাবে? এ প্রশ্নের কোন জবাবাই নাই। আসলে এই টাকা নিজেরা নিজেদের পকেটেই পুরেছে।
তারা নিজেরা নিজেদের বানিজ্য করেছে, কম্পানির জন্যে কিছুই করেনি ক্ষতি ছাড়া, দেশের জন্য বদনাম ছারাও কিছু করেনি।
২) মেলায় প্রায় ৩০ টি দেশের ৬০০ ষ্টল ছিল। সম্পুর্ন শিততাপ নিয়ন্ত্রিত ফুল কার্পেটিং কক্ষে আয়োজন করা হয়েছিল, তাই নিরাপত্বা ছিল শতভাগ। নির্দিষ্ট সময়ে ষ্টল বন্ধ করা, নির্দিষ্ট স্থান নির্দিষ্ট কাজের জন্য ব্যাবহার করা, যে কোন প্রয়োজনে নির্দিষ্ট ব্যাক্তির সাথে যোগাযোগ করা ছাড়াও ছিল আরো অনেক নিয়ম কানুন। কিন্ত সব নিয়ম কানুন ভেংগে চুরমার করে মেলা শেষ হবার ২ দিন পুর্বেই দুটি ষ্টল উধাও।
সকাল বেলায় দুটি স্টল শুন্য দেখে কর্তপক্ষ খুজ খবর নিয়ে জানতে পারল তারা তাদের জিনিসপত্র নিয়ে চলে গেছে। কিন্তু এই বিষয়ে তারা কাউকে কোন ইনফর্ম করেনি। তাদের বেশ কিছু লেনদেনও ছিল কর্তৃপক্ষের সাথে সেটাও তারা সারে নি। তাদের চলে যাওয়ার ধরণ এমন ছিল যে, আসে পাশের কোন স্টলের কোন কিছু খোয়া গেলে সবার নজর তাদের ওপরই এসে পরে। সাথে সাথে এমবাসিডরকে খবর দেয়া হলে তিনি চলে আসলেন।
তিনি অন্যান্য দেশি স্টলের লোকজনে থেকে শত চেষ্টায়ও কোন তথ্য নিতে পারলেন না। ফলে তিনি বললেন মেলা শেষ হলেও কোন কম্পানিই তাদের মালামাল নিতে পারবে না, সব এ্যামবাসিতে জমাদিতে হবে, যতক্ষন না ঐ চলে যাওয়া ব্যাক্তিদের খোজ খবর পাওয়া যায়।
এই ছিল বানিজ্য মেলায় আমাদের বানিজ্যের ধরন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।