যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানরা কংগ্রেস হাউসে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। অবশ্য সিনেট নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক জল্পনা কল্পনার পরও ডেমোক্রেটরা সেখানে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।
নতুন স্বপ্ন ও দিনবদলের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তার মধ্যে প্রেসিডেন্ট ওবামা ক্ষমতায় আসলেও মাত্র দুই বছরের মাথায় নির্বাচনের এই রায়কে ওবামার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের অনাস্থার প্রতিফলনই মনে করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় নির্বাচনেও রিপাবলিকানদের হাতে ডেমোক্রেটরা ব্যাপকহারে ধরাশায়ী হয়েছে। গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয় এই নির্বাচন।
কংগ্রেসের নিম্ন হাউজে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য রিপাবলিকানদের মাত্র ৩৯টি সীট দখলের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সর্বশেষ খবরে দেখা গেছে তারা ৫৬টির মত আসনে ডেমোক্রেটদের হারিয়েছে।
এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম মহিলা স্পীকার ন্যান্সি পেলোসিকে বিদায় নিতে হচ্ছে। কংগ্রেসের নতুন স্পীকার হবেন রিপাবলিকান মাইনরিটি লীডার জন এ বোয়েনার। জন বোয়েনার ওয়াহিয়ো থেকে নির্বাচিত কংগ্রেস সদস্য।
১৯৯৪ সালের পর যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে এটাই হচ্ছে রিপালিকানদের সবচাইতে বড় বিজয়। সে সময় প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে রিপালিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার ফলে দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত ইমিগ্রেশন বিলের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। ডেমোক্রেটরা অবৈধদের বৈধতা দিতে চাইলেও রিপাবলিকানরা এর চরম বিরোধী।
এছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট ওবামাকে এখন বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কারণ এখন থেকে যেকোন বিল কংগ্রেসে গেলে রিপাবলিকানদের সাথে সমঝোতা ছাড়া সেটা পাস করা সম্ভব হবে না। যদিও সিনেট ডেমোক্রেটদের হাতে থাকায় এখন রিপাবলিকানরাও যা ইচ্ছে তা করতে পারবে না। কারণ যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে যেকোন আইন পাস করাতে হলে সিনেট ও হাউজ বিলটি পাস করতে হবে। এক্ষেত্রে হাউজে মেজরিটি রিপাবলিকানরা কোন বিল পাস করলে সেটা সিনেট প্রত্যাখ্যান করে দিলে তা কখনো পাস করা সম্ভব হবে না। এজন্য এবারের নতুন কংগ্রেস রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটদের ঐকমত্যের ভিত্তিতেই আগামীতে সব কাজ করতে হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এদিকে এবারের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এক ব্যক্তি কংগ্রেস সদস্য হিসেবে জয়ী হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ১৩ ডিস্ট্রিক্ট থেকে হেনসেন ক্লার্ক নামে যিনি বিজয়ী হয়েছেন তার বাবা ছিলেন একজন বাংলাদেশী। তাদের পৈত্রিক নিবাস সিলেটের বিয়ানীবাজারে। কয়েকবছর আগে হেনসেন ক্লার্ক বিয়ানী বাজারে তার বাবার বাড়ি ঘুরে গেছেন।
বিজয়ের পর পর তিনি তার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আমেরিকান জনগণের স্বপ্ন পূরণে নিরলস প্রয়াস থেকে কখনো পিছপা হবেন না তিনি।
মিশিগানসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে হেনসেন ক্লার্কের বিজয়ে বাংলাদেশীরা উল্লাস প্রকাশ করেছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।